৭৫% উপস্থিতি না হলে কাটা যাবে বেতন, কমিশনের কড়াকড়িতে ক্ষুব্ধ ডাক্তারদের একাংশ

৭৫% উপস্থিতি না হলে কাটা যাবে বেতন, কমিশনের কড়াকড়িতে ক্ষুব্ধ ডাক্তারদের একাংশ

স্বাস্থ্য/HEALTH
Spread the love


অভিরূপ দাস: ৭৫ শতাংশ উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। অন্যথায় কাটা যাবে মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের বেতন। সরকারি মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকদের হাজিরার বিষয় নিয়ে একের পর এক নয়া নিয়ম বলবৎ করেছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন। সম্প্রতি স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স শেষে এনএমসি-র বার্তা, প্রতিটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজে উপস্থিতি ৭৫ শতাংশের কম যেন না হয়। চিকিৎসকদের এই উপস্থিতি খতিয়ে দেখতে আর পরিদর্শন করবে না ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন। ফেস রেকগনিশন বায়োমেট্রিক সিস্টেম এমন পদ্ধতিতে করা হয়েছে দিল্লিতে বসেই মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের উপস্থিতি দেখতে পারবেন ‘এনএমসি’ কর্তারা। এনএমসি-র কড়াকড়ির পর বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বঙ্গের মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ।

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অমিত দাঁ জানিয়েছেন, জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের অধীনে আমরা সকলেই রয়েছি। আমাদের বায়োমেট্রিক অ্যাটেনডেন্স ওরা অনলাইনে দেখতে পায়। ভিডিও কনফারেন্সে আমাদের এনএমসি জানিয়েছে, আপনাদের যদি ১৫০ জন চিকিৎসক থাকেন। তার মধ্যে যদি ৭০ জন আসেন। তাহলে কে অস্ত্রোপচার করবেন? কেই-বা রোগী দেখবেন। ডা. অমিত দাঁ স্বীকার করেছেন, সকলে হাসপাতালে সময় দেন না। কেউ কেউ এসেই বেরিয়ে যান। তাঁর কথায়, “প্রয়োজনে চিকিৎসকরা অবশ্যই ছুটি নেবেন। তবে তার জন্য আগে থেকে জানাতে হবে।” নতুন যে বায়োমেট্রিক অ্যাটেনডেন্সের সিস্টেম চালু হয়েছে তাতে চিকিৎসকরা হাসপাতালের ১০০ মিটারের মধ্যে রয়েছে কিনা সেটাও বুঝতে পারবে এনএমসি। উপস্থিতি নিয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের কড়াকড়িতে চিকিৎসকদের একাংশ ক্ষুব্ধ । অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরসের পক্ষ থেকে ডা. মানস গুমটা জানিয়েছেন, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে না। আমরা রাজ্য সরকারের অধীনে।

চিকিৎসক সংগঠনের প্রশ্ন, “কোনও সার্কুলার যদি হয়েও থাকে সেটা শুধুমাত্র সরকারি ক্ষেত্রে কেন হবে? বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজেও হওয়া উচিত।” ডা. মানস গুমটার বক্তব্য, “মেডিক্যাল কলেজে শিক্ষকদের হাজিরাটাই একমাত্র বিষয় কেন হবে। অনেকে হাজিরা দিয়ে না পড়িয়েও চলে যেতে পারেন। দেখা যাচ্ছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন যতটা না পড়ানোর বিষয় চিন্তিত তার চেয়ে আনুষঙ্গিক বিষয়ে বেশি নজর দিচ্ছে।” এনএমসি-র নয়া নিয়ম অনুযায়ী মুখ দেখিয়ে অ্যাটেনডেন্স দিতে হবে মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের। এটাকে ‘অপমানজনক’ বলছেন ডাক্তারদের একাংশ। ডা. মানস গুমটার দাবি, “ক্লাস ওয়ান গেজেটেড অফিসারকে এই নিয়মে বেঁধে অপমান করা হচ্ছে।”

সম্প্রতি আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনার পর বহু জেলার চিকিৎসককে দীর্ঘদিন শহরে আন্দোলনরত অবস্থায় দেখা গিয়েছে। আন্দোলনে ছিলেন না এমন চিকিৎসকদের একাংশ জানিয়েছে, অনেকেই মেডিক্যাল কলেজে ডিউটি না করে দিনের পর দিন মিটিং-মিছিল করেছেন। এনএমসি-র নয়া আইনে তারা ফাঁপরে। এদিকে, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের সুপার ডা. অনাদি রায়চৌধুরি জানিয়েছেন, আমাদের হাসপাতালে জুনিয়র-সিনিয়র মিলিয়ে ৩০০ চিকিৎসক রয়েছেন। কোন চিকিৎসক কবে আসছেন তার তথ্য সংগ্রহ করছেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. ইন্দিরা দে জানিয়েছেন, হাসপাতালে চিকিৎসকদের উপস্থিতি নিয়ে নিয়ম করেছে এনএমসি-র। সেই নিয়মই কড়া হচ্ছে আরও।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *