অভিজিৎ ঘোষ, আলিপুরদুয়ার: বাবা গিটারের শিক্ষক, মা বেসরকারি নার্সারি স্কুলের শিক্ষিকা। সংসারের হাল ধরতে দুই দিদিও পার্লারে কাজ করেন। কিন্তু বাড়ির ছোট মেয়ের স্বপ্নটা একটু অন্যরকম। আইপিএস হওয়ার স্বপ্ন দেখছে লঙ্কাপাড়ার বাসিন্দা সিমরান মঙ্গর থাপা। লঙ্কাপাড়া বাজার হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীর চোখে উর্দি পরার স্বপ্ন থাকলেও আপাতত লক্ষ্য উশু প্রতিযোগিতায় দেশের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা। ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সাফল্যও এসেছে সিমরানের। এবার এবছরের কন্যাশ্রী পুরস্কার পাচ্ছে ওই কিশোরী। ১৪ অগাস্ট কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার পাবে সিমরান।
সিমরানের মতোই আলিপুরদুয়ার জেলার (Alipurduar) নাম উজ্জ্বল করেছে আরেক কন্যা। আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের দক্ষিণ সোনাপুর গ্রামের অঙ্কিতা রায় পুরস্কার পাবে ক্যারাটেতে সাফল্যের জন্য। সোনাপুর বিকে গার্লস হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীও বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কার পেয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর হাতে পুরস্কার পাবে এই খবরে লঙ্কাপাড়া এবং দক্ষিণ সোনাপুর গ্রামে এখন খুশির আমেজ। এদিন এই নিয়ে কথা হচ্ছিল সিমরানের স্কুলের প্রধান শিক্ষক রোহিত থাপার সঙ্গে। তাঁর কথায়, ‘পুরস্কার পাওয়ার খবরে স্কুলের সবাই খুব খুশি। তেমনই গ্রামেও একই ছবি। সিমরান পড়াশোনাতেও ভালো। আবার খেলাধুলোর দিকেও ঝোঁক রয়েছে।’
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, দুজনকে কলকাতায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের তরফে বিভিন্ন স্কুলের কাছে এই পুরস্কারের জন্য ছাত্রীদের তথ্য চাওয়া হয়েছিল। দুই ছাত্রীও বেশ খুশি পুরস্কার পাওয়ার খবরে। সিমরান বলল, ‘দুই বছর ধরে উশু শিখছি। ‘খেলো ইন্ডিয়ায়’ ব্রোঞ্জ পেয়েছি। এছাড়াও বেঙ্গল অলিম্পিক, স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপ, স্কুল গেমসেও অংশগ্রহণ করে পুরস্কার পেয়েছি। তবে এই সম্মানের অনুভূতিটা অন্যরকম।’
অঙ্কিতার গলাতেও উচ্ছ্বাসের সুর স্পষ্ট। সে বলল, ‘রাজ্য স্তরের এবং জাতীয় স্তরের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছি। পুরস্কারও পেয়েছি। তবে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে পুরস্কার পাওয়াটা অনেক বড় বিষয়।’ অঙ্কিতার বাড়িতে বাবা-মা এবং দুই বোন রয়েছে। দুজনই ছোট। বাবা গাড়িচালক, মা গৃহবধূ। প্রায় চার বছর বয়স থেকে ক্যারাটে শিখছে ওই কিশোরী।
দুই কন্যার এই সাফল্য আরও অনেককে অনুপ্রেরণা জোগাবে।