কোচবিহার: বনধের দিন দলীয় নেতা ও কর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে কোচবিহারে পথে নামল সিপিএম। রবিবার মিছিলে পা মেলান দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় সহ অন্যরা। তার আগে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর তোপ দাগেন সেলিম। দিনহাটার উত্তমকুমার ব্রজবাসীকে অসম সরকারের দেওয়া এনআরসি সম্পর্কিত চিঠির বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন তিনি। সেলিম বলেন, ‘এনআরসি ইস্যু নিয়ে এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দলের লোকজন চিৎকার করছেন, অথচ কয়েকমাস আগে এই রাজ্য সরকারের পুলিশের মাধ্যমেই এনআরসি নিয়ে চিঠি গিয়েছিল উত্তমকুমার ব্রজবাসীর কাছে। পরিকল্পনা করে মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ঢুকিয়ে দিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে।’
কোচবিহারে সিপিএমের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে দায়িত্ব পেয়েছেন মীনাক্ষী ও অলোকেশ দাস। দায়িত্ব পাওয়ার পর রবিবার প্রথম তাঁরা কোচবিহারে আসেন। এদিন জেলা সম্পাদকমণ্ডলী ও জেলা কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন সেলিম, মীনাক্ষীরা। সূত্রের খবর, বৈঠকে বিধানসভা ভোটের আগে বিভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলন বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে বুথ স্তরে যাতে দলের বিস্তার ঘটে, সেজন্য এরিয়া কমিটিগুলিকে দায়িত্ব সহকারে কাজ করতে বলা হয়েছে। জেলায় মোট ৪০টি এরিয়া কমিটি রয়েছে। এদিন বৈঠকের মাঝেই সাংবাদিক বৈঠক করেন সেলিম। নিশিগঞ্জ মধুসূদন হোড় মহাবিদ্যালয় বন্ধের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রাজ্য তথা দেশ জুড়েই শিক্ষা ব্যবস্থার মান কমে যাচ্ছে। এটি আসলে শিক্ষার বেসরকারিকরণের একটি পরিকল্পনা।’
গত ৯ জুলাই দেশজুড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে গিয়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল ট্রেড ইউনিয়ন ও ফেডারেশনগুলি। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন হলেও কোচবিহারে বিজেপি নয় বরং তৃণমূলের তরফে ধর্মঘটের বিরোধিতা করে রাস্তায় নামা হয়েছিল। এই ঘটনাকে কটাক্ষ করে সেলিম বলেন, ‘কথায় রয়েছে বাঁশের চেয়ে কঞ্চির দর বেশি। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলনে বিজেপিকে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি। অথচ তৃণমূল ও রাজ্য পুলিশ বাধা দিয়েছে। আমাদের নেতাদের পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।’ এছাড়াও নানান ইস্যুতে এদিন রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে তোপ দাগেন তিনি। বিকেলের দিকে সিপিএমের তরফে কোচবিহার শহরে একটি প্রতিবাদ মিছিল করা হয়। কলেজগুলিতে থ্রেট কালচার, সন্ত্রাস, মহিলাদের নিরাপত্তা সহ নানান বিষয় উঠে আসে সেই মিছিলে। মীনাক্ষী বলেন, ‘কোনও মহিলাই সুরক্ষিত নন। সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে।’