শিলিগুড়ি: বসন্তোৎসবের আনন্দেও বিপত্তি। উত্তর সিকিমে বেড়াতে গিয়ে চরম সমস্যার মুখোমুখি শয়ে শয়ে পর্যটক। কোন পথে গ্যাংটক ফেরা হবে, বুঝতে পারছেন না তাঁরা। এর মূলেই রয়েছে জংগুর ফিডার বেইলি ব্রিজের হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়া। বিকল্প পথ বলতে নাগা রোড রয়েছে। কিন্তু রাস্তাটি এতটাই বেহাল যে, ওই পথে যান চলাচল যথেষ্ট ঝক্কির। বর্ডার রোড অর্গানাইজেশনের (বিআরও) তরফে শনিবার বেইলি ব্রিজটি পরিদর্শন করা হয়েছে বটে, কিন্তু সেতুটি কতদিনের মধ্যে মেরামতি সম্ভব, সে ব্যাপারে কোনও নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি। পর্যটকদের যাতে কোনওরকম সমস্যা না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর রাখার জন্য মংগন জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং।
বসন্তেও ধারাবাহিক তুষারপাত সিকিম পাহাড়ে। গরমে যখন পুড়ছে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গ, তখন পড়শি পাহাড়ি রাজ্যে তাপমাত্রার পতন অব্যাহত। স্বাভাবিক ভাবেই হোলির ছুটিতে কটা দিন এমন প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় কাটাতে অনেকেই ছুটে আসছেন দার্জিলিংয়ের পাশাপাশি সিকিমে। কিন্তু সিকিমের পথে তাঁদের ঘুরে বেড়ানোর ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে প্রকৃতি এবং দুর্যোগ। ভারী তুষারপাতের জন্য পূর্ব সিকিমের ছাংগু লেকের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ। ফলে যাঁদের উত্তর সিকিমে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল না, তাঁরাও ছুটে গিয়েছেন লাচেন, লাচুংয়ের মতো জায়গাগুলিতে।
এখানে বিপদ ডেকে আনলো বেইলি ব্রিজের ভেঙে পড়া। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে একটি গাড়ি উঠতেই ব্রিজটির একটি বড় অংশ ভেঙে পড়ে। সবমিলিয়ে গোটা ব্রিজটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। মাঝপথ থেকে অনেক গাড়ি গ্যাংটক ফিরে আসে পর্যটকদের নিয়ে। লাচেন, লাচুংয়ের মতো জায়গাগুলি থেকে যাঁরা সকালে গ্যাংটকের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন, তাঁদের ফিরে যেতে হয়। স্বাভাবিক ভাবে এমন পরিস্থিতিতে পর্যটকদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছে মংগন জেলা প্রশাসন। রাতারাতি বেইলি ব্রিজটির মেরামতি সম্ভব না হওয়ায় জোর দেওয়া হচ্ছে নাগা রোড মেরামতিতে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের বক্তব্য, যান চলাচলের কিছুটা উপযুক্ত করে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে নাগা রোডকে। উল্লেখ্য, ‘২৩-এর সাউথ লোনাক লেক বিপর্যয়ে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছিল জংগু। একাধিক সেতু উড়ে গিয়েছিল জলের স্রোতে। গত বছর ফিডাং বেইলি ব্রিজটি তৈরি করা হয়। কিন্তু ওই সেতুটিও নতুন বিপদ ডেকে আনল।