নবনীতা মণ্ডল
নয়াদিল্লি: পরীক্ষায় ভালো ফল করার জন্য ‘মুখস্থ বিদ্যা’র দিন হয়তো এবার শেষ! বোর্ডের কড়া নির্দেশে এবার পরীক্ষা (EXAM) হবে খোলা বই নিয়ে। অর্থাৎ, প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে কপাল ঘামানোর বদলে এবার শিক্ষার্থীরা বই উলটেপালটে উত্তর লিখবে। সিবিএসই (CBSE) অর্থাৎ কেন্দ্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ নবম শ্রেণির জন্য এমনই এক অভিনব পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে চলেছে। ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই নতুন নিয়ম চালু হবে, যা পরীক্ষার্থীদের জন্য নিঃসন্দেহে এক দারুণ খবর। এই নতুন নিয়ম পর্ষদের সর্বোচ্চে নীতি নির্ধারক কমিটি সাম্প্রতিক বৈঠকে অনুমোদন দিয়েছে।
এই নতুন নিয়ম যার নাম ওপেন বুক অ্যাসেসমেন্টস, তা মূলত চালু হচ্ছে ন্যাশনাল এডুকেশন পলিসি (Nationwide Training Coverage) ২০২০ এবং ন্যাশনাল কারিকুলাম ফ্রেমওয়ার্ক ফর স্কুল এডুকেশন ২০২৩-এর অনুপ্রেরণায়। এদের মূল উদ্দেশ্য হল মুখস্থ করার বদলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে কোনও বিষয় ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা, বাস্তব জীবনের সঙ্গে জ্ঞানকে সংযুক্ত করা এবং সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা গড়ে তোলা।
আগেও একবার ২০১৪ সালে এই ধরনের ওপেন টেক্সটবেসড অ্যাসেসমেন্ট চালু হয়েছিল, কিন্তু তাতে কিছু ত্রুটি থাকায় তা ২০১৭-১৮ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এবার অবশ্য বোর্ড আরও সতর্ক। প্রথমবার পাইলট স্টাডি করে দেখা হয়েছে, যেখানে শিক্ষার্থীদের পারফরমেন্স তেমন আশাব্যঞ্জক না হলেও শিক্ষকরা কিন্তু এই পদ্ধতির পক্ষে সায় দিয়েছেন। তাঁদের মতে, এতে চিন্তাভাবনার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। তবে এটাও সত্যি, ছাত্রছাত্রীদের ঠিকমতো গাইড করার প্রয়োজন আছে, যাতে তারা বইয়ের সঠিক অংশ খুঁজে বের করতে পারে।
পরীক্ষায় থাকবে ভাষা, গণিত, বিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞানের মতো প্রধান বিষয়। এবার প্রশ্নটা হল, এটা কি সব স্কুলের জন্য বাধ্যতামূলক হবে? না, আপাতত এর একটা কাঠামো তৈরি করে দেওয়া হবে, যাতে স্কুলগুলো নিজেদের মতো করে এটা চালু করতে পারে। তবে বোর্ডের উদ্দেশ্য খুবই স্পষ্ট—পরীক্ষার চাপ কমানো এবং শেখার আনন্দ ফিরিয়ে আনা। তাই এখন থেকে হয়তো অনেক ছাত্রছাত্রীই বলবে, ‘বইটা একটু খুঁজে দিবি, ভাই?’ আর অভিভাবকরাও নিশ্চিন্ত হবেন কারণ, ছেলেমেয়েরা আর শুধু রাত জেগে মুখস্থ করবে না!