উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বাঁকুড়ার সোনামুখী থানার চকাই গ্রামে খুন হয়েছেন তৃণমূলের বুথ আহ্বায়ক সেকেন্দার খাঁ ওরফে সায়ন খাঁ। সোমবার রাতে পখন্না বাজার থেকে বাইকে করে বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত হন তিনি। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে, শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর ।
পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার রাত ৯টা নাগাদ সায়ন খাঁ নিজের বাইকে চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন। চকাই গ্রামে ঢোকার মুখে একটি সেচ খালের পাড়ে তাকে লক্ষ্য করে পরপর গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। তার পিঠে ও মাথায় একাধিক গুলি লাগে। ঘটনাস্থলেই তিনি লুটিয়ে পড়েন এবং তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে সোনামুখী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং তার দেহ উদ্ধার করে সোনামুখী গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে, স্থানীয়দের মতে, এটি একটি পরিকল্পিত খুন। সায়ন খাঁ এলাকায় একজন প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। তাকে দীর্ঘ দিন ধরে অনুসরণ করা হচ্ছিল বলেও জানা গিয়েছে।
এই খুনের ঘটনায় রাজনৈতিক বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে। তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুব্রত দত্ত সরাসরি বিজেপি এবং সিপিএমকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, “২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত জেনে বিজেপি সিপিএমকে সঙ্গে নিয়ে এই খুন করেছে। সায়ন দলের একজন দক্ষ সংগঠক ছিলেন, তাই তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে।” তবে, বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “এই খুনের সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই খুনের ঘটনা ঘটেছে।” তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলই এই ঘটনার মূল কারণ।
ঘটনার পেছনে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের পুরোনো ইতিহাস উঠে এসেছে। গত প্রায় এক বছর ধরে সোনামুখী ব্লকের চকাই গ্রাম তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদে উত্তপ্ত। গত ২ মার্চ একই গ্রামে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে এক তৃণমূল নেতা গুলিবিদ্ধ হন। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার বুথ আহ্বায়কের খুন হওয়ার ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক তৈরি করেছে।