Alipurduar | জুতোও সুরক্ষিত নয় জেলা হাসপাতালে

Alipurduar | জুতোও সুরক্ষিত নয় জেলা হাসপাতালে

খেলাধুলা/SPORTS
Spread the love


আলিপুরদুয়ার: সকাল ১১টা। আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের বাইরে ভিড় জমেছে। মনে করুন, আপনার নিকট আত্মীয়ের সদ্যোজাত সন্তানকে দেখতে এসেছেন। ইমার্জেন্সি বিভাগের পাশ দিয়ে সোজা চলে গিয়ে হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের নতুন বিল্ডিংয়ের সামনে এসে দেখলেন, দরজার বাইরে বড় করে লেখা, ‘ভেতরে ঢোকার আগে জুতো খুলুন।’ আপনি ভাবলেন, নিয়ম তো মানতেই হবে। সাধের জুতোজোড়া খুলে রেখে সোজা ভেতরে ঢুকে পড়লেন। কিন্তু যখন বেরিয়ে এলেন, দেখলেন সেই জুতোজোড়া আর নেই। প্রথমে ভাবলেন, হয়তো অন্যদিকে সরিয়ে রাখা হয়েছে। আশপাশে তাকালেন, কিন্তু না। একটু দূরে বসে থাকা এক গার্ডকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘দাদা, আমার জুতোটা দেখেছেন?’ গার্ডের ঠান্ডা জবাব এল, ‘এখানে প্রতিদিনই জুতো চুরি হয়। ভালো জুতো পরে আসবেন, আর ফিরে যাবেন খালি পায়ে।’

তাহলে আপনি এখন কী করবেন? খালি পায়ে ফিরবেন, না অন্য কারও জুতো চুরি করে চলে যাবেন?

প্রতিদিন এমনই অসহায় পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন অসংখ্য রোগীর আত্মীয়স্বজন। এখানে এসে এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে অনেকেরই। কেউ খালি পায়ে ফিরে যাচ্ছেন, কেউ অন্যের জুতো পরে চলে যাচ্ছেন। শালকুমারহাটের মিনতি রায় এমন ভোগান্তির সাক্ষী। বললেন, মেয়েকে ভর্তি করাতে এসেছিলাম। তাকে বেডে রেখে বাইরে বেরিয়ে দেখি, আমার জুতো নেই। আশপাশে অনেক খুঁজেও পাইনি। শেষে বাধ্য হয়ে নতুন একজোড়া কম দামের জুতো কিনে নিয়েছি। বাড়ি তো ফিরতে হবে।’

জেলা হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে দেখা গেল রোগীর আত্মীয়রা নিজের নিজের জুতো নিয়ে চিন্তিত। দুজন নিরাপত্তারক্ষী জানালেন, এখানে রোজই জুতো হারানোর ঘটনা ঘটছে। অনেকেই নিজের ভালো জুতো হারিয়ে অন্যের খারাপ জুতো নিয়ে চলে যাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার বাধ্য হয়ে খালি পায়েই ফিরছেন। পুরুষদের ক্ষেত্রেও ঘটছে এমন ঘটনা। যদিও সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। কেউ কেউ আবার এই পরিস্থিতি সামাল দিতে একজনকে জুতো পাহারা দিতে রেখে ভেতরে ঢুকছেন।

প্রসূতি বিভাগের এই নতুন ভবনটি তৈরি হয়েছে মাত্র তিন বছর আগে। এখানে রয়েছে গাইনি অপারেশন থিয়েটার, মেটারনিটি ওয়ার্ড, স্পেশাল নিউবর্ন কেয়ার ইউনিট এবং হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট। প্রতিদিন কয়েকশো মানুষ এখানে আসেন। তবে এত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিভাগের বাইরে কোনও সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। ফলে কে চুরি করছে বা কীভাবে জুতো চুরি হচ্ছে, তা বোঝা কঠিন।

জেলা হাসপাতালের সুপার পরিতোষ মণ্ডল এবিষয়ে বলেন, ‘এসব কথা শুনেছি। তবে এই জুতো চুরি আটকানোর জন্য খুব একটা কিছু করার নেই।’

এমন পরিস্থিতিতে রোগীর স্বজনদেরই বাড়তি সচেতন হতে হচ্ছে। কেউ কেউ কমদামি জুতো পরে আসার পরামর্শ দিচ্ছেন। আবার কেউ বলছেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *