শামুকতলাঃ স্কুলের দরজায় তালার সঙ্গে ঝুলছে যৌন কার্যে ব্যবহার করা দুটি বস্তু। স্কুলের বারান্দায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নেশার সামগ্রী। শুক্রবার সকালে স্কুল খুলতে এসে এই সব আপত্তিকর জিনিস পড়ে থাকতে দেখে হতবাক স্কুল শিক্ষকরা। ঘটনাটি আলিপুরদুয়ারের যশোডাঙা জুনিয়র বেসিক স্কুলের। এদিনের ঘটনায় ছাত্রছাত্রীদের সামনে মাথা হেঁট হয়ে যায় প্রধান শিক্ষক থেকে শুরু করে সহ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। স্কুল চত্ত্বরে দুষ্কৃতীদের অসামাজিক কার্যকলাপে উদ্বিগ্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে অভিভাবকরা। তাঁরা দ্বারস্থ হয়েছেন পুলিশ প্রশাসনের। কিন্তু কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। তদন্ত শুরু করেছে স্থানীয় থানার পুলিশ।
জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ারের যশোডাঙা জুনিয়র বেসিক স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ১৫৮। শিক্ষক শিক্ষিকার সংখ্যা ৫ জন। প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয় ওই স্কুলে। সীমানা প্রাচীর না থাকায় রাতে দুষ্কৃতীদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে স্কুল চত্বর। তারই প্রমাণ মিলল শুক্রবার সকালে। এদিন সকাল সাতটা নাগাদ স্কুল খুলতে এসে শিক্ষকরা লক্ষ্য করেন স্কুল ঘরের দরজায় থাকা তালার মধ্যে ঝুলছে যৌন কার্যকলাপে ব্যবহৃত দুটি বস্তু। স্কুলের বারান্দা ও স্কুল চত্ত্বরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ ও গাঁজার কল্কে। সমস্ত নোংরা পরিষ্কার করার পর সাড়ে নটা থেকে শুরু হয় ক্লাস। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনা জানাজানি হতে স্কুলে ভিড় জমান অভিভাবকরা। স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে শামুকতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। এই ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছেন অভিভাবকরা।
অভিভাবক চন্দন বণিক বলেন, ‘সমাজের এই অবক্ষয়ের চেহারা দেখে গা গুলিয়ে উঠছে। ভাবা যায় শিক্ষা মন্দিরের এই চেহারা? কোনও সুস্থ মাথার মানুষ এমন অকাজ করতে পারে? চরম শাস্তি হওয়া উচিত।’
স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুমন্ত সিংহ বলেন, ‘এই ঘটনায় আমরা রীতিমত হতবাক। শুক্রবারের এই ঘটনায় স্কুলের গঠন-পাঠন ভীষণভাবে বিঘ্নিত হল। এটা দিনের পর দিন মেনে নেওয়া যায় না। আমরা পুলিশকে গোটা বিষয়টি জানিয়েছি।’
জেলা বিদ্যালয় প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান পরিতোষ বর্মন বলেন, ‘খুবই লজ্জাকর ও উদ্বেগের ঘটনা৷ আমি স্কুল কর্তৃপক্ষকে দ্রুত অভিভাবক সভা ডাকার নির্দেশ দিয়েছি। প্রয়োজনে আইনের সহায়তাও নেওয়া হবে।’