Alipurduar | কৃষ্ণনগরের আম ঢুকেছে শহরে! কেন?

Alipurduar | কৃষ্ণনগরের আম ঢুকেছে শহরে! কেন?

শিক্ষা
Spread the love


আলিপুরদুয়ার: আলিপুরদুয়ারে এখন সকাল মানেই ফলের ঝাঁপির সামনে দাঁড়িয়ে চলে স্বাদের সন্ধান। হিমসাগর, ল্যাংড়া প্রতিটি আম যেন বয়ে আনছে রসনার সঙ্গে আবেগের এক অদৃশ্য যোগসূত্র। আর সেই সম্পর্কেই আবার নতুন করে শুরু হয়েছে এক মিষ্টি ঋতুর গল্প।

ঘুমকাতুরে বাঙালি খাদ্যরসিকও বটে। সকালে ঘুম থেকে উঠে আলিপুরদুয়ার বড়বাজারে তারা ভিড় জমাচ্ছেন। ফলের দোকানগুলোর সামনেই মানুষের জটলা বেশি। কারও হাতে দু’কেজি হিমসাগর, কেউ আবার পাকা ল্যাংড়া দেখে দরকষাকষি করছেন। গ্রীষ্মের ভোরবেলার একটাই গন্ধ, পাকা আমের। দক্ষিণ ভারতের মাদ্রাজ আমের দাপট যেন কিছুটা থমকে, এবার বাজারে ফিরে এসেছে বহু প্রতীক্ষিত কৃষ্ণনগরের হিমসাগর ও ল্যাংড়া।

ফল বিক্রেতা চিরঞ্জিৎ রায় জানালেন, ‘এই সপ্তাহে কৃষ্ণনগর থেকে ভালো মানের হিমসাগর এসেছে। কৃষ্ণনগরের ল্যাংড়াও ঢুকেছে বাজারে। দাম একটু বেশি, তবে চাহিদা প্রচুর। লোকজন তো বাঙালির ঘরোয়া আমের স্বাদই খোঁজেন।’

বড়বাজারে গিয়ে দেখা গেল, হিমসাগর কেজি প্রতি দাম ৫০ থেকে ৭০ টাকা। ল্যাংড়ার দাম তুলনামূলক বেশি। ১১০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। মাদ্রাজ আম এখনও বাজারে আছে, তবে ক্রেতাদের মন পড়ে আছে হিমসাগর-ল্যাংড়ার দিকেই।

বিকাশ ঘোষ নামে অপর ফল বিক্রেতা বলেন, ‘ক্রেতা এসে মালদার আম না পেয়ে কৃষ্ণনগরের ল্যাংড়ার খোঁজ করেন। যদিও হতাশ হয়েই ফিরতে হচ্ছে তাঁদের। জুনের শুরুতে ঢুকবে মালদা ও কৃষ্ণনগরের আম।’

কিন্তু কেন শুধু মালদা বা কৃষ্ণনগরের আম? এই প্রশ্ন করতেই ক্রেতাদের মুখে হাসি দেখা গেল। স্কুল শিক্ষিকা অনন্যা সাহা জানালেন, মালদা বা কৃষ্ণনগরের আম মিষ্টি। গঠনেও আলাদা। তিনি বলেন, ‘বছরভর তো আম মেলে না। এই সময়টাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। হিমসাগর আর ল্যাংড়া ছাড়া আমাদের বাড়িতে আম খাওয়াই হয় না।’

যদিও বাজার ঘুরে দেখা গেল, শুধু মালদা বা কৃষ্ণনগরের আম নয়। ক্রেতারা বিভিন্ন ধরনের আমের খোঁজ করছেন। কেউ চাইছেন চৌসা, আবার কেউ খোঁজ করছেন দশেরি কিংবা ফজলির। কারণ সিজন বাড়লেই আসবে আরও নানারকম আম ফজলি, লক্ষণভোগ, চৌসা, দশেরি ইত্যাদি। কলেজ ছাত্র দীপঙ্কর দত্তের চাহিদা ফজলির। তিনি বলেন, ‘আমি ফজলির জন্য অপেক্ষা করছি। বাজারে এলে, প্রথম দিনই কিনে ফেলব।’

বাজারের পুরোনো দোকানিদের মতে, এবছর কৃষ্ণনগরের আম কিছুটা দেরিতে এলেও স্বাদে ভালো। চাহিদা বেশি থাকায় আগেভাগেই প্রচুর স্টক রাখতে হচ্ছে। গত দু’বছরে বৃষ্টির কারণে উৎপাদনের ওপর প্রভাব পড়েছিল। তবে এবারে কৃষ্ণনগরের ফলন ভালো। জুনে মালদা আর উত্তরপ্রদেশ থেকে আম এলে বাজার আরও জমে উঠবে বলেই তাঁদের মত।

আলিপুরদুয়ারের এই সময়টা যেন শুধুই আমের। শুধু ফল কেনাবেচাই নয়, ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে জমে ওঠে গল্প, স্বাদের আলোচনা, পুরোনো দিনের স্মৃতি। স্মৃতির পাতায় এক বৃদ্ধ চলে গেলেন তাঁর ছোটবেলায়। বললেন, ‘আমার ছেলেবেলায় এই বাজারেই প্রথম হিমসাগর খেয়েছি, বাবার হাত ধরে।’ আবার কোথাও ছোট ছেলে মায়ের হাত ধরে বায়না করছে, ‘ওই হলুদ আমটা দাও’।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *