BSF | পাকাঘর তৈরিতে বাধা বিএসএফের

BSF | পাকাঘর তৈরিতে বাধা বিএসএফের

শিক্ষা
Spread the love


অমিতকুমার রায়, মানিকগঞ্জ : নিজেদের পূর্বপুরুষের পৈতৃক ভিটেতে মাথা গোঁজার জন্য পাকাঘর তৈরি করতে গিয়ে বাসিন্দারা বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন। সমস্যা এতটাই জটিল হয়ে উঠেছে যে, সকলের নজর এড়িয়ে রীতিমতো পরনের শাড়ি, ত্রিপল দিয়ে সবকিছু আড়াল করে তাঁদের ইট গাঁথার কাজ করতে হচ্ছে। পাকাঘর তৈরির প্রয়োজনীয় অর্থ থাকলেও জীবদ্দশায় কি কোনওদিন পাকাঘরে শান্তিতে রাত্রিযাপন করা সম্ভব হবে, বলে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের দক্ষিণ বেরুবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তের জিরো পয়েন্ট এলাকায় বসবাসকারী একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন।

স্বাধীন দেশের নাগরিক হলেও বসতবাড়ির ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে প্রতিবেশী দুই দেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর হস্তক্ষেপে তাঁদের স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে বলে অভিযোগ। কয়েক মাস আগে রাজ্যের অন্যপ্রান্তের মতো এই গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দারাও আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা পান। সেই টাকা পাওয়ার পর উপভোক্তারা নিজেদের জমিতে কাঁচাঘর ভেঙে পাকাঘর তৈরির কাজ শুরু করেন। আর এতেই দুই দেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বাদ সাধে বলে অভিযোগ। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান সুমিত্রা দেব অধিকারী জানিয়েছেন, বাংলাদেশের বাধায় সীমান্তের জিরো পয়েন্টে ১৫০ গজের মধ্যে বাড়ি তৈরি করতে দেওয়া হচ্ছে না। সীমান্ত নাগরিক সমিতির সভাপতি সারদাপ্রসাদ দাস বললেন, ‘আবাস যোজনার টাকা দেওয়ার আগে প্রশাসনের তরফে ঘর তৈরির প্রস্তাবিত জায়গায় বেশ কয়েকবার জিও ট্যাগিং করা হয়েছে। তখন বিএসএফ ও প্রশাসন কী করল? এখন অন্যত্র ঘর তৈরি করলে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা নাও মিলতে পারে।’ এবিষয়ে অবশ্য বিএসএফ আধিকারিকদের কোনও বক্তব্য মেলেনি।

ভারত–বাংলাদেশ উন্মুক্ত সীমান্তের জিরো পয়েন্ট লাগোয়া নলজোয়াপাড়া ও ছিট সাকাতি গ্রামে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছে। বাংলাদেশ আপত্তি করায় সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে পাকাবাড়ি করতে দেওয়া হবে  না বলে বিএসএফ তাঁদের জানিয়েছে বলে গ্রামবাসীদের দাবি। কাঁটাতারের বেড়ার অপরপ্রান্তে থাকা ছিট সাকাতি গ্রামের বাসিন্দা মোবারক হোসেন, সেকেন্দার সরকাররা জানিয়েছেন, সীমান্তের গেট দিয়ে গ্রামে প্রবেশ করতে হয়। সেই গেট দিয়ে গ্রামে নির্মাণসামগ্রী নিয়ে যেতে বিএসএফ বাধা দিচ্ছে। এতে গ্রামের আটটি পরিবারের ঘর তৈরির কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। নির্মাণসামগ্রী কিনে আনলেও তা ফেলে রাখতে বাধ্য হওয়ায় বাসিন্দাদের ভোগান্তি বাড়ছে।

নলজোয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সুশীলচন্দ্র রায়ের অভিযোগ, ‘আবাস যোজনার ঘর তৈরির ক্ষেত্রে দুই দেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর তরফে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বিএসএফ বাড়িতে এসে কাজ আটকাচ্ছে। গ্রামের উন্মুক্ত সীমান্তের জিরো পয়েন্ট দিয়ে বেড়া ও সীমান্ত সড়ক তৈরির জন্য জমি জরিপ করে পিলার দেওয়া হয়েছে। তারপরও পাকাঘর তৈরিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।’ এলাকাবাসী ঋষিকেশ রায় বললেন, ‘জিরো পয়েন্ট লাগোয়া এলাকায় বাংলাদেশের ভূখণ্ডে কংক্রিটের বাড়িঘর ও মসজিদ রয়েছে। অথচ আমাদের ক্ষেত্রে সে দেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বাধা দিচ্ছে। এমনটা কোনওমতেই মেনে নেওয়া যায় না।’ ওই গ্রামের বধূ সুচিত্রা রায়ের অভিযোগ, ‘বিএসএফ বাড়িতে এসে ঘর তৈরিতে বাধা দিয়ে গিয়েছে। ক’দিন বাদে মেয়ের বিয়ে। ভাঙা বাড়িতে বিয়ের আসর বসানো সম্ভব নয়। তাই শাড়ি ও ত্রিপল দিয়ে আড়াল করে চুপিসারে ঘর তৈরির কাজ করা হচ্ছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *