Balason River | লক্ষ লক্ষ টাকায় জমি বিক্রি, বালাসনের চরে অবৈধ বসতি

Balason River | লক্ষ লক্ষ টাকায় জমি বিক্রি, বালাসনের চরে অবৈধ বসতি

খেলাধুলা/SPORTS
Spread the love


রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: রানানগর থেকে শুরু করে পতিরামজোত পর্যন্ত বালাসন নদীর (Balason River) বাঁধ বরাবর প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকায় নদীর চর প্লটিং করে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। গোটা এলাকায় ভাঙাচোরা বাঁধ থেকে নদী পর্যন্ত চরজুড়ে প্লটিং এবং নতুন নতুন ঘরবাড়ি তৈরি হচ্ছে। এই ঘটনায় মাটিগাড়ার তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের একাংশ এবং জনপ্রতিনিধিদের মিলিত সিন্ডিকেটের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ।

নদীর চর যে বিক্রি হচ্ছে তা স্বীকার করে নিয়েছেন মাটিগাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দীপালি ঘোষদাস। তিনি বলেন, ‘বালাসনের চর এভাবে বিক্রি হয়ে যাওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে রানানগর, পতিরাম এলাকার বাসিন্দারা আমার কাছে মাস পিটিশন দিয়েছিলেন। আমি সেটা বিডিওর কাছে পাঠিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছি।’

মাটিগাড়ার বিডিও বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘আমরা ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরকে এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’ মাটিগাড়ার ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক ক্লিমেন্ট সি ভুটিয়া ফোন না ধরায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মাটিগাড়া হাসপাতাল সংলগ্ন রেলগেট থেকে যে সরু রাস্তাটি বাঁদিকে নেমে গেল সেই রাস্তায় শুঁটকি গুদামকে পিছনে ফেলে সোজা এগিয়ে গেলেই বালাসন নদীর বাঁধ। এই বাঁধে উঠে বাঁদিকে এগোলেই রানানগর। ডানদিকে নদী এবং বাঁধের মাঝের বালিমাটিতে নতুন নতুন বাড়ি, ঘর তৈরি হচ্ছে। অনেক জায়গায় খুঁটি পোঁতা, অনেক জায়গা আবার কংক্রিটের ফাউন্ডেশন করে জমি চিহ্নিত করা রয়েছে। এভাবে বাঁধ ধরে রানানগর পেরিয়ে পতিরামজোত পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এক চিত্র। মাঝে এক জায়গায় দেখা গেল বাঁধ থেকে নদীর মাঝের জায়গায় ‘সরকারি জমি’ বলে রাজ্য সরকারের বোর্ড বসানো রয়েছে। সেই বোর্ডও প্রায় মুছে দিয়ে সেখানেও প্লটিং করা হচ্ছে।

এখানে জমি কিনেছেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তাঁরা মাটিগাড়া, নকশালবাড়ির বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে এসেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বাসিন্দারা বলেন, তৃণমূলের নেতারাই তো আমাদের এখানে এনে বসিয়েছেন। গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যরাও তো সবটাই জানেন। আমরা তো আর বিনামূল্যে এখানে বসিনি, এক-দেড় লক্ষ টাকা কাঠা হিসাবে জমির দাম নিয়েছে। কিন্তু জমির কাগজ দেওয়ার কথা বলা হলেও এখনও তা দেয়নি। কেউ দু’কাঠা, কেউ তিন কাঠা নদীর চর কিনে বাড়ি করেছেন। সিন্ডিকেটের নেতারা নিজেরাই ফিতে ধরে জমি মেপে প্লটিং করছেন। কিছু কাঁচা বাড়ি যেমন রয়েছে, তেমনই বেশ কিছু পাকা বাড়িও এই নদীর চরে তৈরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু জমির কাগজ না পাওয়ায় এখনও বহু বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগও হয়নি।

তৃণমূলের এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য বললেন, ছক কষেই এই জমিগুলি প্লটিং করে বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা লুট হচ্ছে। তাঁর কথায়, জনপ্রতিনিধি এবং আমাদের দলের নেতারা মিলে এই কাজগুলি করছে এবং জমি যাঁরা কিনছেন তাঁদের নাম ব্লকের পাট্টার তালিকায় ঢোকানোর চেষ্টা হচ্ছে। পরবর্তীতে রাজ্য সরকার জমির পাট্টা দিলে এই বাসিন্দাদের নামগুলিও সেখানে ঢুকে যাচ্ছে। দলের নেতা-নেত্রীরা সবটাই জানেন, কিন্তু কেউ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। রানানগরের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য শৈলেন রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে, মাটিগাড়ার তৃণমূল নেত্রী তথা মহকুমা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ প্রিয়াংকা বিশ্বাস বলেন, ‘ওখানে কেউ বিনা পয়সায় বসেনি। প্রত্যেকেই টাকা দিয়ে জমি নিয়ে বসেছেন, এটা ঠিক। কিন্তু কাকে টাকা দিয়েছেন, কীভাবে জমি কেনাবেচা হল সেসব বাসিন্দারা বলতে চান না। তবে, আমরা কড়াভাবে বিষয়টি দেখছি। এভাবে নদীর চর দখল করে বসতি তৈরি করতে দেওয়া যাবে না। যে বা যারা এই বেআইনি কাজে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *