ভারত- ২০২/৫
শ্রীলঙ্কা-২০২/৫
সুপার ওভার
শ্রীলঙ্কা-২/২
ভারত-৩/০
দুবাই: ফাইনালের টিকিট ইতিমধ্যেই পকেটে। চোখ রবিবার পাকিস্তান-দ্বৈরথে। তার আগে আজ ছিল শ্রীলঙ্কা ম্যাচে প্রস্তুতি ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত নিয়মরক্ষার যে ম্যাচই রং ছড়াল। খেতাবি যুদ্ধের আগে একইসঙ্গে অনেক প্রশ্নের মুখেও দাঁড় করিয়ে দিল টিম ইন্ডিয়াকে।
২০২/৫-চলতি এশিয়া কাপের সর্বাধিক স্কোর। তারপরও ম্যাচ গড়াল সুপার ওভারে। পাথুম নিসাঙ্কার সেঞ্চুরির ধাক্কায় একসময় ম্যাচ প্রায় নাগালের বাইরে চলে গিয়েছিল। শেষ ৫ ওভারে শ্রীলঙ্কার দরকার ছিল ৪৬। হাতে ৮ উইকেট। ক্রিজে বিপজ্জনক নিসাঙ্কা। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া পরিস্থিতি থেকে ডেথ ওভারে দুরন্ত প্রত্যাবর্তন ভারতের।
নিট ফল, সুপার ওভারে ম্যাচ নিয়ে যাওয়া। ২০ ওভার শেষে দুই দলের স্কোর ২০২/৫। হার না মানা যে প্রচেষ্টার সুফল, ‘অপরাজিত’ তকমা বজায় রেখে ফাইনালে পািকস্তানের মুখোমুখি মেন ইন ব্লু। সুপার ওভারে বাজিমাত অর্শদীপ সিংয়ের। শ্রীলঙ্কাকে আটকে দেন ২/২ স্কোরে। এরপর সহজ লক্ষ্যে পৌঁছোতে অসুবিধা হয়নি। প্রথম বলে তিন রান নিয়ে ম্যাচে ইতি টেনে দেন সূর্যকুমার যাদব।
নিয়মরক্ষার টক্করে পরতে পরতে আকর্ষণের পারদ। অভিষেক শর্মা (৩১ বলে ৬১), িতলক ভার্মা (অপরাজিত ৪৯), সঞ্জু স্যামসনের (৩৯) কাঁধে চেপে ভারতের ২০২/৫। জসপ্রীত বুমরাহ না থাকলেও শ্রীলঙ্কা ব্যাটিংয়ের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ। যদিও সেই কঠিন লক্ষ্যেই পালটা চ্যালেঞ্জ দ্বীপরাষ্ট্রের।
হার্দিক পান্ডিয়া দুর্দান্ত প্রথম ওভারে কুশল মেন্ডিসকে (০) ফিরিয়ে শুরুতেই ঝটকা দেন। কিন্তু অর্শদীপ, হর্ষিত রানাদের দিশাহীন বোলিং চাপ আলগা করে দেয়। কৃতিত্ব প্রাপ্য নিসাঙ্কা (৫৮ বলে ১০৭), কুশল জেনিথ পেরেরার (৫৮)। ১২৭ রানের যুগলবন্দি।
পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভারে ৭২/১। ১০ ওভারে ১১৪। নিয়মরক্ষার ম্যাচে বোলারদের যে ব্যর্থতার প্রতিফলন সাজঘরের ব্যালকনিতে বসে থাকা গৌতম গম্ভীরের চোখেমুখে। শেষপর্যন্ত জুটি ভাঙেন বরুণ চক্রবর্তী (৩১/১)। ততক্ষণে ১২.২ ওভারে ১৩৪/২ স্কোরে পৌঁছে গিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
চরিথ আসালাঙ্কা (৫), কামিন্দু মেন্ডিসকে (৩) দ্রুত ফিরিয়ে ম্যাচে ফেরার মরিয়া প্রয়াস কুলদীপ যাদব, অর্শদীপের হাত ধরে। নিসাঙ্কা থামেন বিরাট কোহলি, বাবর আজমের পর এশিয়া কাপে সেঞ্চুরির নজির গড়ে। নিসাঙ্কার মূল্যবান উইকেট হর্ষিতের পকেটে এবং যার হাত ধরে ম্যাচে ফেরা। বাকিটা সুপার ওভারে অর্শদীপের দাপট।
এর আগে ভারতীয় ইনিংসে ফের অভিষেক-ঝড়ের চেনা ছবি। দ্বিতীয় ওভারে শুভমান গিল (৪) আউট। নিজের বলে দুরন্ত ক্যাচ নেন মহেশ থিকশানা। কিন্তু ধাক্কা বুঝতে দেননি অভিষেক শর্মা। সূর্যকে উলটো দিকে দাঁড় করিয়ে বিগহিটের ফুলঝুরি। দুষ্মন্ত চামিরা, নুয়ান থুশারার পেস হোক বা থিকশানাদের স্পিন- অনায়াস শটের ফুলঝুরি। পুরস্কারস্বরূপ ২২ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ। পূরণ চলতি এশিয়া কাপে অর্ধশতরানের হ্যাটট্রিক।
অভিষেক-সুনামির কাঁধে চেপে পাওয়ার প্লে-তে ৭১/১। সপ্তম ওভারেই অবশ্য ভারতের দাপটে ব্রেক। ব্যর্থতার তালিকা দীর্ঘ করে সূর্য (১২) ডাগআউটে। শেষ ১০ ম্যাচে ৯৯। ‘মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি’র সঙ্গে যা মোটেই মানানসই নয়।
সমর্থকদের আশায় জল ঢেলে নবম ওভারে আউট অভিষেক (৩১ বলে ৬১)। বাউন্ডারি লাইনের ঠিক আগে শট জমা পড়ে কামিন্দু মেন্ডিসের নিরাপদ হাতে। আবারও ফিরলেন তিন অঙ্কের প্রত্যাশা হাতছাড়ার আক্ষেপ নিয়ে। তবে বিস্ফোরক শুরুর দাবি অবশ্য পূরণ ৮টি চার ও জোড়া ছক্কায়। পূরণ ফাইনালের আগে শাহিন শা আফ্রিদি, হ্যারিস রউফদের বার্তা দেওয়াও। ৬ ম্যাচে ৩০৯। কোহলিকে টপকে গড়লেন এশিয়া কাপের এক আসরে সর্বাধিক রানের নজির।
৯২/৩ থেকে ইনিংস টানলেন তিলক-সঞ্জু জুটি। ম্যাচ শুরুর আগে তিলক বলছিলেন, ফিনিশারের ভূমিকা পালন করতে ভালো লাগে। প্রস্তুত যে কোনও পজিশনে খেলতে। আজ চার নম্বরে নেমে নিজের দায়িত্বটা দারুণভাবে সামলালেন অপরাজিত ৪৯ রানের ইনিংসে।
সোজা ব্যাটে দুরন্ত কিছু শট বেরিয়ে এল সঞ্জুর (২৩ বলে ৩৯) থেকে। বাংলাদেশ ম্যাচে ব্যািটং অর্ডার নিয়ে বিতর্কের জবাব দিলেন তিলকের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ৬৬ রানের যুগলবন্দিতে। ১৫ ওভারে ১৫০/৩ থেকে সঞ্জু ও হার্দিক (২) পরপর ফেরেন। ডেথ ওভারে শ্রীলঙ্কার বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে রানের গতিতে ব্রেক লাগলেও শেষপর্যন্ত তিলক, অক্ষর প্যাটেলের (অপরাজিত ২১) সৌজন্যে দুশো পার।