সুভাষ বর্মন, পলাশবাড়ি: খাতায়-কলমে দলের নাম হয়তো আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) জেলার। কিন্তু দলের সদস্যরা প্রত্যেকেই পলাশবাড়ির (Palashbari)। যদিও এতে বিন্দুমাত্র অবাক হওয়ার জায়গা নেই। তিন-চার বছর ধরেই হকি (Hockey) খেলায় মেতেছে পলাশবাড়ি। এরমধ্যে এখানকার পড়ুয়ারা রাজ্য এবং জাতীয় স্তরে একাধিক প্রতিযোগিতায় অংশও নিয়ে ফেলেছে। তবে অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ আগে মেলেনি। এবারই প্রথম বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের নেতাজি সুভাষ স্টেট গেমসে আলিপুরদুয়ারের মহিলা এবং পুরুষ দল অনূর্ধ্ব-১৭ বিভাগে অংশ নিতে চলেছে।
আর সেই দুই দলের ৩৬ জন সদস্যই পলাশবাড়ির। যারা রবিবারই মালদার উদ্দেশে রওনা দিয়ে দিয়েছে৷ সোমবার থেকে সেখানেই রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতা শুরু হচ্ছে। এত বড় মাপের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পেরে পড়ুয়ারা যেমন উত্তেজিত, তেমনি অত্যন্ত খুশিও। যেমন- মেয়েদের দলের সদস্য নবম শ্রেণির পড়ুয়া বর্ষা সরকার। বর্ষার কথায়, ‘কয়েক বছর ধরে পড়াশোনার পাশাপাশি হকি খেলছি। একাধিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছি। তবে এবারই প্রথম বেঙ্গল অলিম্পিকের খেলায় যাচ্ছি। এজন্য বাড়তি উৎসাহ কাজ করছে।’ নবম শ্রেণিরই আরেক ছাত্রী দীপশিখা বর্মনেরও একই বক্তব্য। অন্যদিকে, দশম শ্রেণির দহিতা বর্মন জানাল, এত বড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার আগে একটু চিন্তায় রয়েছি। তাই অনুশীলনে কোনও খামতি রাখছি না। এদিকে, ছেলেদের দলের বিক্রম বর্মন, দেবজিৎ সরকার আবার দারুণ উজ্জীবিত। এদিন রওনা দেওয়ার আগে সবার একটাই লক্ষ্য, রাজ্য চ্যাম্পিয়ন হয়ে জাতীয় স্তরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করা।
সন্তানদের জন্য গর্বিত অভিভাবকরাও। বর্ষার বাবা মিঠুন সরকারের কথায়, ‘কয়েক বছরে মেয়ে অনেক জায়গায় খেলতে গেল। খেলাধুলোর পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে যাচ্ছে। মেয়ের জন্য আমি গর্বিত।’
খুশির হাওয়া পলাশবাড়ির ক্রীড়াপ্রেমীদের মধ্যে। পলাশবাড়ির মরিচঝাঁপির যুব সংঘের মাঠে ক’বছর আগে নিখরচায় হকির প্রশিক্ষণ শুরু করেন কোচ সরোজকুমার বসু। এখনও তিনি সেই দায়িত্ব পালন করছেন। কোচের কথায়, ‘জেলার হয়ে দুই দল রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতায় খেলতে যাচ্ছে। ভালোভাবে খেললে জেলার নাম উজ্জল হবে।’ এদিন দলের সঙ্গে মালদা গিয়েছেন আলিপুরদুয়ার হকি অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জীবন সরকার। তিনি বলেন, ‘বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের হকি প্রতিযোগিতায় এবারই প্রথম আমাদের দুই দলের পড়ুয়ারা খেলবে।’