আয়ুষ্মান চক্রবর্তী, আলিপুরদুয়ার: হয়তো আর খুব বেশিদিন দেরি নেই যখন বইগ্রাম পানিঝোরার (Panijhora) অমৃতা, প্রমীলা, রোহন, সুমন, কুশলদের নাম আন্তর্জাতিক ফুটবলার হিসেবে উচ্চারিত হবে। কারণ খুব তাড়তাড়িই সেখানে গড়ে উঠতে চলছে আন্তর্জাতিক মানের ফুটবল অ্যাকাডেমি, যেখানে প্রশিক্ষণ দিতে আসার কথা রয়েছে স্পেন, ইংল্যান্ডের কোচদেরও। এখানকার স্থানীয় প্রতিভাদের জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে এএফএ বইগ্রাম ফুটবল অ্যাকাডেমি, উদ্যোগে আপনকথা এবং আন্ধেরি ফুটবল অ্যাকাডেমি। ইতিমধ্যে দু’তরফের মধ্যে চুক্তিও হয়ে গিয়েছে। সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ওই ফুটবল অ্যাকাডেমি সূচনার সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই সেখানে সাজোসাজো রব।
বইগ্রাম পানিঝোরার আত্মপ্রকাশের পর প্রায় এক বছর হতে চলল। ইতিমধ্যেই এই জায়গা রাজ্য এবং দেশের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এবার এই জায়গার মুকুটে যুক্ত হতে চলেছে নতুন পালক। কিছুদিন আগে এখানে একটি ১৩ জনের মেয়েদের এবং ১৭ জনের ছেলেদের ফুটবল দল গড়ে উঠেছে। যাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন স্থানীয় দুজন।
১৮ জুন জেলার এক আধিকারিকের মাধ্যমে বইগ্রামের বিষয়ে খবর পেয়ে সেখানে পরিদর্শনে আসেন আন্তর্জাতিক ফুটবল কোচ মলয় সেনগুপ্ত। সেখানে তিনি সকল ফুটবলারের সঙ্গে কথা বলে খুবই খুশি হন। এরপরই ওখানে অ্যাকাডেমি তৈরির প্রস্তাব দেন তিনি। জানা গিয়েছে, এই অ্যাকাডেমিতে মুম্বই তো বটেই এমনকি বিদেশ থেকেও কোচরা এসে প্রশিক্ষণ দেবেন। মলয়ের কথায়, ‘এখানকার পরিবেশ খুব ভালো লেগেছে, ছেলেমেয়েদের মধ্যে ফুটবল নিয়ে আগ্রহ রয়েছে। এখানকার উন্নতিতে পার্থবাবুরা যেরকম কাজ করছে সেটা সত্যিই প্রশাংসাযোগ্য। এইসব অঞ্চলে অনেক প্রতিভা রয়েছে কিন্তু সাপোর্ট নেই। আমার চেষ্টা থাকবে সেই সাপোর্ট দিয়ে এখানকার ছেলেমেয়েদের সুযোগ তৈরি করে দেওয়া। দু-তিন বছরের মধ্যে এখান থেকে একঝাঁক ভালো ফুটবলার তৈরি করা আমার লক্ষ্য।’ অন্যদিকে, আপনকথার সম্পাদক পার্থ সাহা বলেন, ‘যাদের মধ্যে পরিবেশ ও নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যগত কারণেই খেলা রয়েছে, তাদের সেই প্রতিভার চর্চা ও বিকাশের লক্ষ্যে এই ফুটবল অ্যাকাডেমির কথা ভাবা হয়েছে। আশাকরি আলিপুরদুয়ার জেলার প্রত্যন্ত এলাকার জন্য এই পদক্ষেপ নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করবে।’ অ্যাকাডেমি তৈরি হওয়ায় অত্যন্ত খুশি বইগ্রামের ফুটবল শিক্ষার্থী সুমন টোপ্পো, সুনীল রাভা, হীরক মঙ্গার, রোহন ওরাওঁ, কুশল ওরাওঁরা জানায়, ওরা অনেকদিন ধরেই ফুটবল খেলছে। কিন্তু মলয় ওখানে গিয়ে সবার সঙ্গে কথা বলার পর থেকেই সকলের মধ্যে আলাদা উদ্দীপনা দেখা গিয়েছে।