রাহুল মজুমদার, শিলিগুড়ি: শুধু চিড়িয়াখানা নয়, এবার থেকে বনের প্রাণীদেরও কোষ সংরক্ষণ করা হবে দার্জিলিং চিড়িয়াখানায়। সেই লক্ষ্যে সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজির (সিসিএমবি) মুখ্য বিজ্ঞানী ডঃ কার্তিকেয়ান বাসুদেবা উত্তরবঙ্গের বনকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিলেন। দার্জিলিংয়ের পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিকাল পার্কে বৃহস্পতিবার ওই প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে ছিলেন উত্তরের বিভিন্ন এলাকার বনকর্মী, বনকর্তা ও পশু চিকিৎসকরা। পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেখানোর পাশাপাশি হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তাঁদের। এপ্রসঙ্গে দার্জিলিং চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর ডঃ বাসবরাজ হোলাইচির বক্তব্য, ‘আমরা একদিনের প্রশিক্ষণ শিবির করলাম। সেখানে বনকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেন সিসিএমবি’র মুখ্য বিজ্ঞানী।’
ভারতে প্রথম দার্জিলিং চিড়িয়াখানাতেই বায়োব্যাংকিংয়ের পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। বিশ্বের হাতেগোনা কয়েকটি জায়গায় রয়েছে এই বায়োব্যাংকিং। সাফল্যের সঙ্গে ক্যাপ্টিভ ব্রিডিং প্রক্রিয়া চলছিল পদ্মজা নাইডু চিড়িয়াখানায়। তাই এ দেশে বায়োব্যাংকিং শুরু করতে বেছে নেওয়া হয় দার্জিলিং চিড়িয়াখানাকেই। পরিষেবা শুরু হওয়ার পর থেকে এই মুহূর্ত পর্যন্ত ২০টি লুপ্তপ্রায় প্রজাতির প্রাণীর দেহ থেকে মোট ৮০টি কোষ সংরক্ষণ করা হয়েছে। তবে এতদিন যত কোষ সংরক্ষণ হয়েছে, সবটাই চিড়িয়াখানার প্রাণীর দেহ থেকে সংগৃহীত। এবার উত্তরবঙ্গের জঙ্গলের বন্যপ্রাণীদেরও কোষ সংরক্ষণ করতে চাইছে বন দপ্তর।
মহানন্দা অভয়ারণ্য, গরুমারা জাতীয় পার্ক, নেওড়াভ্যালি জাতীয় পার্ক সহ বিভিন্ন বনাঞ্চলে এমন বহু বন্যপ্রাণ রয়েছে, যেগুলো লুপ্তপ্রায় কিংবা আইইউসিএন (ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার)-এর লাল তালিকাভুক্ত প্রাণী। তাদের কোষ সংরক্ষণের জন্য বনকর্মীদের এদিন প্রশিক্ষণ দেওয়া হল। পশু চিকিৎসকদেরও এদিন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কীভাবে সংরক্ষণ করতে হবে, কীধরনের কনটেনারে রাখতে হয়, কতটা তাপমাত্রায় রেখে বায়ো ব্যাংক পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে ইত্যাদি নানা তথ্য জানানো হয় তাঁদের।