মালদাঃ কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ায় সুজাপুরের মানুষকে মিরজাফরের সঙ্গে তুলনা করলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী। কালিয়াচক-১ ব্লকের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ থেকে ফেরত আসা পরিযায়ী শ্রমিক আমিরকে সংবর্ধিত করা হয়। সেই সংবর্ধনা সভায় তিনি পশ্চিমবঙ্গে বাস করেও যাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধাচরণ করবেন, তাঁরা মিরজাফরের মতো কাজ করবেন বলে তোপ দাগেন রহিম। তিনি বলেন, ‘যারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া নিরাপত্তায় এই রাজ্যে বসবাস করেও যাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধাচরণ করবেন, তাঁরা মিরজাফরের মতো কাজ করবেন। সুজাপুরের মানুষ আর ওই ভুল কাজ করবেন না। ছাব্বিশের বিধানসভায় এই এলাকার সমস্ত মানুষ তৃণমূলকেই ভোট দেবেন।’
মঙ্গলবার দক্ষিণ মালদার সাংসদ ইশা খান চৌধুরী দিল্লি থেকে সংবাদমাধ্যমের কাছে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় রহিম বক্সীর এই কটাক্ষের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বলেন, ‘রহিম বক্সী আমাকে যা খুশি বলুন, তাতে আমার কিছু যায় আসে না। কিন্তু কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার জন্য সুজাপুরের মানুষকে মিরজাফর বললে সেটা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। ভোট দেওয়া মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। তৃণমূলকে ভোট না দিলে সে মিরজাফর? এমন কথা উনি বলেন কী করে? ওঁকে মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।’
সোমবার কালিয়াচকের জালালপুরে পরিযায়ী শ্রমিক আমির শেখকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেই সভায় তৃণমূলের জেলা সভাপতি সহ মালদা জেলা তৃণমূলের একাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন। সেই সভায় আমিরকে দেশে ফিরিয়ে আনার কৃতিত্ব তৃণমূল সরকারের বলে দাবি করেন জেলা সভাপতি। তিনি বলেন, ‘আজকে সুজাপুরের মানুষকে নিরাপত্তা কে দিচ্ছে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’ তিনি যোগ করেন, ‘দক্ষিণ মালদার সাংসদ মানুষকে ঠকাচ্ছেন। ফেসবুক দেখিয়ে দাবি করছেন, আমিরকে তিনি ফিরিয়ে এনেছেন। যিনি বন্যাদুর্গতদের একটা ত্রিপল পর্যন্ত দিতে পারেন না, তিনি আমিরকে নিয়ে আসবেন?’ আব্দুরের কথার উত্তরে ইশা বলেন, ‘আমিরকে ফেরানোর কৃতিত্ব আমার চাই না। মানুষ সব জানেন।’
আব্দুরের কথায় ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দা মজিবর রহমান বলেন, ‘মানুষ অন্য দলকে ভোট দিলেই মিরজাফর? আর নেতারা যখন দল পরিবর্তন করেন। আব্দুর রহিম নিজেও দল বদলেছেন। ওঁর মানুষকে মিরজাফর বলার কোনও অধিকার নেই।’
নির্বাচন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। আব্দুর এর আগেও বিরোধীদের কুকথা বলেছেন। তবে মানুষকে এভাবে মিরজাফর বলে দাগিয়ে দেওয়া এই প্রথম। এই জল অনেকদূর গড়াবে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।