College of Gour Banga | অপসারিত গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রাজভবন থেকে এল ই–মেল

College of Gour Banga | অপসারিত গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রাজভবন থেকে এল ই–মেল

শিক্ষা
Spread the love


কল্লোল মজুমদার ও নয়নিকা নিয়োগী, মালদা ও কলকাতা: রাজভবনের কোপের মুখে এবার গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের (College of Gour Banga) অন্তর্বর্তী উপাচার্য পবিত্র চট্টোপাধ্যায়। দুর্নীতি ও কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে তাঁকে অপসারণ করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।‌ মঙ্গলবার রাতে রাজভবন থেকে অপসারণ সংক্রান্ত ই–মেল সরাসরি এসে পৌঁছেছে উপাচার্যের কাছে। জারি হয়েছে বিজ্ঞপ্তিও। ওই নির্দেশিকা পাওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিশ্বজিৎ দাস। বুধবার তিনি বলেন, ‘অপসারণের ই–মেলটি উপাচার্য আমাকে ফরওয়ার্ড করে দিয়েছেন। তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন এখন থেকে তাঁর কাছে আর কোনও ফাইল না পাঠাতে।’ রেজিস্ট্রারের দাবি, ‘উচ্চশিক্ষা দপ্তরে সব জানিয়েছি। তারা আমাকে অপেক্ষা করতে বলেছে।’

কিন্তু হঠাৎ করে কেন উপাচার্যকে অপসারণ করা হল? বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উপাচার্য তাঁর দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান ২৫ অগাস্ট করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আচার্য। কিন্তু তা করতে ব্যর্থ হন উপাচার্য। এর পরেই রাজ্যপালের নির্দেশে তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বলে খবর। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, অপসারণের পিছনে রয়েছে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ। গত ৯ বছর ধরে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়নি। রেজিস্ট্রার বলেন, ‘রাজ্যপালের দপ্তর থেকে ২৫ অগাস্ট সমাবর্তন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ৯ বছরে যে বিপুল পরিমাণ ছাত্রছাত্রীর সার্টিফিকেট, মেডেল দেওয়া নিয়ে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপার রয়েছে যা করতে হয় পদ্ধতি মেনে। আমরা তা করছিলাম। আমরা জানিয়ে দিয়েছিলাম এত অল্প সময়ের মধ্যে সমাবর্তন করা সম্ভব নয়। সময় চেয়ে চিঠি আমরা নির্দিষ্ট তারিখের এক মাস আগে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু অপর প্রান্ত থেকে আমরা কোনও উত্তর পাইনি।’

শুধু সমাবর্তন নয়, দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে অনৈতিকভাবে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠছিল অন্তর্বর্তী উপাচার্যের বিরুদ্ধে। কলকাতা হাইকোর্টে সেই আর্থিক অনিয়মের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে মামলাও।

যদিও রেজিস্ট্রারের বক্তব্য, ‘‘হঠাৎ করে তো কর্তব্যের গাফিলতি কিংবা দুর্নীতি বলা যায় না। যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও দুর্নীতি হলে একটা ‘এনকোয়ারি কমিটি’ করে রাজ্য সরকার। সত্যতা প্রমাণ হলে তখন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’’ বুধবার উপাচার্যের অপসারণের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি প্রসূন রায়। রাজ্যপালকে কটাক্ষ করে তাঁর মন্তব্য, ‘রাজ্যপাল রাজ্য সরকারকে অন্ধকারে রেখে একটা সমান্তরাল প্রশাসন চালাতে চাইছেন। উপাচার্যের অপসারণ তারই ফসল। এর আগে উপাচার্যকে অপসারণ করে এই রাজ্যপালই বর্তমান উপাচার্যকে পদে বসিয়েছিলেন। আবার তিনিই এখন অপসারণ করছেন। আসলে উপাচার্যরা রাজ্যপালের কথা শুনছেন না। আমি মনে করি এই ঘটনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’

যদিও বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা ছাড়া আর সবকিছুই হয়। ভবন তৈরি থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্ষেত্রে শুধু দুর্নীতি আর দুর্নীতি। সঠিকভাবে তদন্ত করলে অনেকেরই কোমরে দড়ি পড়বে। রাজ্যপাল ‌ নিশ্চয়ই ভালো মনে করেছেন, তাই উপাচার্যকে অপসারণ করেছেন।’ এই ব্যাপারে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ইসি সদস্য অধ্যাপক শক্তিপদ বলেন, ‘এটা হওয়ারই ছিল। কারণ এই পদে তাঁর স্থায়ী নিয়োগ হয়নি। আমার ধারণা এটা উনি জানতেন। আর দুর্নীতির বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ। অভিযোগ যখন উঠেছে, তখন বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *