আলিপুরদুয়ার: একদিকে যখন সন্তানরা পরীক্ষা দিতে ব্যস্ত, সেসময় মায়েরা পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে ব্যস্ত জমিয়ে নতুন বান্ধবীদের সঙ্গে আড্ডা দিতে। আর সেই আড্ডা দেওয়ার মাধ্যমে তাঁরা ফিরে যাচ্ছেন নিজেদের ছোটবেলায়। মঙ্গলবার শহরের মাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্রগুলির বাইরে সেই ছবিই ধরা পড়ল।
সুভদ্রা দত্ত মেয়েকে নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে এসেছিলেন। মেয়ে পরীক্ষা দিতে ঢুকলেও তিনি নতুন বান্ধবীদের মধ্যে দীপালি কর্মকারকে বলছিলেন, ‘তুই আগের দিন খাইয়েছিলি। আজ কিন্তু আমার তরফে ট্রিট।’ সুভদ্রা বলেন, ‘পরীক্ষাকেন্দ্রে আসার পর কথা বলতে গিয়ে দুজনে খুব ভালো বান্ধবী হয়ে গিয়েছি। পরীক্ষার সময়গুলিতে ঝালমুড়ি, কেক, ফুচকা ইত্যাদি খাওয়া যেমন চলছে, তেমনি জমিয়ে আড্ডাও চলছে।’
শহরের বাবুপাড়া হাইস্কুল, বাবুপাড়া গার্লস হাইস্কুল এলাকায় গিয়ে দেখা যায় সেখানে পাশেই থাকা স্কুলের মাঠের মধ্যে অভিভাবকদের আড্ডা দিতে। সেখানে গাছের ছায়ায় কেউ গোল করে বসে আড্ডা দিচ্ছেন, কেউ আবার রাস্তার পাশে বসেও আড্ডা দিচ্ছেন। পিয়ালী মজুমদার নামে এক অভিভাবককে দেখা যায় পান চিবোতে চিবোতে গল্প করতে। তিনি বলেন, ‘বাড়ি থেকে খাওয়াদাওয়া করে আসা হয়েছে, সেকারণে ভারী কিছু খাওয়া হল না আজ। তবে এখানে আসার পর কয়েকজন একসঙ্গে বসে আড্ডা দিই। ফল মাখা কিংবা ঝালমুড়ি খাই মাঝেমধ্যেই। আবার যঁারা পান খান, তঁাদের নিয়ে পানের আসরও বসে।’
তাঁর কথায়, ‘একেবারে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। বান্ধবীরা এভাবেই একসঙ্গে আড্ডা দিতাম। সময় কাটাতাম, খাওয়াদাওয়া করতাম। সন্তানরা পরীক্ষা দিলেও আমরা আবার সেই ছোটবেলার দিনগুলি মনে হয় ফিরে পেয়েছি।’ সায়ন্তনী দাসকে আবার দেখা যায় খানিকটা জোর করেই বান্ধবীদের খাওয়ার টাকাটা দিতে। তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে থেকেই আমরা ভালো বান্ধবী। ফলে পরীক্ষার দিনগুলিতে আসার পর আড্ডার মাধ্যমে সময় কাটাচ্ছি। এই সময়টা তো আর ফিরে পাব না। তাই ভালোও লাগে।’
শিপ্রা সরকার জানান, এভাবেই তারা মিলেমিশে পরীক্ষার দিনগুলি কাটাচ্ছেন এবং আশা করছেন এই বন্ধুত্ব পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরেও থাকবে বলেন তিনি। শুধু তাই নয় ডলি দাস, মিলি দেবনাথরা আবার কোনদিন কী খাবেন, কে টোটো ভাড়া দেবে সেটা ঠিক করে আসেন। পরীক্ষার দিনগুলো চাপ থাকলেও মায়েরা ফিরে যান ছেলেবেলার দিনগুলিতে। ওই তিন ঘণ্টা যেন তঁাদের একান্ত সময়। তঁাদের ‘রিল্যাক্স’-এর সময়।