Buxa | অটোয় চেপে লুকোচুরির যাত্রা বক্সায়

Buxa | অটোয় চেপে লুকোচুরির যাত্রা বক্সায়

ব্লগ/BLOG
Spread the love


অভিজিৎ ঘোষ, আলিপুরদুয়ার: বর্ষার নিয়ম অনুযায়ী জঙ্গল তো বন্ধ। তবে আপনি বক্সা-জয়ন্তীতে ঘুরতে যেতে চান? খুব সোজা। আপনাকে স্থানীয় বাসিন্দার ‘ছদ্মবেশ’ ধরতে হবে। কীভাবে? নকল গোঁফ-দাড়ি লাগানোর প্রয়োজন নেই, কেবল বড় গাড়ির বদলে স্থানীয় বাসিন্দার মতো অটো চেপে ঢুকে গেলেই হল। রাজাভাতখাওয়া গেটে বড় গাড়ি আটকাচ্ছেন বনকর্মীরা, ছোট গাড়ি ঢুকতে কোনও বাধা নেই। আর সেই সুযোগ নিচ্ছেন সুযোগসন্ধানী পর্যটকরা।

বন দপ্তর জানাচ্ছে, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পর্যটকদের প্রবেশ নিষেধ। তবে বর্তমানে ওই নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সহজে টোটোয় চেপে প্রবেশ করা যাচ্ছে ওই গেট দিয়ে। বড় গাড়ি নয়, স্থানীয় ছোট গাড়ি তাই আপাতত প্রথম পছন্দ অফ সিজনে বক্সায় (Buxa) ঘুরতে আসা পর্যটকদের। কিন্তু এমনটা হচ্ছে কেন? কারণ রাজাভাতখাওয়া গেট পেরিয়ে কারা ঢুকছে, তাঁদের ওপর বনকর্মীদের নজর রাখা সম্ভব নয়। তবে বড় গাড়ি চেপে লোকজন এসেছে মানেই বাইরে থেকে আসা পর্যটক, এমনটাই ভেবে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ছোট গাড়ির ওপর নজর রাখা হচ্ছে না। ধরেই নেওয়া হচ্ছে, ছোট গাড়ি চেপে তো স্থানীয়রাই যাতায়াত করছেন। তাই ছোট গাড়ি চাপলেই পর্যটকরা ‘পরিচয়’ বদলে হয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দা। ব্যাস, এবার ঢুকে পড়লেই হল। রাজাভাতখাওয়া থেকে জয়ন্তী ও সান্তালাবাড়ি পর্যন্ত অটো যাতায়াত করে। সেসব অটোয় সচরাচর যাত্রী হিসেবে থাকেন স্থানীয়রাই। তবে এখন পর্যটকরাও ওই অটো করেই ঢুকে পড়ছেন।

বক্সার টাইগার রিজার্ভের প্রবেশদ্বার রাজাভাতখাওয়া গেটের এই সমস্যা নিয়ে জটিলতা বাড়ছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ বক্সা-জয়ন্তীর পর্যটন ব্যবসায়ী সহ স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশও। সম্প্রতি তাঁদের কয়েকজন এই সমস্যা নিয়ে বক্সা টাইগার রিজার্ভের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনাও করেন। দ্রুত সমস্যা মেটানোর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এবিষয়ে আলিপুরদুয়ার ডিস্ট্রিক্ট ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মানব বক্সী বলেন, ‘পর্যটকরা বড় গাড়ি নিয়ে এলে তাঁদের আটকে দেওয়া হচ্ছে। আবার অটোতে দিব্যি তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। এটা কেমন নিয়ম?’ তাঁর দাবি, ঢুকতে দিলে সবাইকেই ঢুকতে দিতে হবে। মানবের কথায়, জঙ্গলে প্রবেশ নিষেধ, তবে পূর্ত দপ্তরের রাস্তা দিয়ে যাতায়াত তো নিষেধ নয়। তাহলে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করার ক্ষেত্রে বাধা কেন দেওয়া হচ্ছে?

বর্ষার মরশুমে ডুয়ার্সজুড়ে পর্যটকদের সংখ্যা অনেকটাই কম থাকে। আলিপুরদুয়ার জেলার জলদাপাড়া, বক্সা, জয়ন্তী, কোদালবস্তি, চিলাপাতার মতো পর্যটনকেন্দ্রগুলোতেও পর্যটকদের সংখ্যা এখন অনেকটাই কম। বন দপ্তরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বর্ষায় তিন মাস জঙ্গল বন্ধ থাকায় প্রভাব পড়ে পর্যটনশিল্পে। রাজাভাতখাওয়া গেট বর্তমানে বন্ধ করা হয়েছে সেই নিয়ম মেনেই। কোনও গাড়ি এলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পর্যটক হলে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এদিকে, জঙ্গলে ঢোকা নিষেধ হলেও সংলগ্ন এলাকায় তো প্রবেশে নিষেধ নেই। একেবারেই পর্যটকদের বড় গাড়ি নিয়ে ঢুকতে না দিলে আবার বক্সা, জয়ন্তী এলাকার বাসিন্দারা ক্ষতি হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। জয়ন্তীর বাসিন্দা তথা হোমস্টে মালিক শুভজ্যোতি বসুর কথায়, ‘তিন মাস জঙ্গল বন্ধ। সেটা আমরা মানছি। তবে কিছু লোক নিয়ম মেনে এলে তো মানুষের অল্প হলেও উপার্জন হয়। সেটা হচ্ছে না।’ তাঁর আরও অভিযোগ, সরকারি আধিকারিকরা পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসছেন। অথচ জয়ন্তী বা বক্সা এলাকার স্থানীয় কারও বাড়িতে কোনও আত্মীয় এলেও তাঁকে গেট দিয়ে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।

অন্যদিকে, বন দপ্তর বলছে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই সব কিছু করা হচ্ছে। বক্সা টাইগার রিজার্ভের ডিএফডি (পূর্ব) দেবাশিস শর্মার কথায়, ‘শুধু বক্সা নয়, গোটা দেশে তিন মাস জঙ্গল বন্ধ থাকে। সেই নিয়ম মেনেই কাজ করা হয়েছে। ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে আবার পর্যটকদের জন্য গেট খুলে দেওয়া হবে।’ তবে গাড়ি আটকালেও অটো করে যে পর্যটকরা যাচ্ছেন, সেই নিয়ে কিছু বলতে চাননি বক্সার বনকর্তারা।

The put up Buxa | অটোয় চেপে লুকোচুরির যাত্রা বক্সায় appeared first on Uttarbanga Sambad.



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *