Blood Stress | রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না রাখলেই বিপদ

Blood Stress | রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না রাখলেই বিপদ

আন্তর্জাতিক INTERNATIONAL
Spread the love


উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: সারা পৃথিবীতে হাইব্লাড প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগের প্রধান কারণ, যা ২০-৫০ শতাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী (Blood Stress)। তাছাড়া উচ্চ রক্তচাপের কারণে প্রধানত স্ট্রোক ও হার্টের সমস্যাও দেখা যায়। লিখেছেন উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক এবং মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ অভেদ বিশ্বাস

পূর্ণবয়স্ক মানুষের স্বাভাবিক রক্তচাপ ১২০/৮০। কিন্তু সেটা যখন ১৪০/৯০-এর বেিশ হয় তখন তাকে উচ্চ রক্তচাপ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। উচ্চ রক্তচাপ সাধারণভাবে কোনও সমস্যা তৈির করে না। তাই এর ক্ষতিকর প্রভাব আমরা প্রাথমিকভাবে বুঝতে না পেরে অবহেলা করি। কিন্তু এটি বিভিন্ন অঙ্গ যেমন হার্ট, কিডনি, মস্তিষ্ক, চোখ ও নার্ভের ক্ষতি করে।

উন্নত বিশ্বে মোট জনসংখ্যার অর্ধেক মানুষ উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভুগছেন। যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাঁদের মধ্যে মাত্র অর্ধেক রক্তচাপের চিকিৎসা করান। মাত্র অর্ধেকই সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে রক্তচাপ আদর্শ মাত্রায় অর্থাৎ ১৪০/৯০ বা ১২০/৮০-তে আনতে পারেন। ভারতে প্রায় ২১ শতাংশ মহিলা উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভুগছেন। ৪০ শতাংশ মহিলার স্বাভাবিক রক্তচাপ রয়েছে এবং ৩৯ শতাংশ  মহিলা প্রিহাইপারটেনসিভ। অন্যদিকে, ২৪ শতাংশ পুরুেষর উচ্চ রক্তচাপ, ৩০ শতাংশের স্বাভাবিক রক্তচাপ এবং ৪৯ শতাংশের প্রিহাইপারটেনসিভ রয়েছে। শিশুরাও উচ্চ রক্তচাপের প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। যেসব শিশুর রক্তচাপ বয়সের তুলনায় বেিশ, তারা পরবর্তীতে উচ্চ রক্তচাপ হয়ে থাকে। তাই শিশু বয়স থেকেই রক্তচাপ মাপা এবং তার চিকিৎসা করানো বা উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

কারণ

উচ্চ রক্তচাপ প্রাথমিকভাবে বংশগত। তবে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে এর নির্দিষ্ট কোনও কারণ জানা যায় না। ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে কিছু কিডনির অসুখ, অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির টিউমার, ধমনীর সংকোচনের কারণে এবং গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ হলে পরবর্তীকালে কিছু মহিলার উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এগুলিকে সেকেন্ডারি হাইপারটেশন বলে।

ঝুঁকি কাদের বেশি

বয়স: বয়স বাড়ার সঙ্গে রক্তচাপ বাড়তে থাকে এবং উচ্চ রক্তচাপজনিত কারণে বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বেিশ ক্ষতি হতে পাের।

লিঙ্গ: মহিলারা ঋতুচক্র চলার বয়স পর্যন্ত রক্তচাপজনিত সমস্যার থেকে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় থাকেন সেই বয়সি পুরুষের তুলনায়। কিন্তু ৪৫ বছর বয়সের পর বা তারপরে মহিলা ও পুরুষ সবারই উচ্চ রক্তচাপজনিত অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতিকর প্রভাব সমান হয়ে যায়।

জিনগত: বাবা-মায়ের রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকলে সন্তানের উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা মাত্র ৩ শতাংশ। আর যদি বাবা-মা দুজনেরই উচ্চ রক্তচাপ থাকে তাহলে বাচ্চার সেই সম্ভাবনা হয়ে যায় ৪৫ শতাংশ।

স্থূলতা: শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে যেমন রক্তচাপ বেড়ে যায়, তেমনই ওজন কমানোর সঙ্গে রক্তচাপ কমতে শুরু করে।

মনে রাখবেন

খাবারে লবণের মাত্রা যত কম, রক্তচাপ তত স্বাভাবিক থাকে।

পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বা ফল রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

খাবারে চর্বি কম থাকলে উচ্চ রক্তচাপ কমে।

উচ্চ ফাইবারযুক্ত শাকসবজি রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

মদ্যপান রক্তচাপ বাড়ায়।

শারীরিক পরিশ্রম রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে।

মানসিক শান্তি রক্তচাপ কমায়

প্রতিদিন যোগাভ্যাস রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখার ভালো উপায়।

জীবনশৈলীর পরিবর্তনে নিয়ন্ত্রণে রক্তচাপ (এটা একটা টেবিলের মধ্যে হবে)

ওজন কমানো – স্বাভাবিক ওজন (বিএমআই ১৮.৫- ২৪.৯)/ ৫-২০ এমএমএইচজি রক্তচাপ কমে প্রতি ১০ কেজি ওজন হ্রাসে

খাদ্যাভ্যাস – কম চর্বি, কম লবণ, সবুজ শাকসবজি এবং ফলমূল / ৮-১৪ এমএমএইচজি রক্তচাপ কমায়

শারীরিক পরিশ্রম – জোরে জোরে হাঁটা অন্তত ৩০ মিনিট, সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন / ৪-১০  এমএমএইচজি রক্তচাপ কমায়

মদ্যপান বন্ধ করা – ৫ এমএমএইচজি রক্তচাপ কমায়

উচ্চ রক্তচাপ একটি প্রাণঘাতী সমস্যা হয়ে উঠতে পারে, যদি না একে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তাই যথাযথ সময়ে রক্তচাপ মাপা এবং খাদ্যাভ্যাস ও জীবনশৈলীর পরিবর্তন করে রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। তাতেও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না এলে বিভিন্ন ওষুধ প্রয়োগ করে একে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *