উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: “কোনও সংঘর্ষবিরতি নয়। অবিলম্বে আত্মসমর্পণ করতে হবে।” মাওবাদীদের ‘অস্থায়ী সংঘর্ষবিরতি’-র প্রস্তাবের জবাবে এমনটাই জানালেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শা। গত ৯ মাসে ২১০ জন শীর্ষনেতাকে হারানোর পরেই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ‘অস্থায়ী সংঘর্ষবিরতি’-র প্রস্তাব পাঠিয়েছিল মাওবাদীরা। তারা জানিয়েছিল, শান্তি আলোচনায় বসতে প্রস্তুত তারা। কিন্তু অমিত শা সেই প্রস্তাবে সটান ‘না’ করে দিলেন, তাঁর এই মন্তব্যের মাধ্যমেই।
মাওবাদী দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর লাগাতার অভিযানের মুখে কোণঠাসা হয়েই সম্প্রতি আলোচনার পথে হাঁটার ইঙ্গিত দেয় মাওবাদী সংগঠন। বিশেষ করে, গত এপ্রিলে ছত্তিসগড়ের অবুঝমাড়ে সংগঠনের অন্যতম শীর্ষনেতা নম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজুকে খতম করাটা তাদের জন্য ছিল সবচেয়ে বড় ধাক্কা। এই চাপের মুখেই নাকি তেলঙ্গনার ভদ্রাদ্রি-কোঠাগুডেম জেলায় মাওবাদীদের শীর্ষ নেতৃত্ব জরুরি বৈঠকে বসে। এর পরই শান্তি আলোচনা ও যুদ্ধবিরতির আবেদন জানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লেখেন কিষেণজির ভাই মাল্লোজুলা কোটেশ্বর রাও।
চিঠিতে তারা জানায়, “আমরা স্পষ্ট ভাবে জানাচ্ছি, ভবিষ্যতে আমরা জনগণের স্বার্থে লড়াই করা সমস্ত রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের সঙ্গে মিলে একসঙ্গে কাজ করব। এই নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তাঁর প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমরা আলোচনায় প্রস্তুত।” জানা গিয়েছে, গত ১৫ অগাস্ট এই বিবৃতি জারি করা হয়।
কিন্তু মাওবাদীদের এই শান্তি-প্রস্তাবকে সরাসরি উড়িয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শা। এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই বিষয়ে কঠোর বার্তা দেন। শা বলেন, “একটা চিঠি ঘুরছে। সেখানে সিপিআই (মাওবাদী)-র তরফে বলা হয়েছে, শান্তি আলোচনার জন্য তাঁদের সাময়িক সংঘর্ষবিরতির প্রয়োজন। কিন্তু কান খুলে শুনে রাখুন, কোনও যুদ্ধবিরতি হবে না। আপনারা বন্দুক নামান। পুলিশ গুলি চালাবে না।”
তবে শা এও আশ্বাস দিয়েছেন যে, মাওবাদীরা আত্মসমর্পণ করলে কেন্দ্রীয় সরকার তাদের বিষয়টি সহানুভূতির দৃষ্টিতে দেখবে। প্রসঙ্গত, মোদি সরকার মাওবাদীমুক্ত ভারত গড়তে বদ্ধপরিকর। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ৩১ মার্চ, ২০২৬-এর মধ্যেই দেশ থেকে মাওবাদীদের নির্মূল করা হবে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারনা এই ডেডলাইন বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি মাওবাদীদের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে শা কার্যত এটা স্পষ্ট করলেন যে, সরকারের কৌশল এখন আর আলোচনা নয়, বরং হয় আত্মসমর্পণ, নয়তো নির্মূল।