বালুরঘাট: এলপিজির ভর্তুকি দেওয়ার নাম করে আর্থিক প্রতারণার শিকার হলেন এক ব্যবসায়ী। মোট পাঁচ দফায় ওই ব্যবসায়ীর দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৮১ হাজার টাকা লোপাট করেছে সাইবার দুষ্কৃতীরা। রাজ্যের বাইরে চিকিৎসা করতে যাওয়ার জন্য ওই টাকা জমিয়েছিলেন ওই ব্যবসায়ী। কষ্টার্জিত পুঁজি এক নিমেষে চলে যাওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে ব্যবসায়ী সঞ্জয় কুমার বিশ্বাসের। শুক্রবার দুপুরে বালুরঘাটে এসে জেলা সাইবার ক্রাইম দপ্তরে অভিযোগ জানিয়েছেন প্রতারিত ওই ব্যবসায়ী। বহুবার সরকারি তরফে ব্যক্তিগত নথি কাউকে না দেওয়ার বার্তা দেওয়া হয়। তারপরেও মুহূর্তের মধ্যে টাকা গায়েবের ঘটনায় হতভম্ব পরিস্থিতি ওই ব্যবসায়ীর।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ঠ্যাঙ্গাপাড়া গ্রামের পশ্চিম জয়পুর এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয়বাবু। এদিন সকালে একটি অচেনা নম্বর থেকে হঠাৎই তার মোবাইলে ফোন আসে। বুনিয়াদপুরের একটি গ্যাস এজেন্সির নাম করে তার সঙ্গে বার্তালাপ শুরু হয়। যেখানে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এলপিজির ভর্তুকি বিগত কয়েক মাস ধরে ঢুকছে না বলে জানানো হয়। কিছু সমস্যা থাকার কারণে তিনি এই ভর্তুকি টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে জানান দুষ্কৃতীরা। তারপরেই ছক বেঁধে প্রতারণার ফাঁদ পেতে বসে তারা। যে ব্যাংকে গ্রাহক ভর্তুকির টাকা নিতে চান সেই অ্যাকাউন্টের তথ্য তার কাছে চাওয়া হয়। গ্রাহককে হোয়াটসঅ্যাপ খুলতে বলা হয়। সেখানেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য কী কী নথি প্রয়োজন তা চাওয়া হয়। সঞ্জয়বাবু হোয়াটসঅ্যাপ তেমন চালাতে পারেন না। তাই তিনি ছেলেকে বিষয়টি দেখার জন্য বলেন। তার ছেলেও ব্যাংকের সমস্ত তথ্য দুষ্কৃতীদের হাতে তুলে দেয়। এমনকি মোবাইলে আসা ওটিপিও সাইবার প্রতারকদের হাতে চলে যায়। তারপরেই একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে ৫২ হাজার টাকা উধাও হয়ে যায় ওই ব্যবসায়ীর। এমনকি কিছুক্ষণ পরেই সেই ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সমস্যা থাকার কারণে অন্য কোনও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকলে তারও নথি চাওয়া হয়। সেটি দেওয়ার পরেই আরেকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে চার দফায় প্রায় ২৯ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকরা। প্রায় ৮১ হাজার টাকা ইউপিআই মাধ্যমে তার অজান্তেই চলে গিয়েছে সাইবার প্রতারকদের কাছে। যা নজরে পড়তেই তিনি এদিন সাইবার ক্রাইম থানার দ্বারস্থ হয়েছেন। শারীরিকভাবে অসুস্থ ওই ব্যবসায়ী বর্তমানে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।
প্রতারিত সঞ্জয় কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘আমি অসুস্থ। চিকিৎসার জন্য রাজ্যের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন। তার জন্য টাকাগুলো কষ্ট করে জমিয়েছিলাম। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে সব টাকা চলে গেল। আমি দিশেহারা। এদিন ব্যাংকের আর্থিক লেনদেনের তথ্য দিয়ে সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ জানিয়েছি। আমার টাকা ফিরে পেলে চিকিৎসা সম্ভব হবে। এলপিজি গ্যাসের ভর্তুকি টাকা পেতে এমনটা হবে ভাবিনি। আমি চাই দ্রুত ঘটনার তদন্ত করে আমার টাকা ফিরিয়ে দিয়ে দোষীকে শাস্তি দেওয়া হোক।’