Bengali migrant employee | হরিয়ানাতেও আটক বাংলার শ্রমিক, চলছে শুধু রাজনীতির লড়াই

Bengali migrant employee | হরিয়ানাতেও আটক বাংলার শ্রমিক, চলছে শুধু রাজনীতির লড়াই

ব্যবসা-বাণিজ্যের /BUSINESS
Spread the love


উত্তরবঙ্গ ব্যুরো: সুর চড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ভিনরাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্তায় ছেদ পড়ছে না। বরং বাংলাদেশি সন্দেহে বাঙালি শ্রমিকদের আটকে রাখার ঘটনা বাড়ছে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর মহকুমার ১১ জন পরিযায়ী শ্রমিককে আটকে রাখার অভিযোগ উঠল হরিয়ানা পুলিশের বিরুদ্ধে। মালদার চাঁচলের দুই শ্রমিককেও সেখানে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। এমন ঘটনায় পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। যথারীতি তপ্ত হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি।

ফের বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের আটকে রাখার অভিযোগ। হরিয়ানার গুরুগ্রাম এলাকার কয়েকটি থানাতে হরিরামপুর ব্লকের ৭ জন, কুশমণ্ডি ব্লকের ২ জন এবং গঙ্গারামপুর ব্লকের ২ জনকে বাংলাদেশি সন্দেহে ক্যাম্পে রাখা হয়েছে বলে খবর। নথি দাখিলের পরেও মুক্তি মিলছে না বলে অভিযোগ। কুশমণ্ডি ব্লকের পশ্চিম মোল্লাপাড়া এলাকার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম একটি হোটেলে কাজ করেন। সম্প্রতি তাঁকে হরিয়ানা পুলিশ আটক করেছে। তাঁর বাবা মহিবুর রহমান বলছেন, ‘সমস্ত কাগজ দেখানোর পরেও শুধু বাংলাভাষী বলেই আমার ছেলেকে আটকে রেখেছে হরিয়ানা পুলিশ। কীভাবে ছেলে মুক্তি পাবে, বুঝতে পারছি না।’ পাঁচদিন আগে হরিয়ানা থানার পুলিশ আটক করেছে গঙ্গারামপুর থানার তাকিপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুর হোসেনকে। তাঁর মা হাসিনা বানুর বক্তব্য, ‘প্রায় আট বছর ধরে হরিয়ানাতে সিএনজি অটো চালায়। গত পাঁচদিন আগে স্থানীয় থানার পুলিশ বেশ কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে। ছেলেকে অটোতে করে আসামিদের থানায় পৌঁছে দিতে বলে পুলিশ। কিন্তু থানায় যাওয়ার পর আমার ছেলেকেও আটক করা হয়। সব নথি দেখাবার পরেও ছাড়ছে না।’ জেলা পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তাল বলেন, ‘যেখানে শ্রমিকরা রয়েছেন, সেখানে আমরা যোগাযোগ করেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

ঘটনায় যথারীতি বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে তৃণমূল। রাজ্যের মন্ত্রী তৃণমূল নেতা বিপ্লব মিত্র বলছেন, ‘বাংলাভাষীদের বিজেপি শাসিত এলাকায় বাংলাদেশি বলে দেগে দেওয়া হচ্ছে। বাঙালি বিদ্বেষের কারণে এই সমস্ত করা হচ্ছে। মূলত সংখ্যালঘুদের উপরে অত্যাচার করা হচ্ছে।’ বিজেপির জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরীর পালটা অভিযোগ, ‘নির্বাচনি সুবিধা নিতে ভুয়ো প্রচার করছে তৃণমূল। কীর্তি আজাদ, শত্রুঘ্ন সিনহা, ইউসুফ পাঠানদের প্রার্থী করছে তৃণমূল। তখন বিজেপি শাসিত রাজ্যের কথা মনে থাকছে না। শুধু এক্ষেত্রে বিজেপি শাসিত রাজ্যের কথা মনে পড়ছে।’

মালদার যে দুজন পরিযায়ী শ্রমিককে হরিয়ানায় আটক করা হয়েছে, তাঁদেরও নাকি অপরাধ বাংলায় কথা বলা, এমনই অভিযোগ পরিবার দুটির। আটক লাল্টু হোসেন ও সায়েদ আলির বাড়ি চাঁচল-২ ব্লকের চন্দ্রপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। লাল্টুর বাড়ি খানপুর গ্রামে এবং সায়েদের বাড়ি বলরামপুর গ্রামে। দুজনকেই স্ত্রীর সামনে থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সায়েদের স্ত্রী মনসুরা বিবি টেলিফোনে বলেন, ‘স্বামীর আধার কার্ড দেখল। তারপর আধ ঘণ্টার কথা বলে নিয়ে গিয়ে তিনদিন ধরে আটকে রেখেছে।’ এদিকে, এমন ঘটনায় মঙ্গলবার বলরামপুরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। আটক শ্রমিকের দাদা আবদুল মালেক বলেন, ‘ভাইয়ের কোনও দোষ নেই। বাংলাভাষী হওয়ায় পুলিশ হেনস্তা করছে।’ অন্যদিকে, লাল্টুর স্ত্রী সারমিনা খাতুন টেলিফোনে বলেন, ‘স্বামী রাতে খাবার খাচ্ছিলেন। আধার কার্ড দেখার নাম করে এক ঘণ্টার জন্য থানায় নিয়ে যায়। তিনদিন ধরে আটকে রাখা হয়েছে।’ তাঁর মতো খানপুর গ্রামের বাড়িতেও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা দুখু শেখ ও মা অতিজা বিবি। চাঁচল-২ ব্লকের বিডিও শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, ‘বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’

মালতীপুরের বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সীর অভিযোগ, ‘ভিনরাজ্যে বাংলার শ্রমিকরা বাংলা ভাষায় কথা বললেই হেনস্তা ও আটক করছে পুলিশ। আটকদের ছাড়াতে রাজ্য সরকার সচেষ্ট।’ উত্তর মালদার সাংসদ খগেন মুর্মু বলছেন, ‘যথাযথ কাগজ সহ আটক দুই শ্রমিকের পরিবার থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *