উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ আরসিবি-র আইপিএল জয় উদযাপনের দরুন বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক পদপিষ্টের ঘটনার তিন দিন পর একটি সরকারি চিঠি প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে যে, এই ঘটনাটি ঘটার পূর্বেই পুলিশের তরফে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ এবং জনবলের ঘাটতি সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছিল প্রশাসনকে।
ঘটনার দিন অর্থাৎ ৪ জুন, পুলিশের ডেপুটি কমিশনার(আইনসভার নিরাপত্তা বিষয়ক) এম.এন. করিবসাবানা গৌড়া একটি চিঠিতে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ এবং জনবলের ঘাটতি নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এই চিঠিটি লেখা হয়েছিল প্রশাসনিক সংস্কার বিভাগীয় সচিব জি. সত্যবতী এবং অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে। চিঠিতে গৌড়া লেখেন, “লক্ষাধিক ক্রিকেটপ্রেমীর বিধান সৌধে জড়ো হওয়ার সম্ভাবনা এবং নিরাপত্তা কর্মীর ঘাটতির কারণে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে।”
তিনি আরও জানান যে, আরসিবি ক্রিকেট দলের দেশজুড়ে বিশাল সংখ্যক অনুরাগী রয়েছে। বিধান সৌধে অনুষ্ঠান আয়োজন করলে লক্ষাধিক ক্রিকেটপ্রেমীর সেখানে জড়ো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিধান সৌধ সিকিউরিটি বিভাগের পর্যাপ্ত পরিমাণ জনবল না থাকার কারণে এটি একটি ‘বড় চ্যালেঞ্জ’ হয়ে দাঁড়াবে বলেও সতর্ক করেছিলেন তিনি।
চিঠিতে এও সুপারিশ করা হয় যে, ৪ জুন সমস্ত জনসাধারণের অনলাইন ও অফলাইন প্রবেশপত্র বাতিল করা হোক। সরকারি কর্মীদের সেদিন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সচিবালয়ে প্রবেশ না করার পরামর্শও দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি ভিড় এড়ানোর জন্য সেদিন দুপুরে ছুটি ঘোষণারও প্রস্তাব দেওয়া হয়।
ডিসিপি গৌড়া উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন যে, বিধান সৌধে পর্যাপ্ত নজরাদারি ব্যবস্থার অভাব রয়েছে। প্রসঙ্গত, এই স্থানে এর আগেও সিসিটিভি বসানোর আবেদন জানানো হলেও এখনও পর্যন্ত তা বসানো হয়নি। তিনি এও দাবি করেছিলেন যে, সংবর্দ্ধনা অনুষ্ঠানের জন্য যে মঞ্চ বানানো হচ্ছিল তার কাঠামোগত এবং বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা যেন পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট (পিডব্লিউডি) দ্বারা পরীক্ষা করানো হয়। ওই দিনে শহরের বাইরে থেকে অতিরিক্ত পুলিশ কর্মী নিয়োগের প্রয়োজনীয়তার কথাও এই চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন গৌড়া।
স্বাভাবিকভাবেই এই চিঠিটি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, পুলিশের তরফে আগে থেকেই যখন এই সতর্কতা জারি করা হয়েছিল তবে কেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হল না? যে ১১ টি প্রাণ অকালে ঝরে গেল সরকার ও প্রশাসন একটু সতর্ক হলেই হয়তো তাঁদের বাচানো যেত, এমনটাও মনে করছেন অনেকে। ঘটনার আগে না নেওয়া প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এবং ঘটনার গুরুত্ব বিচারে অপারগতার জন্য সরকার তথা পুলিশ প্রশাসনকেও তোলা হচ্ছে জনতার কাঠগড়ায়।