Alipurduar | মোষ পাচারে বড়লোক 

Alipurduar | মোষ পাচারে বড়লোক 

ব্যবসা-বাণিজ্যের /BUSINESS
Spread the love


নিউজ ব্যুরো: মোষপিছু লাভ প্রায় ৫০০ টাকা। তার মানে এক রাতে ১০০টা মোষ সংকোশ পার করাতে পারলে কড়কড়ে হাজার পঞ্চাশেক। তাহলে মাসের অর্ধেক দিন কাজ করলেও লাখ আষ্টেক। এই এত টাকা কিন্তু ঢুকছে একজনেরই পকেটে। পাচারের মোষ আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) জেলার সীমানা পার করিয়ে নিরাপদে অসমে ঢুকিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব তাঁরই।

বিহার, উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) মতো ভিনরাজ্য থেকে সড়কপথে মোষ ঢুকছে আলিপুরদুয়ার জেলায়। তারপর তা অসম-বাংলা সীমানার একাধিক গ্রামের পথ ধরে সংকোশ নদী পেরিয়ে চলে যাচ্ছে অসমে। আলিপুরদুয়ার জেলার কুমারগ্রাম ব্লককে কেন্দ্র করেই মোষ পাচারের এই অবৈধ কারবার চলছে। বারবিশা কিংবা আশপাশের এলাকায় মোষের গাড়ি ঢোকার পর থেকে শুরু করে গ্রামের কাঁচা রাস্তায় হাঁটিয়ে, কিংবা ছোট পণ্যবাহী গাড়িতে চাপিয়ে নৌকাঘাট পর্যন্ত নির্বিঘ্নে নিয়ে যাওয়া, তারপর যন্ত্রচালিত নৌকায় তুলে সংকোশ নদী পার করে অসমে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে রয়েছেন এক ম্যানেজার। এই ব্যক্তি কুমারগ্রাম ব্লকের ভল্কা-বারবিশা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা।

দীর্ঘবছর ধরে তলে তলে ভিনরাজ্যের গোরু, মোষবোঝাই গাড়ি অসম-বাংলা সীমানা দিয়ে অবৈধ উপায়ে পার করিয়ে দেওয়ার এজেন্ট হিসেবেই কাজ করলেও তাঁর এই পেশার কথা কিন্তু পাড়াপ্রতিবেশীরা জানেন না। এলাকায় তাঁর পরিচিতি পোলট্রির ব্যবসায়ী হিসেবে। অসমে মোষ পাচারের অবৈধ ব্যবসার লাইন ঠিক রাখতে ওই ব্যক্তিকে সিন্ডিকেটের কাজকর্ম পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

একজোড়া বা স্থানীয় ভাষায় একহাল মোষ আলিপুরদুয়ার জেলার কুমারগ্রাম ব্লক থেকে সংকোশ নদী পার করে অসমের কোকরাঝাড় জেলার বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দিতে তাঁর চার্জ ২ হাজার ৫০০ টাকা। অর্থাৎ মোষপিছু ১২৫০ টাকা তিনি নেন পাচারকারীদের কাছ থেকে। সেই টাকার ভাগ অবশ্য তাঁকে বিভিন্ন জায়গায় দিতে হয়। সেসব দিয়েথুয়েও মোষ প্রতি ৪৫০-৫০০ টাকা হাতে থাকে তাঁর। তবে এসব থেকে আবার কিছু বাড়তি খরচ হয়। কারণ মোষ পাচারের ‘লাইন ক্লিয়ার’ রাখতে বিশেষ বিশেষ লোককে খুশি রাখতে হয়। তাতে খরচ নেহাত কম নয়।

এই মুহূর্তে মোষ পাচারকারীদের সবচেয়ে পছন্দের রুট হল কুমারগ্রাম ব্লক থেকে অসমের কোকরাঝাড় অবধি। বারবিশা সেলস ট্যাক্স গেট এলাকা থেকে মাটিখুঁড়া পর্যন্ত মোষপিছু রাতের অন্ধকারে গ্রামের পথ ধরে হাঁটিয়ে নিয়ে যেতে খরচ হয় ১০০ টাকা। স্থানীয় মাতব্বরদের সিন্ডিকেট রয়েছে। মোষপিছু ১০০ টাকা না পেলে সিন্ডিকেটের লোকজন মোষ আটকে মাঝরাতে ঝামেলা পাকাবে। নির্দিষ্ট দূরত্বে থাকা এমন ৪টি সিন্ডিকেটের কথা শোনা যাচ্ছে। একেকটি সিন্ডিকেটে কমকরেও ৩০-৪০ জন সদস্য আছেন। তাঁরা নিজেরাই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে এলাকা ভাগ করে নিয়েছেন। একই কারণে মাটিখুঁড়া থেকে ধর্মগোলা পর্যন্ত ১০০ টাকা, সেখান থেকে জাম্পই গেট পর্যন্ত আরও ১০০ টাকা এবং জাম্পই গেট থেকে জোঙ্গামারি ঘাট পর্যন্ত ১০০ টাকা লাইন খরচ দিতে হচ্ছে। মাঝি মোষপিছু নৌকাভাড়া নেন ১৫০ টাকা। সেখান থেকে নৌকার মালিক মোষপিছু ভাগ পান ১০০ টাকা। বাকি ২৫০ টাকা রাস্তার অন্যান্য খরচ হিসবে ধরা থাকে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *