অভিজিৎ ঘোষ, সোনাপুর: বিগত বছরে যে ব্যবসা হয়েছে এবছর সেরকম ব্যবসা নাকি হয়নি। শেষ দিনে এসে এমনই হিসেবনিকেশ পাচ্ছে আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের (Alipurduar) বাবুরহাট ঝুলনমেলা কমিটি। আর ব্যবসা খারাপ হওয়ার পিছনে দায়ী করা হচ্ছে বৃষ্টিকে। মঙ্গলবার ১৫ দিনের মেলা শেষ হয়। এদিন দুপুরে বৃষ্টি দেখে ব্যবসায়ীদের চিন্তা যেন আরও বেড়েছিল। তবে সন্ধ্যা থেকে লোকের ভিড়ে একটু আশার আলো দেখেন ব্যবসায়ীরা। তবে সামগ্রিক ব্যবসায় অনেকেই হতাশ। এদিন ঝুলনমেলা কমিটির সভাপতি অসীম ঘোষ বলছিলেন, ‘এবছর ব্যবসা মোটামুটি হয়েছে। মেলার বেশিরভাগ দিন বৃষ্টি থাকায় মেলায় সেরকম লোক হয়নি। বৃষ্টি না হলে ব্যবসা ভালো হত। তবে একেবারে যে খারাপ ব্যবসা হয়েছে সেটা বলা যাবে না।’
প্রতি বছর ঝুলনমেলা উপলক্ষ্যে বাবুরহাট এলাকায় মেলা বসে। জেলার সব থেকে বড় ঝুলনমেলা হয় এখানেই। এবছরও মেলায় প্রায় ৪০০টি দোকান বসেছিল মেলার উদ্যোক্তারাও জানিয়েছেন। তবে মেলার অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে পুতুলনাচ আসবে বলা হলেও পুতুলনাচ আসেনি। সেটা অনেককেই হতাশ করেছে। কয়েকদিন মেলায় খাওয়াদাওয়া করতে দেখা গিয়েছে জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের। এমনকি কোচবিহার জেলা থেকেও অনেকে এসেছিলেন। মেলায় দোকান নিয়ে আসা ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন হাতেগোনা কয়েকটা দিনই নাকি ব্যবসা ভালো হয়েছে। মেলায় ফাস্ট ফুডের দোকান নিয়ে আসা কোচবিহারের ব্যবসায়ী শিবম দে’র কথায়, ‘১৫ দিনের মেলায় ব্যবসা হয়েছে তিন থেকে চারদিন। রাখিপূর্ণিমার দিনরাত দেড়টা পর্যন্ত ঠাসা ভিড় ছিল। ওই রকম ভিড় কয়েকদিন হলেই পুষিয়ে যেত।’ স্বাধীনতা দিবসের দিনও মেলায় ভালো ভিড় হয়েছিল।
অন্যদিকে, ফালাকাটা থেকে মাটির সামগ্রী বিক্রি করতে আসা বিমল পাল বলছেন, ‘মেলায় আসার পর থেকেই দেখছি বৃষ্টি। বৃষ্টি হলে তো কয়েকজন দোকানও খোলেনি। তিন বছর থেকে মেলায় আসছি। এবছর ব্যবসা সব থেকে খারাপ।’
এবছর মেলা যখন আশানিরাশায় শেষ হল তখন আগামী বছর এই ঝুলনমেলার ভবিষ্যৎ নিয়েও চিন্তা শুরু হয়েছে মেলার উদ্যোক্তাদের মধ্যে। বাবুরহাটে ঝুলনমেলা যে জায়গায় হয় সেটার বেশিরভাগ সীমানা পড়েছে সলসলাবাড়ি ফালাকাটা মহাসড়কে। ওই সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে। তবে মেলার জায়গায় এখনও কাজ শুরু হয়নি। মেলা শেষ হলেই সেখানে কাজ শুরু হবে। এখন রাস্তা অনেকটা নীচুতে থাকলেও মহাসড়ক হলে রাস্তা উঁচু হবে। আগামী বছর সেজন্যই ওই জায়গায় যে আর মেলা হবে না সেটা নিশ্চিত।
তাহলে মেলা বসবে কোথায়? এই প্রশ্ন করলে মেলার উদ্যোক্তারাও সঠিক উত্তর দিতে পারছেন না। বাবুরহাট সংলগ্ন কোনও ব্যক্তিগত জমি বা আশপাশের কোনও মাঠে মেলা বসতে পারে বলে প্রাথমিক আলোচনা করা হয়েছে।