শামুকতলা: ১৩ বছরের এক কিশোরীকে ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় ধর্ষণের অভিযোগ উঠল প্রতিবেশী এক তরুণের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে শামুকতলা থানা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। যদিও ভয়ে ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে ওই নাবালিকা এতদিন কাউকে কিছু জানায়নি। অবশেষে মঙ্গলবার মায়ের কাছে কাঁদতে কাঁদতে সে সব সত্যি কথা জানায়। নাবালিকা মাকে জানায়, ঘটনার রাতে ওই তরুণ ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে। সে ভয় পেয়ে আলো জ্বালালে অভিযুক্ত তার মুখে চাপা দিয়ে কাউকে কিছু না বলার জন্য শাসিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। কিশোরীর বাবা, মাও একই ঘরে ছিলেন। কিন্তু আকারে বড় হওয়ায় ঘরটি বেড়া দিয়ে দুই ভাগে বিভক্ত। এক অংশে কিশোরী একা ছিল। মঙ্গলবার রাতে শামুকতলা থানার ভাটিবাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে কিশোরীর পরিবার লিখিত অভিযোগ জানায়। পুলিশ বুধবার সকালে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। ১৯ বছরের ধৃত তরুণ পেশায় টোটোচালক। ফাঁড়ির ওসি দ্বীপায়ন সরকার বলেন, ‘বুধবার সকালে অভিযুক্ত তরুণকে গ্রেপ্তার করে আদালতে তোলা হয়। বিচারক তার ১৪ দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছি।’
ওই কিশোরী বর্তমানে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীটি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। এখন জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির মাধ্যমে তার কাউন্সেলিং করা হচ্ছে। নাবালিকার বাবার কথায়, ‘আমাদের ঘরটা বড়। ঘরের একটা অংশে ছোট চৌকিতে মেয়ে ঘুমোয়। আমরা ঘরেই অন্য পাশে ছিলাম। রাত দুটো নাগাদ প্রতিবেশী তরুণটি জানলা খুলে ঘরের ভিতরে এসে আমার মেয়েকে ধর্ষণ করে। মেয়ে কোনওমতে আলো জ্বালাতেই অভিযুক্ত তাকে কাউকে কিছু না বলার জন্য ভয় দেখিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। আমরা স্বামী-স্ত্রী কিছুই টের পাইনি। এই ঘটনা আমরা মেনে নিতে পারছি না। অভিযুক্ত তরুণের শাস্তি চাই।’ শামুকতলা থানার ওসি বিশ্বজিৎ দে জানিয়েছেন, ‘মেয়েটির চিকিৎসা সহ মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে তার কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।’ অন্যদিকে ধৃত তরুণের বাবাও ছেলের এমন কাণ্ডে রীতিমতো ক্ষুব্ধ।
কিশোরীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়ে দু’দিন ধরে স্কুলে যায়নি। খাওয়াদাওয়াও করছিল না, এমনকী কারোও সঙ্গে কথাও বলছিল না। চিন্তিত হয়ে পরিবারের সদস্যরা জিজ্ঞেস করলেও কোনও উত্তর দেয়নি। অবশেষে মঙ্গলবার সে সব কিছু জানায়। পেশায় কৃষক কিশোরীর বাবা এবং মা কী করবেন তা বুঝে উঠতে পারছিলেন না। এরপরই কিশোরীর দাদাকে খবর দেওয়া হয়। তিনি বাইরে শ্রমিকের কাজ করেন। মেয়েটির দাদার কথায়, ‘আমার বোনের ওপর যে এমন অত্যাচার চালিয়েছে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’