Alipurduar | রাজীবের স্মৃতি ফিরছে মোদির সভায়

Alipurduar | রাজীবের স্মৃতি ফিরছে মোদির সভায়

শিক্ষা
Spread the love


অভিজিৎ ঘোষ, আলিপুরদুয়ার: ১৯৮৭ সালের পর ২০২৫। প্রায় চার দশক পর আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) শহরের প্যারেড গ্রাউন্ডে আসছেন দেশের কোনও প্রধানমন্ত্রী (PM Narendra Modi)। আগেরবার এসেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধি (Rajeev Gandhi)। আর এবার আসছেন নরেন্দ্র মোদি। বর্তমানে এই ময়দানে সাজোসাজো রব অনেককেই মনে করাচ্ছে ৩৮ বছর আগের আরেক জনসভার কথা।

মোদি আসছেন রাজনৈতিক জনসভা ও প্রশাসনিক সভা করার জন্য। আর রাজীব এসেছিলেন নির্বাচনি জনসভায়। রাজ্য বিধানসভা ভোটে আলিপুরদুয়ার আসনের প্রার্থী দেবব্রত চট্টোপাধ্যায়ের হয়ে ভোট প্রচারে এসেছিলেন রাজীব। খোদ প্রধানমন্ত্রী প্যারেড গ্রাউন্ডে জনসভা করলেও ওই আসন জিততে পারেনি কংগ্রেস। তবে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা কেমন হয় সেটা চাক্ষুষ করেছিল আলিপুরদুয়ার।

শহরের সাধারণ মানুষ থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সবার কাছেই রাজীবের স্মৃতি আজও তাজা। কথা হচ্ছিল শহরের প্রবীণ ব্যবসায়ী তারক ঘোষের সঙ্গে। বললেন, ‘ওটা একটা দিন ছিল বটে। প্রচণ্ড ভিড় হয়েছিল। লোক সামলাতে হিমসিম খেয়েছিল পুলিশ।’ প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তথা আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায় বর্তমানে দিল্লিতে থাকেন। বিষয়টি নিয়ে তঁাকে ফোন করা হল। বললেন, ‘ওই জনসভার কথা আমার স্পষ্ট মনে আছে। ওইদিন অবিভক্ত জলপাইগুড়ি জেলায় চারটি জনসভা করেছিলেন রাজীবজি। আলিপুরদুয়ার ছাড়াও কালচিনি, ফালাকাটা ও ময়নাগুড়িতে জনসভা হয়েছিল। আলিপুরদুয়ারে জনসভা করে তিনি কালচিনি আসেন। তখন প্রায় সন্ধ্যা। আদিবাসী নৃত্য দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানানো হয়। নৃত্যশিল্পীদের সঙ্গ দিতে চেয়েছিলেন রাজীবজি। তবে নিরাপত্তারক্ষীরা বাধা দেন।’ আলিপুরদুয়ার শহরের প্রবীণ বাসিন্দারা বলেছেন, ওইদিন শহর প্রায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। ময়দানের উত্তরদিকে যে জায়গায় সভামঞ্চ করা হয়েছিল, সেখানে মোদির জনসভার জন্য হেলিপ্যাড তৈরি হচ্ছে।

শহরের প্রবীণ বাসিন্দা তথা কংগ্রেসের তৎকালীন জেলা সাধারণ সম্পাদক পুলিন চৌধুরী জানালেন, রাজীবের জনসভা সফল করার জন্য অনেকদিন আগে থেকে তাঁদের প্রচার চলছিল। নির্বাচনি প্রচারের মাঝেই ওই প্রচার করা হয়েছিল। এদিন লিচুতলার বাড়িতে পুরোনো কথা বলতে গিয়ে অনেককিছুই মনে করতে পারছিলেন না পুলিন। তবে এইটুকু তাঁর মনে আছে, তিনি মঞ্চে রাজীবের সঙ্গে হাত মেলাতে গেলে নিরাপত্তারক্ষীরা আটকেছিলেন।

পুলিনের স্ত্রী মঙ্গলা অসুস্থ, তবে স্মৃতিশক্তি বেশ। বিছানায় শুয়ে শুয়েই বললেন, ‘নির্বাচনি জনসভা ছাড়াও রাজীব আরেকবার এসেছিলেন আলিপুরদুয়ারে। তখন সঙ্গে ছিলেন সোনিয়া গান্ধি এবং প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি। সেদিন আলিপুরদুয়ার শহর থেকে দমনপুর পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছিল। আমরা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়েছিলাম রাজীবকে দেখতে। তিনি নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। খুব ধীরে ধীরে গাড়ি চালাতে চালাতে সবাইকে হাত নেড়ে অভিবাদন জানিয়েছিলেন।’  জানা গেল, ১৯৮৬ সালে রাজীবের ওই আগমন হয়েছিল। গাড়িতে করে বিভিন্ন জায়গায় ওই বছর যাত্রা করেছিলেন রাজীব। আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন জায়গায় তাঁর যাত্রা হয় সেই সময়।

শহরের প্রবীণ সাহিত্যিক পরিমল দে জানালেন, নিমতি এলাকায় তাঁর গাড়ি থামিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও শহরের ম্যাক উইলিয়াম স্কুলের উলটোদিকে একটি পথসভার আয়োজন করা হয়েছিল কংগ্রেসের তরফে। সেখানে গাড়ি থামিয়ে নেমেছিলেন রাজীব। একই বক্তব্য শহরের আরেক প্রবীণ বাসিন্দা ল্যারি বসুরও।

একদিকে অনেকেই যখন ডুয়ার্সের এই শহরে মোদির সফর নিয়ে চর্চা করছেন, তখন স্মৃতি থেকে উঠে আসছে রাজীবের সফরের বিভিন্ন কথাও।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *