Alipurduar | বোনাস মিলতেই খুশির হাওয়া, নতুন জামা পরে ঠাকুর দেখবেন অসুররা 

Alipurduar | বোনাস মিলতেই খুশির হাওয়া, নতুন জামা পরে ঠাকুর দেখবেন অসুররা 

শিক্ষা
Spread the love


ভাস্কর শর্মা, আলিপুরদুয়ার: একটা সময় ওঁদের দুর্গাপুজো (Durga Puja)-য় অংশগ্রহণ করাই ছিল নিষিদ্ধ। তবে উৎসব তো সবার। উত্তরবঙ্গের পিছিয়ে পড়া জনজাতি অসুর সম্প্রদায়ের লোকজন মূলত প্রাচীন সংস্কারের জেরেই এতদিন শারদোৎসব থেকে দূরে থাকতেন। প্রবীণরা বিশ্বাস করতেন, দেবী দুর্গা তাঁদের পূর্বপুরুষ মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন। তাই পুজোর চারদিন তাঁরা নিজেদের ঘরবন্দি করে রাখতেন। তবে বর্তমান গবেষণা বলছে, পৌরাণিক অসুরের সঙ্গে ওই অসুর সম্প্রদায়ের কোনও যোগ নেই। আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) জনজাতি গবেষক প্রমোদনাথ সেকথা স্পষ্ট করেছেন। তাই বর্তমান শিক্ষিত প্রজন্ম মহানন্দে দুর্গাপুজোতে শামিল হচ্ছে। বাগান কর্তৃপক্ষের তরফে ২০ শতাংশ হারে বোনাস পেয়ে তাঁরা পুজোর জামাকাপড় কিনেছেন। আবার তাঁদের মধ্যে দু’-একজন প্রবীণ দাসাই পরবেও মেতে ওঠেন। আলিপুরদুয়ারের মাঝেরডাবরি সহ জলপাইগুড়ি জেলার কয়েকটি চা বাগানে এখন অসুর সম্প্রদায়ের বসবাস। অসুরদের বর্তমান প্রজন্ম বিশ্বাস করে, দুর্গাপুজো একটি সামাজিক উৎসবও। তাই আনন্দের রোশনাইয়ে তাঁরা মেতে ওঠেন। আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া মাঝেরডাবরি চা বাগানের ষাটোর্ধ্ব বিফাই অসুর একসময় পুজোর চারদিন ঘরবন্দি থাকতেন। তবে এখন শুধু ঘর থেকে বেরোন তাই নয়, বরং প্রতিমা দেখতে মণ্ডপেও যান।

মাঝেরডাবরি ছাড়াও জলপাইগুড়ির নাগরাকাটা, বানারহাট, মেটেলি সহ বেশ কিছু এলাকায় অসুর সম্প্রদায় বসবাস করে। মূলত চা বাগানেই এই জনজাতির মানুষ কাজ করেন। তবে টোটোদের মতো এঁদের জনসংখ্যা অত্যন্ত কম। একসময় সম্প্রদায়ের অনেকের বিশ্বাস ছিল, আর্যরা কখনও অনার্যদের দেবতা হুদুড় দুর্গার সঙ্গে পেরে উঠছিলেন না। তাই দেবীরূপী দুর্গাকে সামনে এগিয়ে দিয়ে মহিষাসুরের সঙ্গে প্রতারণা করেছিলেন। সেই থেকেই তাঁরা পুজোর সময় শোকের উৎসব দাসাই পরব পালন করতেন। পুজোয় শামিল না হওয়ার রীতি বহুদিন ধরে রেখেছিলেন সেঞ্চেরোয়া অসুরও। এবার তিনি বললেন, ‘আগে পুজোর চারদিন ঘরে থাকতাম। কিন্তু এখন সময় পালটেছে। এলাকার অনেকেই এখন শিক্ষিত। তাই পুরোনো সংস্কার ভুলে আমরা দুর্গাপুজোয় শামিল হই।’

তবে জলপাইগুড়ি জেলার যেসব বাগানে এখনও বোনাস হয়নি সেইসব অঞ্চলের অসুর সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যে এখন কিছুটা বিষাদের সুর। তবে তাঁদের আশা, বোনাস পেলেই সকলে পুজোর আনন্দে শামিল হবেন। পুজোর আনন্দে মেতে সুরাজ অসুর বলেন, ‘বাবা বাগানের বোনাস পাওয়ার পরেই পুজোর জামাকাপড় কিনে দিয়েছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *