Alipurduar | শিক্ষিকার চড়ে স্কুলে হাজির পুলিশ! শোরগোল এলাকায়

Alipurduar | শিক্ষিকার চড়ে স্কুলে হাজির পুলিশ! শোরগোল এলাকায়

শিক্ষা
Spread the love


আলিপুরদুয়ার: আলিপুরদুয়ার জংশন সংলগ্ন বাদলনগর এলাকার একটি বেসরকারি প্রাথমিক স্কুলে বৃহস্পতিবার রীতিমতো হুলুস্থুল! কী ঘটেছে? এক খুদে পড়ুয়াকে মারধর করেছেন শিক্ষিকা। আর ছুটির পর মেয়ের গালে সেই মারের ‘চিহ্ন’ দেখতে পেয়ে রেগে আগুন অভিভাবক সটান পুলিশ ডেকে বসলেন স্কুলে।

ক্লাসে দুষ্টুমি করায় সেই খুদেকে শাসন করতে চেয়েছিলেন শিক্ষিকা। হ্যাঁ, আঘাত করাটা যে বাড়াবাড়ি হয়ে গিয়েছে, পরে সেকথা মেনে নিয়েছেন তিনিও। কিন্তু তার জেরে যে স্কুলে একেবারে পুলিশ চলে আসবে, সেকথা সেই শিক্ষিকা তো বটেই, স্কুল কর্তৃপক্ষও ভাবতে পারেনি। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে দু’পক্ষ বসে মিটমাট করে নেয়। এবিষয়ে সেই অভিভাবকের বক্তব্য অবশ্য পাওয়া যায়নি। স্কুলে হট্টগোল পাকানোর পর আর কারও সঙ্গে কথা বলতে চাননি সেই মেয়ের বাবা-মা।

ওই বেসরকারি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক শেখর প্রামাণিক বলেন, ‘এদিন স্কুলে পরীক্ষা চলছিল। সেসময় এক পড়ুয়াকে চড় মারার অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় সেই শিক্ষিকাও অনুতপ্ত। তবে শেষপর্যন্ত পুলিশের মধ্যস্থতায় মীমাংসা হয়ে গিয়েছে।’

স্কুল ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন স্কুলে যখন পরীক্ষা চলছিল, তখন ওই ছাত্রী দুষ্টুমি শুরু করে। সেই সময় কর্তব্যরত শিক্ষিকা তাকে দুষ্টুমি করতে বারণ করেন। তাতে সেই পড়ুয়াকে থামানো যায়নি। তারপর শিক্ষিকা ওই ছাত্রীর গালে চড় মারেন বলে অভিযোগ। শিশুটির গালে শিক্ষিকার আঙুলের ছাপ ফুটে ওঠে। বিষয়টি তখন কারও নজরে আসেনি। তবে পরীক্ষা শেষে ওই ছাত্রী বাইরে বেরিয়ে আসার পর সেই আঙুলের ছাপ তার মায়ের নজরে পড়ে। মেয়ের গালে মারের দাগ কেন, স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে তা জানতে চান ওই ছাত্রীর মা। মেয়েকে মারা হয়েছে শুনে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। স্কুলে শোরগোল শুরু হয়। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর বাকি অভিভাবকদের একাংশ সরব হয়। কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও সমস্যা মেটেনি। হইহট্টগোলে স্কুলের পরিবেশই বদলে যায়। অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় আলিপুরদুয়ার জংশন ফাঁড়ির পুলিশ।

এই বিষয়ে  আলিপুরদুয়ার জংশন ফাঁড়ির ওসি সঞ্জীবকুমার বর্মন বলেন, ‘ওই ঘটনায় কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। পরে দুই পক্ষই নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের মধ্যে আলোচনার মধ্য দিয়ে মিটমাট হয়ে গিয়েছে।’

বাকি অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, সাধারণত ছাত্রীকে স্কুলে আনা-নেওয়া করে ওই ছাত্রীর মা। তবে এদিন অবশ্য মারধরের খবর পেয়ে ছাত্রীর বাবাও স্কুলে এসে হাজির হন। অভিভাবকরা স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। তখন পরিস্থিতি জটিল আকার নেয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজেদের ভুল স্বীকার করলেও অভিভাবকরা শান্ত হননি। শিক্ষিকাকে শায়েস্তা করতে তাঁরা পুলিশ ডাকার সিদ্ধান্ত নেন।

এদিকে, এক ছাত্রীকে কড়া শাসন করার প্রেক্ষিতে এত হুলুস্থুলের ঘটনায় প্রবীণরা একটু অবাকই হয়েছেন। বিশিষ্ট নাগরিক পরিমল দে বলেন, ‘পঞ্চাশ-ষাটের দশকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা দিব্যি পড়ুয়াদের শাস্তি দিতেন। তাঁরা তো ছাত্রসমাজের কাছে অভিভাবকতুল্য ছিলেন। তখন পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ উঠত না। তবে এখন সময় বদলেছে। এছাড়া চড় মারার মতো শারীরিক শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সচেতন থাকা উচিত।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *