আয়ুষ্মান চক্রবর্তী, আলিপুরদুয়ার: আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) বঞ্চুকামারি থেকে ছ’জন এবছরের কন্যাশ্রী কাপে বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছে। এদের মধ্যে ইস্টবেঙ্গলে রয়েছে দীপিকা ওরাওঁ ও আশা খাড়িয়া, দীপ্তি সংঘে প্রিয়া ওরাওঁ ও অনুষ্কা ওরাওঁ, জ্যোতির্ময়ী অ্যাথলেটিক্স ক্লাবে পুষ্পিতা ওরাওঁ এবং সুরুচি সংঘে পূজা ওরাওঁ। ভবিষ্যতে ওদের সকলেরই স্বপ্ন দেশের হয়ে খেলা।
ইস্টবেঙ্গলে সুযোগ পাওয়া দীপিকার বাড়ি বঞ্চুকামারির ফোসকাডাঙ্গা রাখাল মাঠ এলাকায়। ছোটবেলায় পাড়ার মাঠে খেলার শুরু। তারপর নিজের অজান্তেই ফুটবলকে ভালোবেসে ফেলা। এরপর জীবনদীপ সমাজসেবা ফুটবল অ্যাকাডেমিতে অনুশীলন করে নিজেকে আরও ধারালো করে তোলা। মিডফিল্ডার দীপিকার এখনও পর্যন্ত অনূর্ধ্ব-১৭ বাংলা দল, জেলা লিগ সহ কন্যাশ্রী কাপেও সাদার্ন সমিতি, জ্যোতির্ময়ী অ্যাথলেটিক্স ক্লাবে খেলার পর এবার ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলছে। এরমধ্যে খেলে এসেছে কর্ণাটক লিগেও।
অন্যদিকে, ইস্টবেঙ্গলে দীপিকার সহ খেলোয়াড় আশার ফুটবল শেখা শুরু ২০১৫ সালে। এরপর নিজের খেলাকে আরও উন্নত করতে তারাও জীবনদীপে অনুশীলন করতে যায়। স্টপার পজিশনে খেলা আশা এর আগে অনূর্ধ্ব-১৭ পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব করেছে বাংলা দলের হয়ে। এছাড়াও অতীতে কন্যাশ্রী কাপে খেলে জ্যোতির্ময়ীর হয়ে। দীপিকা এবং আশার কথায়, আমরা আগেও একসঙ্গেই অনুশীলন করতাম। এবারে ইস্টবেঙ্গলে খেলছি, এটা একটা আলাদা অনুভূতি। মাঠে সুযোগ পেলেই নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
এদিকে, দীপ্তি সংঘতে খেলা প্রিয়ার বাড়ি ফোসকাডাঙ্গা এলাকায়। ২০২০ সালে দাদাদের খেলতে দেখে তার ফুটবলের প্রতি আগ্রহ জন্মায়। মিডফিল্ডার প্রিয়া এর আগে দু’বছর জ্যোতির্ময়ীর হয়ে খেলার পর এবার দীপ্তি সংঘের সদস্য। তার বাবা শিবচরণ মেয়ের এই সাফল্যে খুবই খুশি। অন্যদিকে, অনুষ্কা তিন বছর ধরে দীপ্তি সংঘের হয়ে খেলছে। তার বাড়ি সাতকোদালি এলাকায়। রাইট উইংগার পজিশনে খেলা অনুষ্কার স্বপ্ন একদিন নিজেকে বড় খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। আর সেই লক্ষ্যেই এখন সে এগিয়ে চলেছে বলে জানান বাবা রতন এবং মা অঞ্জলি।
মিডফিল্ডার পুষ্পিতা এবার জ্যোতির্ময়ী অ্যাথলেটিক্স ক্লাবের হয়ে খেলছে। পুষ্পিতা ২০১৯ সালে ফুটবল খেলা শুরু করে বিবেকানন্দ ফুটবল অ্যাকাডেমিতে। এরপর সে যায় জীবনদীপে। সেখানে অনুশীলন করতে করতেই অনূর্ধ্ব-১৭ বাংলা দলে ডাক। এছাড়াও কর্ণাটক লিগ, জেলা লিগ, সাদার্ন সমিতির হয়ে খেলেছে বলে তার দাদা রোহিত জানান।
এর পাশাপাশি সুরুচি সংঘে খেলা পূজা ১০ বছর ধরে ফুটবল খেলছে। সাইডব্যাক পূজা প্রথমে ভিএনসি, তারপর জীবনদীপে খেলেছে।
এই ছয় ফুটবলারের কন্যাশ্রী কাপ অবধি পৌঁছানোর যাত্রাপথ আলাদা হলেও, একটি বিষয়ে সকলেরই সাদৃশ্য রয়েছে। ওরা সকলেই প্রশিক্ষক রাজীব আহমেদের ছাত্রী। তাঁর কথায়, ‘এটি খুবই আনন্দের বিষয় যে এক জায়গা ও এক অ্যাকাডেমি থেকে ছয়জন কন্যাশ্রী কাপে কলকাতার বিভিন্ন ক্লাবে খেলছে। ওরা প্রত্যেকেই ভালো খেলে, সকলেই মনোযোগী এবং ক্রমশ নিজেদের খেলায় উন্নতি করে চলেছে।’ আলিপুরদুয়ার জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব সঞ্চয় ঘোষও এই ছয়জনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।