শামুকতলা: এক কিশোরীকে ভিনরাজ্যে পাচার করে দেওয়ার ঘটনায় তার কাকা-কাকিমাকে দিল্লি থেকে গ্রেপ্তার করল শামুকতলা থানার পুলিশ। মেয়েটিকেও দিল্লির একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। গত ২ এপ্রিল ১৬ বছরের ওই কিশোরীর বাবা শামুকতলা থানায় দায়ের করা অভিযোগে জানিয়েছিলেন, তাঁর মেয়েকে ফুসলিয়ে ভিনরাজ্যে পাচার করে দেওয়া হয়েছে এবং এই কাজে জড়িত তাঁর ভাই এবং ভাইয়ের স্ত্রী।
এরপরেই আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপারের নির্দেশে শামুকতলা থানার পুলিশের একটি দল দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। দিল্লি পুলিশ এবং ওই এলাকার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাহায্যে ওই কিশোরীকে দিল্লির একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় তার কাকা-কাকিমাকে। পুলিশ জানিয়েছে, মেয়েটিকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে একটি প্লেসমেন্ট সংস্থার সাহায্যে মোটা টাকার বিনিময়ে পরিচারিকার কাজে নিযুক্ত করা হয়। কিন্তু কোনওভাবেই ওই মেয়েটি ঠিক কোথায় আছে, সেটা জানা যাচ্ছিল না। এরপরেই দিল্লি থেকেই তার কাকা-কাকিমাকে গ্রেপ্তার করে এবং ওই প্লেসমেন্ট সংস্থার অফিসে হানা দিয়ে মেয়েটির তথ্য সংগ্রহ করে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।
অভিযোগ, ভালো কাজ এবং মোটা মাইনের প্রলোভন দেখিয়ে শামুকতলা থানা এলাকার প্রত্যন্ত গ্রামের ওই কিশোরীকে ১৬ মাস আগে পাচার করে দেন তার কাকা এবং কাকিমা। মেয়েটির বাবা বলেন, ‘আমাদের চাষের জমি থাকলেও হাতির হানায় চাষ করতে পারি না। সংসারের অভাব মেটাতে স্বামী-স্ত্রী ১৬ বছরের মেয়েকে আমার বাবা-মায়ের কাছে রেখে বেঙ্গালুরুতে কাজে চলে যাই। মেয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ত। এই সুযোগেই ভাই এবং ভাইয়ের স্ত্রী আমাদের বাড়িতে এসে মেয়েকে ফুসলিয়ে এবং বাবা-মাকে ভুল বুঝিয়ে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। এখান থেকেই নানা প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েকে ভিনরাজ্যে পাচার করে দেওয়া হয়। আমরা কিছুদিন আগে ফিরে এসেছি। মেয়েকে না পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। আমার ভাই এবং ভাইয়ের বৌয়ের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
দক্ষিণ পানিয়ালগুড়ি গ্রাম বিকাশ সমিতির সাহায্য নিয়েই মেয়েটির বাবা শামুকতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। ওই সংস্থার সম্পাদক পৃথ্বীশ কর্মকার শামুকতলা পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দ্রুততার সঙ্গে মেয়েটিকে দিল্লি থেকে উদ্ধার করে এনেছে তারা। শামুকতলা থানার ওসি বিশ্বজিৎ দে বলেন, ‘মেয়েটির কাকা-কাকিমা দুজনেই দিল্লিতে রয়েছে বলে আমরা জানতে পারি। তাদের খোঁজ পেতে আমরা দিল্লি পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। পুলিশের একটি দলকে দিল্লি পাঠাই। দিল্লি থেকে মেয়েটিকে আমরা উদ্ধার করতে পেরেছি। অভিযুক্ত দুজনকেও আমরা গ্রেপ্তার করেছি।’