হরিরামপুর: পোস্ট অফিসের নথি জাল করে উপভোক্তার টাকা আত্মসাৎ কিংবা সিএসপির টাকা গায়েবের ঘটনা পশ্চিমবঙ্গে বেশ কয়েকটি ঘটে গিয়েছে। এবার সেই তালিকায় নাম জড়াল দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুরের। তবে উপভোক্তার টাকা তুলে গা-ঢাকা দিয়েও শেষরক্ষা হল না। আট দিন পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে বেড়ানোর পর বুধবার রাতে রায়গঞ্জের সুভাষগঞ্জ থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে ওই সিএসপি মালিক বিকাশ জয়সওয়ালকে। হরিরামপুর থানার পুলিশ বিকাশকে বৃহস্পতিবার গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালতে তোলে। বিচারক ধৃতকে তিনদিনের পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
হরিরামপুর বাজারে বাড়ি বিকাশের। তিনি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের হরিরামপুর শাখার অনুমোদন নিয়ে পুণ্ডরী গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের একটি ঘরে সিএসপি খোলেন। গত ২০ মে বিকাশের বিরুদ্ধে হরিরামপুর থানায় টাকা আত্মসাৎ করার লিখিত অভিযোগ করেন পুণ্ডরী পঞ্চায়েতের ব্রাক্ষণগ্রামের বাসিন্দা পার্বতী মণ্ডল ও ইউসুফ মিয়াঁ। তাঁদের বক্তব্য, তাঁরা ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকার মধ্যে প্রথমে ৩০ হাজার করে টাকা তোলেন ওই সিএসপি থেকে। পরে ইউসুফ ১৩ ফেব্রুয়ারি ও পার্বতী ২৭ ফেব্রুয়ারি সেই সিএসপিতে গিয়ে বাকি ৩০ হাজার টাকা তোলার জন্য বায়োমেট্রিক হিসেবে নিজের আঙুলের ছাপ দেন। কিন্তু সিএসপি মালিক বিকাশ দুজনকেই জানান, আঙুলের ছাপ মেলেনি, তাই টাকা তোলা যাবে না। পরে ইউসুফ ও পার্বতী অ্যাকাউন্ট চেক করতে গিয়ে দেখেন, তাঁদের অ্যাকাউন্ট থেকে ৩০ হাজার করে টাকা তোলা হয়ে গিয়েছে। এরপর দুজনে বিকাশের বিরুদ্ধে পৃথকভাবে ২০ মে লিখিত অভিযোগ করেন হরিরামপুর থানায়। ব্যাংক থেকে এভাবে টাকা গায়েবের ঘটনায় নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। তবে অভিযুক্তকে খুঁজতে নেমে নাকাল হতে হয় পুলিশকে। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও বিকাশের সন্ধান মিলছিল না। অবশেষে আটদিন পর রায়গঞ্জের সুভাষগঞ্জে বিকাশকে পেয়ে স্বস্তিতে হরিরামপুর থানার পুলিশ।
এই প্রসঙ্গে হরিরামপুরের বিডিও অত্রী চক্রবর্তী বলেন, ‘ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের হরিরামপুর শাখার ম্যানেজারকে কড়া পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। ব্লকের বাকি ১৩টি সিএসপি সেন্টারে যেন এই ঘটনা না ঘটে সেবিষয়ে ম্যানেজারকে নজরদারি চালাতে বলেছি।’ ব্যাংক ম্যানেজার নাসির ইমাম জানান, ইতিমধ্যে ব্লকের বাকি সিএসপি সেন্টার সহ পুণ্ডরী সিএসপি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। এপ্রসঙ্গে স্টেট ব্যাংকের রিজিওনাল ম্যানেজার দাওয়া দোলমা ভুটিয়ার মন্তব্য, ‘ব্যাংক যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’