Alipurduar | পাঁচকোলগুড়ি প্রমোদিনী হাইস্কুলে শাস্তিদানের জল গড়াল বহুদূর

Alipurduar | পাঁচকোলগুড়ি প্রমোদিনী হাইস্কুলে শাস্তিদানের জল গড়াল বহুদূর

আন্তর্জাতিক INTERNATIONAL
Spread the love


অভিজিৎ ঘোষ, সোনাপুর: বুধবার আলিপুরদুয়ার-১ (Alipurduar) ব্লকের পাঁচকোলগুড়ি প্রমোদিনী হাইস্কুলে (Panchkolguri Promodini Excessive Faculty) অষ্টম শ্রেণির এক পড়ুয়াকে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। সেদিন বিকেলেই দলবল নিয়ে এসে স্কুলে একপ্রস্থ হাঙ্গামা করেছে সেই পড়ুয়া। স্কুলের টিআইসি, শিক্ষকরা ভেবেছিলেন, হয়তো বিষয়টি সেখানেই শেষ হয়ে গিয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার তার জল গড়াল অনেকদূর। এদিন দফায় দফায় স্কুলে অশান্তি বাধে। কখনও সেই পড়ুয়ার দিদা এসে হট্টগোল করেন। কখনও সেই ছেলেটিই আবার সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে এসে ঝামেলা পাকায়। কখনও স্কুলের প্রাক্তনীরা এসে পালটা অশান্তি করেন। ঘটনার খবর করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়তে হয় সাংবাদিককেও। তাঁকে হেনস্তা করা হয় বলে অভিযোগ।

এই ঘটনায় স্কুলের ভূমিকা প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ছে। স্কুলের নিরাপত্তা নিয়েও অনেক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এত কিছুর পরেও স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, সমস্যা মিটে গিয়েছে। স্কুলের টিচার ইনচার্জ দেবকুমার দাস বলেন, ‘স্কুলের যে সমস্যা ছিল তা মিটিয়ে নেওয়া হয়েছে। আপাতত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’ তবে তাঁর এই আশ্বাসের পরেও স্কুলের পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত অনেক অভিভাবক ও অভিভাবিকা। এমনকি উদ্বিগ্ন প্রাক্তনীরাও।

যে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াকে শাস্তিদান নিয়ে এত কাণ্ড, তার সহপাঠী ও স্কুলের শিক্ষকরা বলছেন, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় সহপাঠীদের সঙ্গে বিবাদ-দুর্ব্যবহারের নানা অভিযোগ উঠেছে। বুধবারও তেমন অভিযোগ উঠলে তাকে স্কুলের এক শিক্ষক শাস্তি দেন। তারপর স্কুলের একাদশ শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রের সঙ্গে ওই অষ্টম শ্রেণির ছাত্রের স্কুলের বাইরে বিবাদ হয় বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার ওই ছাত্রের দিদা এসে স্কুলে হইচই শুরু করে দেন। ‘কেন নাতিকে মারা হয়েছে?’ সেই প্রশ্ন তোলেন। এদিন বৃদ্ধা বলেন, ‘আমাকে তো কিছু জানানো হয়নি। খারাপ কাজ করলে স্কুল আমাকে জানাতে পারত।’ তার কিছুক্ষণ পর ওই ছাত্র আবার তার বন্ধু ও প্রতিবেশী কয়েকজন তরুণকে সঙ্গে নিয়ে স্কুলে আসে। শিক্ষকদের ঘেরাও করার পরিকল্পনা করে।

আবার একাদশ শ্রেণির যে ছাত্রদের সঙ্গে তার বিবাদ ছিল, তারাও তক্কে তক্কে ছিল। তারাও দলবল নিয়ে এসে স্কুলের বাইরে জমায়েত করে। দু’পক্ষেরই একাধিক লোক নিজেদের সেই স্কুলের প্রাক্তনী বলে দাবি করেছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন আবার ভরদুপুরেই বেসামাল অবস্থায় ছিলেন। বিকেল ৪টে নাগাদ দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বাধে। কয়েকজন শিক্ষক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। সেই সময় খবর সংগ্রহ করতে গেলে উত্তরবঙ্গ সংবাদের প্রতিনিধিকে কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

ঘটনা নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ কিছু বলতে না চাইলেও অভিভাবক-অভিভাবিকা থেকে শুরু করে স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক ও পড়ুয়াদের মধ্যে নিন্দার ঝড় উঠেছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ কেন সমস্যা মেটাতে পুলিশের দ্বারস্থ হল না, সেই প্রশ্নও উঠছে। স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক সুদর্শন চক্রবর্তী বলেন, ‘এই রকম ঘটনা তো স্কুলের পক্ষে লজ্জাজনক। স্কুলের পরিবেশ এতে নষ্ট হয়। স্কুলে শিক্ষকরা ছাত্রদের শাসন করতেই পারেন। তাঁরাই তাদের মানুষ করবেন। তা বলে কি ছাত্ররা পালটা ঝামেলা করবে? আবার প্রাক্তনীরা তাতে নাক গলাবে? এটা ঠিক নয়।’

একই সুরে সমালোচনা করেছেন স্কুলের প্রাক্তনীদের একাংশ। ওই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র বর্তমানে সরকারি কর্মী অভিজিৎ সাহার কথায়, ‘স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ঘটনার নিন্দা করছি। স্কুল ও স্কুলের শিক্ষকদের আমরা সম্মান করে আসছি। সেটা কেউ নষ্ট করবে, এটা মেনে নেব না।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *