কলকাতা: উৎসবের আবহে তাল কাটল আবার। ইস্টবেঙ্গলে কোচ-ফুটবলারের বিবাদ এবার প্রকাশ্যে।
সুপার কাপ শুরু হতে বাকি আর হাতে গোনা পাঁচটা দিন। এর মধ্যে অশান্তির আঁচ যেন বেড়েই চলেছে লাল-হলুদ শিবিরে। বাংলা নববর্ষের দিনে অনুশীলনে ক্লেইটন সিলভা-অস্কার ব্রুজোঁর বচসায় আরও একবার উত্তপ্ত হল কলকাতা ময়দানের লেসলি ক্লডিয়াস সরণি।
এদিন সকালে ইস্টবেঙ্গল মাঠের একদিকে তখনও বারপুজো চলছে। সদস্য-সমর্থকদের প্রার্থনা একটাই, সাফল্যের সরণিতে ফিরুক প্রিয় ক্লাব। লাল-হলুদ জনতার মুখে মুখে ঘুরছে অতীতের সাফল্য আর বর্তমান ব্যর্থতার কাটাছেঁড়া। আরেকদিকে তখন অনুশীলনে ব্যস্ত দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকোস, আনোয়ার আলিরা। সেখানে ক্লেইটন যেন দলছুট। কোচের নির্দেশে হোক বা জেদের বশে বাকিদের থেকে নিজেকে আলাদা করে রেখেছিলেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। গোটা দল যখন মাঠের একদিকে বল পায়ে অনুশীলন করছে, ক্লেইটন তখন একাকী। রবিবারের ঘটনার পর এই ছবি খুব একটা অস্বাভাবিকও নয়। সেদিন কোচের সঙ্গে মনোমালিন্যে মাঠ ছেড়েছিলেন লাল-হলুদ স্ট্রাইকার। তবে এদিন পরিস্থিতি হাতের বাইরে গেল অনুশীলনের একেবারে শেষলগ্নে। মুহূর্তেই যেন ছবিটা বদলে গেল। বারপুজো ছেড়ে সব ফোকাস তখন সেদিকেই। দলের সিটিও অময় ঘোষাল ক্লেইটনকে ডেকে কিছু বলতে যান। তাঁর সঙ্গে একপ্রস্থ কথা কাটাকাটি হয়। মাঠ ছাড়ার আগে কোচ অস্কারের সঙ্গে আরও একবার তর্কে জড়িয়ে পড়েন ক্লেইটন। তাঁকে শান্ত করার চেষ্টা করেন সৌভিক চক্রবর্তী। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয় যে, একপ্রকার জোর করেই তাঁকে সাজঘরে ফেরাতে হয় হয়।
নববর্ষের প্রথম সকালে এমন ঘটনায় বেশ অস্বস্তিতে ইস্টবেঙ্গল। প্রাক্তন ফুটবলার, অতিথি, সদস্য-সমর্থকদের সামনে এমন ঘটনা শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবের সম্মানেও যে আঘাত করে। কোচ-ফুটবলারের মধ্যে মনোমালিন্যের ঘটনা অতীতেও বহুবার ঘটেছে। তবে অল্প সময়ে তা মিটেও গিয়েছে। সেখানে ইস্টবেঙ্গলে পরিস্থিতি উত্তরোত্তর আরও জটিল হচ্ছে। ইতিমধ্যে টিম ম্যানেজমেন্টের এক সদস্যও এতে জড়িয়ে পড়েছেন। এতকিছুর পরও ক্লাব কর্তা, ম্যানেজমেন্ট নির্বিকার। বিবাদ মেটানো তো দূর, উলটে কোচ-ফুটবলারের মধ্যে অশান্তিকে লঘু করে তুলে ধরতে চাইলেন লাল-হলুদ শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার। এই ঘটনা প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘কোচের সঙ্গে ফুটবলারের এমন গণ্ডগোল ইস্টবেঙ্গলে নতুন নয়। অতীতেও হয়েছে। তাতে সাফল্যও এসেছে। কোচের সঙ্গে ফুটবলারের এমন চ্যালেঞ্জ থাকাটা দলের জন্য স্বাস্থ্যকর। হতেও পারে সাফল্যের পথে এটাই প্রথম পদক্ষেপ। তার মানে আবার এটাও নয় যে, চূড়ান্ত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হবে।’ আদতে ক্লেইটন-অস্কারের বিবাদ যে সেদিকেই মোড় নিচ্ছে তা কি বুঝতে পারছে না লাল-হলুদ ম্যানেজমেন্ট? সাম্প্রতিক অতীতে শৃঙ্খলাভঙ্গের উদাহরণ ইস্টবেঙ্গলে তো কম নেই।