Chandrakant Pandit | কোচ পণ্ডিতের বিদায়ের ঘণ্টা বাজছে, কম্বিনেশন ও পরিকল্পনার অভাবেই নাইট শো ফ্লপ

Chandrakant Pandit | কোচ পণ্ডিতের বিদায়ের ঘণ্টা বাজছে, কম্বিনেশন ও পরিকল্পনার অভাবেই নাইট শো ফ্লপ

আন্তর্জাতিক INTERNATIONAL
Spread the love


অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ ফিল সল্ট, মিচেল স্টার্ক, শ্রেয়স আইয়ারদের মতো ক্রিকেটারদের কেউ ছেড়ে দেয়! সম্প্রতি এক ঘরোয়া ক্রিকেট আড্ডায় কলকাতা নাইট রাইডার্স নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এভাবেই প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন বিস্মিত সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।

তখনও কেকেআর ‘কেকেহারে’ বদলে যায়নি। তখনও ফিনিশার আন্দ্রে রাসেলকে নিয়ে প্রশ্ন ওঠেনি। তখনও নাইটদের প্রথম একাদশের কম্বিনেশন থেকে শুরু করে অদ্ভুতুড়ে স্ট্র্যাটেজি নিয়ে চর্চা এত জোরদার হয়নি। তখনও কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের বিদায় ঘণ্টা বাজা শুরু হয়নি। তখনও দলের ব্যাটিংয়ের এমন বেহাল দশাও সামনে আসেনি।

অনেক আগেই নাইটদের সমস্যা, দুর্বলতা ধরে ফেলেছিলেন মহারাজ। কিন্তু সরকারিভাবে, প্রকাশ্যে বললেই হবে বিতর্ক। তাই মুখ বন্ধ রেখেছেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক। কিন্তু ভুলের পাহাড়ে বসে থাকা একটা দলের (সেই দলটা আবার শেষ মরশুমের চ্যাম্পিয়ন) ক্রিকেটীয় সমস্যা কতদিন আর চাপা থাকবে। থাকার কথাও নয়। তাই সময়ের সঙ্গে নাইটরা একের পর এক ম্যাচ হারছে। আর দলের অন্দরের কঙ্কালটা সামনে চলে আসছে নিয়মিতভাবে। আপাতত ছবিটা হল, আট ম্যাচে পাঁচটি হার নাইটদের। পয়েন্ট ছয়। বাকি ছয় ম্যাচের মধ্যে অন্তত পাঁচটিতে জিততেই হবে কেকেআর-কে।

এমন চ্যালেঞ্জের সামনে পড়ে শনিবার ঘরের মাঠে পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে খেলবেন আজিঙ্কা রাহানেরা। প্রশ্ন একটাই, পাঞ্জাব ম্যাচ থেকে কি নাইটদের ফ্লপ শো বন্ধ হয়ে নতুন শুরু দেখা যাবে? সম্ভব? সহজ জবাব হল, না। অবিশ্বাস্য কোনও ঘটনা না ঘটলে অথবা রাহানের দলের কোনও নাইটের ব্যক্তিগত ক্রিকেটীয় প্রভাবে মিরাক্যল ঘটলে আলাদা কথা। তেমনটা না হলে এখনই লিখে দেওয়া যায়, নাইটদের প্লে-অফ স্বপ্নের সলিল সমাধি ঘটে গিয়েছে। অন্তত এবারের মতো।

কিন্তু কেন এমন হাল হল নাইটদের? কেকেআরের ব্যর্থতার ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে সামনে আসছে নানা ক্রিকেটীয় বিষয়। দোসর হিসেবে সঙ্গে রয়েছে কোচ চান্দু স্যরের মিলিটারি শাসন ব্যবস্থার কথাও। যা বহু চেষ্টায় চেপে রেখেছেন মেন্টর ডোয়েন ব্রাভো। কেকেআরের ব্যর্থতার প্রথম ও প্রধান কারণ হল, নিলামে দল গঠনের ব্যর্থতা। বেশিরভাগ ফ্র্যাঞ্চাইজি দল যখন বিকল্প নিশ্চিত করে কোনও তারকার পিছনে টাকার থলি নিয়ে দৌড়েছে, তখন কেকেআর অদ্ভুতভাবে ভেঙ্কটেশ আইয়ারের জন্য নিলামে ২৩.৭৫ কোটি টাকা খরচ করেছে। ‘বুড়ো’ সুনীল নারায়ণ, রাসেলকে এখনও বয়ে বেড়ানোর সিদ্ধান্তও ভুল। হতে পারে তাঁরা একটি, দুটি ম্যাচে দলকে জিতিয়ে দেবেন। কিন্তু ট্রফি জয়ের বৈতরণী পার করতে হলে প্রয়োজন তরুণ, তাজা রক্ত। স্টার্ককে না রেখে স্পেনসার জনসনকে দলে নিয়েছিল কেকেআর। কেন? কারণ, কারওর জানা নেই। কুইন্টন ডি কককে নেওয়া হয়েছিল নিলামে। ডি কক এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অতীত। তিনিও রাসেল-নারায়ণদের মতো একটা-দুটি ম্যাচে খেলে দিয়েছেন। কিন্তু ট্রফি জয়ের জন্য এসবের কোনওটাই যথেষ্ট নয়।

ব্যর্থতার ময়নাতদন্তের পর্যালোচনার শেষ এখানেই নয়। আরও রয়েছে। যার নিউক্লিয়াস হল, যথার্থ বিকল্প না করেই দল গঠন। আধুনিক ক্রিকেটে যা অপরাধ। ডি ককের পরিবর্ত রহমনুল্লাহ গুরবাজ হওয়ার নয়। আফগান তারকার প্রাক আইপিএল পারফরমেন্স ছিল জঘন্য। এমন পরিকল্পনাহীন দল গঠনের পর রয়েছে ভূতুড়ে ব্যাটিং অর্ডার। কোনও ম্যাচে রাসেল-রিঙ্কু সিংরা সাত-আট নম্বরে ব্যাটিং করছেন। আবার কোনও ম্যাচে ছন্দে থাকা অঙ্গকৃষ রঘুবংশীকে নয় নম্বরে ইমপ্যাক্ট হিসেবে নামানো হচ্ছে। নাইটদের কোচ পণ্ডিতমশাইয়ের ঘরোয়া ক্রিকেটে বিরাট অভিজ্ঞতা রয়েছে। মুম্বই, বিদর্ভ, মধ্যপ্রদেশ সহ নানা দলকে রনজি ট্রফি জিতিয়েছেন তিনি। তুলে এনেছেন বহু তরুণ প্রতিভা। কিন্তু সেটা লাল বলের ক্রিকেটে। ঘরোয়া ক্রিকেটে কোচ পণ্ডিতের মিলিটারি শাসন ব্যবস্থার কথা সবার জানা। সেই ভাবনা আইপিএলে চালু করতে গিয়ে এবার জোর ধাক্কা খেয়েছেন তিনি। দলের বন্ডিং নষ্ট হয়ে গিয়েছে, এমন অভিযোগও রয়েছে।

যার পরিণাম হিসেবে শনিবার শ্রেয়সদের বিরুদ্ধে ম্যাচ হারলে কোচ পণ্ডিতের বিদায় কার্যত চূড়ান্ত হয়ে যাবে বলে খবর। কিন্তু তারপরও কি নাইট সংসারের বেহাল দশার পরিবর্তন হবে? শুনতে খারাপ লাগলেও নাইট সমর্থকদের বাস্তবটা মেনে নিতে হবে এবার। কারণ, জবাবটা না। ভুল দল গঠন থেকে শুরু করে কম্বিনেশনের ভৌতিক ভাবনা আগেই নাইটদের স্বপ্নভঙ্গ করে দিয়েছে। এখন দেখার, শেষটা আর কত খারাপ হয়।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *