প্রণব সূত্রধর, আলিপুরদুয়ার: পুজোর আগে জামাকাপড় কিনতে বা হাতখরচের জন্য টাকা লাগবে। তাই অচেনা নম্বর থেকে আসা ফোনের উপর ভরসা করেই তামিলনাডু যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল কুমারগ্রামদুয়ারের একাদশ শ্রেণির তিন ছাত্রী। নিউ আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) স্টেশনে তাদের উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়াতে দেখে জিআরপি-র কর্মীদের সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁরা জানতে পারেন, তিন কিশোরীর বিবেক এক্সপ্রেস ধরে তামিলনাডু যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। এ ব্যাপারে ফোনে তাদের নির্দেশ দিচ্ছিল এক ব্যক্তি। নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশন থেকে তাদের ট্রেন ধরতে বলেছিল ওই ব্যক্তি। গোটা ঘটনাকে নারীপাচারের নতুন কৌশল বলেই মনে করছেন রেল পুলিশের কর্তারা।
নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশনের জিআরপি ওসি তরুণকান্তি ঘোষ বলেন, ‘ওই তিনজন নাবালিকা নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশন থেকে তামিলনাডু যাওয়া পরিকল্পনা করেছিল। সন্দেহ হতেই তাদের উদ্ধার করে সিডব্লিউসি-র হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।’
এদিন সিডব্লিউসি-র কর্তারা তিনজনকে কাউন্সেলিং করানোর সময় তাদের কথা শুনে অবাক হয়ে যান। তিনজন জানায়, একটি ফোন নম্বর থেকে নির্দেশ পেয়েই তামিলনাডু যাচ্ছিল তারা। মোটা বেতনের ভালো কাজের প্রলোভন দেখানো হয় তাদের। পুজোর আগে জামাকাপড় কেনা সহ হাত খরচের টাকা লাগবে। তাই তিন বান্ধবী ভিনরাজ্যে কাজে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এলাকারই এক পরিচিতের কাছ থেকে সেখানকার একজনের ফোন নম্বর জোগাড় হয়। তারপর যাওয়ার দিনক্ষণ ঠিক হয়ে যায়।
নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশনে তখন বিবেক এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে। ট্রেন কখন ছাড়বে, কত নম্বর প্লাটফর্ম থেকে ট্রেনে চড়তে হবে- তিন ছাত্রীর মোবাইল ফোনে একের পর এক নির্দেশ আসছিল। সম্প্রতি এনজেপি হয়ে নারীপাচারের ঘটনায় বাড়তি সতর্কতা জারি রয়েছে সব বড় স্টেশন। এনজেপি থেকে উদ্ধার হওয়া মহিলাদের মধ্যে কয়েকজন কালচিনি ব্লকের ছিলেন। তাই নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশন ও আলিপুরদুয়ার জংশন স্টেশনে জিআরপি এবং আরপিএফ কর্মীরা সতর্ক ছিলেন। তিন নাবালিকার হাবভাব লক্ষ করে তাঁরা তাদের আটক করেন।
সিডব্লিউসির চেয়ারম্যান অসীম বসু বলেন, ‘ওই তিন নাবালিকাকে কাউন্সেলিংয়ের পর হোমে রাখা হয়েছে। তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সরকার থেকে আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।’