উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: আইপিএলে (IPL) আরসিবির জয় উদযাপনকে কেন্দ্র করে ৪ জুন বেঙ্গালুরুতে এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের (M.Chinnaswamy Stadium) বাইরে পদপিষ্টের (Bengaluru Stampede Case) ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ১১ জন। আহত হন কমপক্ষে ৪৭ জন। এই ঘটনায় আরসিবিকে দায়ী করল সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (CAT)। সিএটি জানিয়েছে, স্টেডিয়ামের বাইরে দলের বিজয় কুচকাওয়াজ ঘোষণার আগে পুলিশের কাছ থেকে যথাযথ অনুমতি নেয়নি আরসিবি। বিচারপতি বি কে শ্রীবাস্তব এবং প্রশাসনিক সদস্য সন্তোষ মেহরার সমন্বয়ে গঠিত ট্রাইব্যুনালের বেঙ্গালুরু বেঞ্চ জানিয়েছে, আরসিবি পুলিশের কাছ থেকে যথাযথ অনুমতি বা সম্মতি নেয়নি। হঠাৎ করেই তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে। যার ফলে জনসাধারণ সেখানে জমায়েত হন।
প্রসঙ্গত, ১৮ বছরের প্রতীক্ষার পর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু আইপিএলের ফাইনালে পঞ্জাব কিংসকে হারিয়ে ঐতিহাসিক জয় পায়। স্বাভাবিকভাবেই এই জয়কে ঘিরে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন কর্ণাটকের মানুষ। প্রিয় দলের সাফল্য উদযাপনের উত্তেজনা দ্রুত বিশৃঙ্খলায় রূপ নেয়। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের প্রবেশদ্বারে ভিড় উপচে পড়ে। পুলিশকে ভিড় নিয়ন্ত্রণে হালকা লাঠিচার্জও করতে দেখা যায়। এরপরই ধাক্কাধাক্কির মধ্যে পদদলিত হন বহু মানুষ। ঘটনায় প্রাণ হারান ১১ জন। আহতও হন কমপক্ষে ৪৭ জন। নিহতদের মধ্যে ১১ জনেরই বয়স ৪০-এর নীচে। যার মধ্যে একজন ১৩ বছরের কিশোরীও ছিল। ঘটনার প্রায় ৬ ঘণ্টা পর একটি বিবৃতি জারি করে আরসিবি (RCB)। তাতে বলা হয়, ‘দলের ফেরা উপলক্ষ্যে বিকেলে বিশাল জনসমাগম হয়েছিল বেঙ্গালুরুতে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে আমরা সেই জমায়েতে মর্মান্তিক ঘটনার কথা জানতে পেরেছি। এই ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। সকলের নিরাপত্তা এবং সুস্থতা আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আরসিবি কর্তৃপক্ষ এই প্রাণহানির ঘটনায় শোকপ্রকাশ করছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে সমবেদনা জানাই আমরা।’
যদিও তদন্তে নেমে কর্ণাটক পুলিশ আরসিবির (RCB) বিপণন শাখার শীর্ষ কর্মকর্তা নিখিল সোসালেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার করা হয় এই ঘটনায় আরসিবি (RCB) -র সঙ্গে যুক্ত একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থা ডিএনএ-র তিনজন আধিকারিককেও। এই সংস্থাটিই চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে বিজয় উৎসবের যাবতীয় ব্যবস্থাপনা করছিল বলে অভিযোগ। তদন্তে উঠে আসে, জনসংখ্যার তুলনায় অপর্যাপ্ত নিরাপত্তা, দুর্বল প্রবেশ ও বহির্গমন পরিকল্পনা এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনিক ব্যর্থতাই এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার মূল কারণ। ঘটনার পেছনে কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের ভূমিকাও তদন্তে উঠে এসেছে। কর্ণাটক সরকার এই ঘটনায় বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনারকেও সাসপেন্ড করে।