এম আনওয়ারউল হক, বৈষ্ণবনগর: বিয়ের মরশুম এখন। বিয়েতে তো মিষ্টি লাগেই। ছানা ছাড়া মিষ্টি হয় না। স্বভাবতই ছানার চাহিদা বেড়েছে। নাওয়া-খাওয়া ভুলে ছানা বানিয়ে চলেছেন বৈষ্ণবনগরে মিষ্টির কারিগররা। যে কারণে কালিয়াচক ৩ ব্লকের গ্রামে গ্রামে ছানার খুব কদর। আরও দু’-এক সপ্তাহ এই প্রবণতা থাকবে।
বৈষ্ণবনগরের ঘোষপাড়া এলাকা ছানার জন্য বিখ্যাত। এবারে চাহিদা অতীতের সমস্ত রেকর্ড ছাড়িয়েছে। সেই ছানা কিনে দিন-রাত পরিশ্রম করে বিক্রি করছেন কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের মন্ডাই, লক্ষ্মীপুর, চর সুজাপুর, পারলালপুর, বীরনগর ও রাজনগর এলাকার ব্যবসায়ীরা। প্রতিদিন টন টন ছানা যাচ্ছে রায়গঞ্জ, ইটাহার, ডালখোলা, ইসলামপুর, এমনকি বিহারের কিশনগঞ্জে।
কালিয়াচকের ছানাপট্টি এলাকার মিষ্টির দোকানে ক্রেতাদের ভিড় লেগেই থাকে। অন্য জেলা, ভিনরাজ্য থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরাও এখানে ভিড় জমান ছানা কিনে নিয়ে যাওয়ার জন্য। অনেক পাইকারি ব্যবসায়ী বাসে কিংবা ছোট গাড়িতে ছানা নিয়ে রাতে গন্তব্যের পথে রওনা দেন।
বৈষ্ণবনগরের ছানার বিশেষত্ব তার মিহি গঠন। স্থানীয় ব্যবসায়ী রমেশ ঘোষ বলেন, ‘আগে দিনে ২০ থেকে ৩০ কেজি ছানা তৈরি হত। এখন ৫০-৬০ কেজি ছাড়িয়ে যাচ্ছে।’ সাধারণ সময়ে যেখানে এই অঞ্চলে ছানার দাম থাকে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, এখন সেটা কেজি প্রতি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। বৈষ্ণবনগরের বিডিও অফিসের কাছে মাখন ঘোষের বাড়ি। সেখানে ছানা তৈরির ব্যস্ততা এখন তুঙ্গে।
কাজ করতে করতে মাখন বলেন, ‘এখন তো খাওয়া-ঘুমের সময় নেই। চাহিদা এত যে, কুলিয়ে উঠতে পারছি না।’ স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য উজ্জ্বল ঘোষের মতে, ‘‘মাঝে মাঝে চাহিদা এত বেশি হচ্ছে যে, ‘ছানা শেষ’ বোর্ড ঝুলিয়ে দিতে হচ্ছে।’’ চাহিদা বাড়ায় দামেরও ঊর্ধ্বগতি। যা খুচরো ক্রেতাদের সমস্যায় ফেলেছে।