শীতলকুচি: কুল চাষ করে এক তরুণী নজর কেড়েছেন। পপি বর্মন নামে ওই তরুণী রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ছাত্রী। বুধবার পপির বাড়িতে এলাকার কৃষকদের ফল চাষে উৎসাহ বাড়াতে কৃষি প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়। এই শিবিরে এলাকার কৃষকদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি পপিকে রাজ্য সরকারের উদ্যান ও কানন বিভাগের তরফে শংসাপত্র এবং শীতলকুচি কৃষি বিভাগের আতমা প্রকল্পের মাধ্যমে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়। শীতলকুচি কৃষি বিভাগের সহ কৃষি অধিকর্তা প্রদীপ্ত ভৌমিক বলেন, ‘শীতলকুচি ব্লকে প্রথাগতভাবে তামাক, ধান, পাট ও আলু ব্যাপক হারে চাষ হয়ে থাকে। এই চাষে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বাজারে দাম ঠিকমতো না পাওয়ায় চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। কৃষকদের উদ্যানপালনে উৎসাহ দিতে পপি বর্মনকে সামনে রেখে এদিন প্রশিক্ষণ শিবির করা হয়।’ এদিন সেখানে মাথাভাঙ্গা মহকুমা সহ কৃষি অধিকর্তা গোপাল তামাং, শীতলকুচি কৃষি বিভাগের সহ কৃষি অধিকর্তা প্রদীপ্ত ভৌমিক, শীতলকুচি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মদন বর্মন এবং পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ দীপক রায় প্রামাণিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পপির বাগানে ভারত সুন্দরী ও বল সুন্দরী দুই প্রজাতির কুল গাছ রয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা কুল বাগান দেখতে প্রতিদিন পপির বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন। অনেকে আবার পপির কাছে কুল চাষের পরামর্শ নিচ্ছেন। পপির কথায়, ‘আমাদের এই জমিতে ধান ও বিভিন্ন সবজির চাষ হত। চার বিঘা জমিতে কুল বাগানে প্রায় ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে স্থানীয় পাইকার মারফত প্রতিদিন কুল বিক্রি হচ্ছে। এবিষয়ে কৃষি দপ্তর থেকে সহযোগিতা পেয়েছি। আগামীদিনে গোপালন ও দেশীয় মুরগি পালন করার পরিকল্পনা আছে।’
পপি শীতলকুচি ব্লকের নগর শোভাগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা। বাবা হীরেন্দ্রনাথ বর্মন অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক, মা গৃহবধূ। নয় মাস আগে বাবার চার বিঘা জমিতে কুল চাষের কথা জানালে তাঁর পরিবার রাজি হয়নি। এরপর তাঁদের অনেক বুঝিয়ে পপি কলকাতা থেকে কুল গাছের চারা আনার ব্যবস্থা করেন। আর এই কয়েক মাসে এবার প্রথম কুল গাছে ফলন আসে। কুল চাষে তাঁর এই নজরকাড়া সাফল্যের কথা উত্তরবঙ্গ সংবাদে প্রকাশিত হয়। এরপর রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের বিষয়টি নজরে আসে।