মলয় কুণ্ডু: আগামী তিন মাস রাজ্যের কোনও জেলায় যেন খাদ্যদ্রব্যের ঘাটতি না থাকে, ভারত-পাক যুদ্ধের আবহে আগাম ব্যবস্থা নিতে জেলাশাসকদের নির্দেশ নবান্নর। জুন, জুলাই ও আগস্টের জন্য চাল, গম-সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় খাদ্য আগে থেকেই মজুত করতে বলা হয়েছে। রবিবার এ নিয়ে জেলাশাসক, পুলিশ সুপার ও প্রশাসনের একাধিক শীর্ষকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। বৈঠকে বিপর্যয় মোকাবিলা, স্বাস্থ্যে মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের শীর্ষ কর্তারাও হাজির ছিলেন।
নবান্ন সূত্রে খবর, যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য যাতে সব রকমভাবে প্রস্তুত থাকে তার জন্যই এদিন পর্যালোচনা বৈঠকে করেন মুখ্যসচিব। পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় বাড়তি নজরদারি, হাসপাতালের প্রস্তুতি, বিপর্যয় মোকাবিলায় বিশেষ প্রশিক্ষণ, মহড়া নিয়ে এদিন আলোচনা হয়। কোনও জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হলে মানুষের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্য প্রশাসনিক ও পুলিশ কর্তাদের বৈঠকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
এদিনের বৈঠকে জেলাশাসকদের খাদ্য মজুতের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি জানানো হয়েছে, আগামী তিন মাসের রেশনের বরাদ্দ তিনটি পর্যায়ে জেলাগুলিতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। প্রতিটি জেলায় বর্তমানে কোথায় কত পরিমাণ খাদ্য মজুত রয়েছে, তারও জেলাভিত্তিক আলোচনা হয়। জেলাগুলিতে যথেষ্ট পরিমাণে মজুত থাকলেও রাজ্য সরকার কোনও ফাঁক রাখতে রাজি নয়। তাই এ বিষয়ে আগাম পরিকল্পনা সেরে ফেলা হয়েছে বলে প্রশাসনের মত।
বৈঠকে রাজ্যের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে কড়া নজরদারি চালাতে নির্দেশ দেওয়া হয় পুলিশকর্তাদের। সর্বোচ্চ পর্যায়ে সতর্ক থাকতে হবে পুলিশকে। প্রত্যন্ত এলাকা, পাহাড়ি এলাকা, অরণ্য ঘেরা দুর্গম অঞ্চলে পুলিশি টহল বাড়াতে হবে। সুন্দরবনের জলপথ ও উত্তরবঙ্গের পাহাড় ঘেঁষা আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকায় রাখতে হবে বিশেষ নজর। বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে হাসপাতালগুলোতে। স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবায় যাতে কোনও ঘাটতি না থাকে। তার জন্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় ব্যবস্থা আগে থেকেই নিতে হবে।
এছাডা়ও দমকলের কর্তাদের জানানো হয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে উদ্ধারকাজ ও অন্যান্য ব্যবস্থা নিতে মহড়া সেরে রাখতে হবে। বিশেষ করে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কোনও প্রশিক্ষণ যাতে বাকি না থাকে। সিভিল ডিফেন্স ভলান্টিয়ারদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ ও রিফ্রেশার কোর্স চালু করারও সিদ্ধান্ত বৈঠকে হয়েছে বলে খবর। দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর আগের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী। এই ব্যবস্থাকে আরও পোক্ত করতে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিও কেনা হবে বলে খবর। সাইরেনগুলিকে পুরোমাত্রায় চালু করার কথাও আলোচনা হয় বৈঠকে।