ভাস্কর শর্মা, ফালাকাটা: ‘সুরসম্রাট’ কিশোরকুমার (Kishore Kumar)। সোমবার তাঁর জন্মদিন। গোটা দেশেই কোনও না কোনও প্রান্তে তাঁকে নিয়ে অনুষ্ঠান হচ্ছে। কিশোরপ্রেমীদের মধ্যে তাঁকে নিয়ে উন্মাদনাও কম নয়। তবে কিশোরকে নিয়ে একটু আলাদা কৃতিত্বের দাবি রাখে আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) ফালাকাটার (Falakata) প্রবাল সাহা রায়। কারণ, তাঁর ধ্যান ও জ্ঞান সবকিছুই কিশোরকে ঘিরে। রোজ দুবেলা তাঁকে নিয়মিত পুজো দেন প্রবাল। মিউজিক্যাল রুমে করেন কিশোরের আরাধনা। তাতে আবার বিভিন্ন সময় কিশোরকণ্ঠিরা এসে যোগ দেন।
ফালাকাটা দেশবন্ধুপাড়া থানা রোডের বাসিন্দা প্রবাল। এলাকায় অবশ্য তিনি কিশোরপ্রেমী বাপি নামেই পরিচিত। বাপির বাড়িতে রয়েছে একটি মিউজিক্যাল রুম। যেখানে দিনরাত চলে কিশোর আরাধনা। তাঁর ঘরেও আছে কিশোরের ছবি। ঘুম থেকে উঠে তাঁকে প্রণাম করে দিন শুরু করেন তিনি। কিছুক্ষণ পরেই চলে যান মিউজিক্যাল রুমে। সেখানেই আছে সুদৃশ্য বড় আকারের কিশোরের ছবি। সেখানে ধূপধুনো, ফুল দিয়ে করা হয় আরতি।
জানা গিয়েছে, রোজ দুবেলা পুজো দেন তিনি। সন্ধ্যার পর প্রতিদিন কিশোরের গানে চলে রেওয়াজ। সেখানে মাঝেমধ্যেই মুম্বই, কলকাতা, শিলিগুড়ি থেকে আসেন শিল্পীরা।
বাপির কথায়, ‘আশির দশক থেকেই গুরুদেব কিশোরের প্রতি আমার ভালোবাসা, প্রেম, শ্রদ্ধা জন্মায়। তখন থেকেই কিশোরের ছবি পকেটে রাখি। আমি চেষ্টা করি এখনও প্রতিদিন তাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে দিন শুরু করার। তবে আমার একটাই লক্ষ্য আগামী প্রজন্ম যাতে আরও কিশোরকে জানে, তাঁর গানকে পাথেয় করে রাখে।’
জানা গিয়েছে, বাপি যখন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী তখন থেকেই কিশোরের গান তাঁকে টানত। এমনকি তিনি যখন রোজগার শুরু করেন তখন প্রথমে চলে যান মুম্বই। সেখানে কিশোরকুমারের বাড়ি গৌরীকুঞ্জে গিয়ে মাথা ঠেকান। এমনকি বাড়ি থেকে একটু মাটিও সঙ্গে করে নিয়ে আসেন।
পরবর্তীতে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তৈরি করেন একটি মিউজক্যাল গ্রুপ। এখনও এই গ্রুপের পক্ষ থেকে প্রতি বছর কিশোরকুমারকে শ্রদ্ধা জানিয়ে নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে তাঁর আক্ষেপ, ‘গুরুদেবকে স্বচক্ষে দেখার অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাঁকে না দেখার আক্ষেপ সারা জীবন থেকে যাবে।’