কোচবিহার: কোচবিহারে অবাধে চলছে গাঁজা, পপি চাষ। এসব রুখতে ব্যর্থ পুলিশ ও প্রশাসন। মাদকের কারবার রুখতে মাঝেমধ্যে অভিযান চললেও তেমন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না বলে অভিযোগ। এজন্য, মূলত নদীচরের খাসজমিকে এমন চাষাবাদের জন্য টার্গেট করছে মাদক কারবারিরা। কিছু ক্ষেত্রে আবার নিজস্ব চাষের জমিতে ভুট্টা, কলা খেতের আড়ালে এমন মাদকের চাষ করা হয়। খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে সেসব নষ্ট করা হলেও ওই জমির মালিকের বিরুদ্ধে কোনও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না বলে অভিযোগ।
এ সম্পর্কে মঙ্গলবার কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য জানান, বেআইনি চাষাবাদের অভিযোগে ইতিমধ্যে মালিকদের বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এমন অবৈধ চাষাবাদ রুখতে ধারাবাহিক অভিযান চলছে। প্রসঙ্গত, তোর্ষার চর পপি চাষের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছে। চলতি মরশুমে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে পপি চাষ হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালালেও সেই চাষ সম্পূর্ণ নষ্ট করতে পারেনি। তোর্ষা কোচবিহার-২ ব্লক থেকে কালপানি সহ পাঁচটি গ্রামকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। তোর্ষার উপর কোনও সড়কসেতু না থাকায় প্রায় ৪০ কিলোমিটার ঘুরপথে কালপানিতে পৌঁছাতে হয় পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের। প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকা হওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এখানে এমন বেআইনি কারবারের রমরমা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়দের অভিযোগ, এই সুযোগে অনেকেই ব্যক্তিগত জমিতে ভুট্টা ও কলা খেতের আড়ালে পপি চাষ করে। অল্প সময়ে মোটা মুনাফার আশায় প্রান্তিক কৃষকদের একাংশ এমন বেআইনি চাষে ঝুঁকছে। পুলিশ-প্রশাসন প্রকৃত মালিকদের খোঁজ পাচ্ছে না। যদিও পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, কিছু ক্ষেত্রে ভূমি রাজস্ব কর্তাদের উপস্থিতিতে জমির মালিকদের চিহ্নিত করে মামলা করা হয়েছে। বহুক্ষেত্রে জমির প্রকৃত মালিকরা মৃত থাকায় সমস্যা হচ্ছে।
অভিযোগ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মদতে কালপানিতে পপি চাষ বেড়েছে। পুণ্ডিবাড়ি থানার পুলিশ জানিয়েছে, এমন চাষিদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। মঙ্গলবার ট্র্যাক্টর চালিয়ে তোর্ষাচরের প্রায় ৮০ বিঘা জমির পপিখেত নষ্ট করা হয়েছে। কালপানিতে এজন্য দুই ভাইয়ের নামে এনডিপিএস অ্যাক্টে মামলা করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জেলার উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) অসিতবরণ মণ্ডলের মন্তব্য, ‘কোনও কৃষক গাঁজা, পপির মতো বেআইনি চাষাবাদ করছেন বলে আমাদের কাছে খবর নেই। সংশ্লিষ্ট দপ্তর বিষয়টি দেখবে। তবে এব্যাপারে পুলিশ সাহায্য চাইলে সহযোগিতা করা হবে।’