উত্তরবঙ্গ ব্যুরো: শেষ হয়েও পুজো শেষ হয় না তিস্তা পারে। দুর্গাপুজোর (Durga Puja) পর শুক্রবার একাদশীর দিনে মা ভান্ডানীর পুজোর (Bhandani Puja) সূচনা হল মাটিয়ালি ব্লকের দক্ষিণ ধূপঝোরায়। মিলন সংঘের পরিচালনায় এবার ৪৬তম সর্বজনীন শ্রী শ্রী বনদুর্গা পূজা বা মা ভান্ডানী পুজোর সূচনা হল। পুজো গতকাল প্রদীপ প্রজ্বলন করে এই পুজোর সূচনা হয়।
ডুয়ার্সের (Dooars) প্রাচীনতম ময়নাগুড়ি বার্নিশের ভান্ডানী পুজো। গবেষকদের মতে এই পুজো পাঁচশো বছরেরও বেশি পুরোনো। ভান্ডানী দেবীর নাম অনুসারেই এই গ্রামের নাম হয়েছে ভান্ডানী। প্রতি বছরের মতো এবছরেও যথেষ্ট উৎসাহের সঙ্গে ভান্ডানী পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। পুজো উপলক্ষ্যে মন্দির সংলগ্ন এলাকায় মেলা বসেছে। বুধবার ভোর থেকে বার্নিশ ভান্ডানী মন্দিরে পুণ্যার্থীদের সমাগম শুরু হয়। ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। বার্নিশ এলাকায় ভান্ডানী পুজোকে কেন্দ্র করে বলি প্রথা চালু রয়েছে। পুজো উদ্যোক্তারা জানান, ধান, সবজির ফলন যেন ভালো হয়, প্রত্যেকে যেন মিলেমিশে শান্তিতে চলতে পারেন, এই প্রার্থনা জানিয়েছেন মা ভান্ডানীর কাছে।
পাশাপাশি আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) শালকুমার-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানপাড়া ও শালকুমার-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কলাবাড়িয়ায় পৃথকভাবে ভান্ডানী দেবীর আরাধনা করা হয়। দুর্গাপুজোর আগে থেকেই এই পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়।
উত্তরবঙ্গে রাজবংশী ক্ষত্রিয় সম্প্রদায়ের কাছে ভান্ডানিদেবী তিনটি নামে পরিচিত-ভান্ডানী, ভান্ডারানী ও ভান্ডালী। শালকুমারহাট সহ গোটা উত্তরবঙ্গে এই দেবীর পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে লৌকিক ইতিহাস। পুরোনো রীতি মেনে হলেও এই পুজোতে এখন নিয়মের কিছু পরিবর্তন হয়েছে। বাঘের পরিবর্তে ভান্ডানীর বাহন এখন সিংহ। দুর্গার অনুকরণে ভান্ডানীদেবীরও এখন ত্রিলোচন থাকে। তবে পায়রা বা পাঁঠা বলির প্রচলন এখনও আছে। প্রধানপাড়া গ্রামে এই পুজো এবার ১২৮তম বর্ষ। পরবর্তীতে কলাবাড়িয়া গ্রামেও পুজো শুরু হয়।