বৈষ্ণবনগর: প্রশাসনের তরফে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস পাওয়ায় পারলালপুর হাইস্কুলের ক্যাম্পে থাকা ধুলিয়ানের ঘরছাড়ারা শনিবার থেকে ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। এদিন পুলিশের গাড়িতে চেপে ২১ জন তাদের বাড়ির পথে রওনা দেন। সঙ্গে তুলে দেওয়া হয় ত্রাণসামগ্রী। ক্যাম্পের বাসিন্দাদের অনেকেই এদিন বাড়ি ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। প্রশাসন তাদের পাশে থাকায় তারা আগের থেকে অনেকটাই স্বস্তিতে। আতঙ্ক অনেকটাই দূর হয়েছে।
পারলালপুর হাইস্কুল শিবিরে গত শুক্রবার ও শনিবার ধুলিয়ানের ঘরছাড়ারা নৌকায় গঙ্গা পেরিয়ে আশ্রয় নেন। ছিলেন প্রায় সাড়ে ৩০০ মানুষ। ধুলিয়ানের পরিস্থিতি শান্ত হতে শুরু করলে কয়েকজন বাড়ি ফিরতে শুরু করেন। সেখানে এখনও ২১৫ জন রয়েছেন। তারমধ্যে ৭০ শতাংশ মহিলা রয়েছেন। প্রশাসনের তরফে তাঁদের তিন বেলা করে খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরীক্ষা, পানীয় জলের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
ঘর ছেড়ে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে হয়েছিল গৃহবধূ কল্যাণী প্রামাণিককে। তিনি এদিন বলেন, ‘ধুলিয়ান প্রশাসন থেকে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে। ধীরে ধীরে আমাদের ক্ষতিপূরণও দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে। এখন এলাকা শান্ত। ভয় কাটিয়ে এদিন আমরা বাড়ি ফিরছি। আগে অনেকেই বাড়ি ফিরেছেন। তাঁদের কোনও সমস্যা হয়নি । আমরাও এদিন ঘরে ফেরার কথা প্রশাসনকে জানালে প্রশাসনের তরফে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।’
কালিয়াচক ৩ নং ব্লকের বিডিও সুকান্ত সিকদার জানান, ‘গৃহহীনদের পুলিশের গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয়। তুলে দেওয়া হয় ১০ কেজি করে চাল, ত্রিপল, বেবি ফুড সহ অন্য খাদ্যসামগ্রী।’ মালদা সদর মহকুমা শাসক পঙ্কজ তামাং জানান, ‘বর্তমানে মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি শান্ত। এদিন নিজে থেকেই ২১ জন বাড়ি ফেরার কথা আমাদের জানালে আমরা তাঁদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করি। সঙ্গে ত্রাণসামগ্রীও তুলে দিই।’
উল্লেখ্য, ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবার মুর্শিদাবাদে অশান্তি ছড়ায়। সেই অশান্তির জেরে ধুলিয়ানের বেশকিছু পরিবার আতঙ্কে বাড়ি থেকে রাতারাতি নৌকায় নদী পেরিয়ে বৈষ্ণবনগরের পারলালপুর হাইস্কুলের ক্যাম্পে আশ্রয় নেন।