৩৩টি চরিত্র, ৫০ লোকেশনে শুটিং, কুণাল-অরিন্দমের ‘কর্পূর’-এ মহাচমক

৩৩টি চরিত্র, ৫০ লোকেশনে শুটিং, কুণাল-অরিন্দমের ‘কর্পূর’-এ মহাচমক

জ্যোতিষ খবর/ASTRO
Spread the love


সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘ বিতর্ক পেরিয়ে অনেকদিন পর সিনেমা পরিচালনায় ফিরছেন অরিন্দম শীল। নয়ের দশকে শোরগোল ফেলে দেওয়া মনীষা মুখোপাধ‌্যায়ের অন্তর্ধানের ঘটনার ছায়ায় শুরু হচ্ছে ‘কর্পূর’। রাজনৈতিক থ্রিলার ঘরানার ছবি, সত্যি ঘটনা অনুপ্রাণিত। তাঁর ছবির বিশেষত্ব হল, তিনজন রাজনীতিবিদকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে পাওয়া যাবে। তবে সবচেয়ে বড় সারপ্রাইজ এই ছবির মাধ্যমেই সিনেমায় আবির্ভাব ঘটছে কুণাল ঘোষের। প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ এবার লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের জগতে। ইদানীংকালে অভিনয় জগৎ থেকে রাজনীতিতে এসেছেন অনেকেই। কিন্তু রাজনীতির প্রাঙ্গণ থেকে এসে শুটিং ফ্লোরে সফল ব্যক্তির সংখ্যা হাতে গোনা। সেক্ষেত্রে কুণালের নতুন ইনিংস যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং। অন্যদিকে মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, যিনি একাধারে অভিনেতা-নাট্যকার, তিনি থাকছেন একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ চরিত্রে। আর কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন আরেকটি ইন্টারেস্টিং রোলে।

কুণাল ঘোষকে কাস্ট করার কারণ কী? পরিচালকের জবাব, ‘যে চরিত্রে ওঁকে কাস্ট করা হয়েছে, সেটা একজন রাজনীতিকের, প্রায় মুখপাত্রের মতো। যে কাজটা কুণাল নিজে অসাধারণ করেন। ওঁর সাংঘাতিক আগ্রাসন আছে এবং স্বতঃস্ফূর্ততা। ছবিতে সেটাই ব্যবহার করতে চেয়েছি। হি ইজ ভেরি ক্যামেরা ফ্রেন্ডলি। আর মানুষের সঙ্গে সহজ।’ ছবির প্রধান চরিত্রে থাকছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। যে নিখোঁজ হচ্ছে সেই ‘মৌসুমী সেন’-এর চরিত্রেই ঋতুপর্ণা। তাঁর স্বামীর ভূমিকায় পরিচালক অরিন্দম শীল নিজে। ইদানীংকালে নানা বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়েছেন অরিন্দম, নতুন ছবির বিষয় হিসাবেও পরিচালক বেছে নিলেন যথেষ্ট তোলপাড় তোলা ঘটনা। ছবিতে রাজি হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে ঋতুপর্ণা বললেন, “ইন্টারেস্টিং সাবজেক্ট, নারীকেন্দ্রিক গল্প। আমি তো একজন শিল্পী, এরকম বিষয় এলে কাজ করতে ইচ্ছে করে। এই কাহিনিটা আমার ওপরে। অরিন্দমের সঙ্গে আগে ‘মায়াকুমারী’ ছবিতে কাজ করেছি, যদিও ছবিটা আরও ভালো হতে পারত। আর হ্যাঁ, ব্রাত্যদা রয়েছে। ইন্টারেস্টিং কাস্টিং সেটাও রাজি হওয়ার একটা কারণ।” ব্রাত্য বসু বলছেন, ‘আমার পার্টটা খুব ভালো লেগেছে। আর ছবিতে কুণাল আছে। স্ক্রিপ্টটা ভালো। অরিন্দম শীলের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে ছিল। এই সব মিলিয়েই কাজটা করতে চেয়েছি।’ প্রসঙ্গত এই ছবির নামটি ব্রাত্যরই দেওয়া। এক বিশেষ রাজনীতিকের চরিত্রে থাকবেন সাহেব চট্টোপাধ্যায়। প্রায় ৩৩টি চরিত্র রয়েছে। অন্তত ৫০টি লোকেশনে হবে শুটিং। 



অরিন্দম শীলের বাড়িতে স্ক্রিপ্ট রিডিং সেশন (ছবি- সংগৃহীত)

কেমন ছবির বিষয়? নয়ের দশকের একটি ঘটনার অনুপ্রেরণায় সাহিত্যিক দীপান্বিতা রায় ‘অন্তর্ধানের নেপথ্যে’ বলে একটি বই লেখেন। সেই কাহিনির আধারে অরিন্দমের নতুন ছবি ‘কর্পূর’। এমন নামকরণের নেপথ্যে কী? পরিচালক বলছেন, ‘নয়ের দশকের শেষভাগে কলকাতা ইউনিভার্সিটির ডেপুটি কন্ট্রোলার অফ এগজামিনেশন একদিন সন্ধেবেলা হারিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর বাড়ি না ফেরার হদিশ আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। যার নানারকম থিয়োরি-রাজনৈতিক যোগ আছে। তবে আমরা কোনও রাজনৈতিক বিশ্লেষণে যাচ্ছি না। সেদিন সন্ধেবেলা সে উধাও হওয়ার পর কী কী হয় দেখাতে কিছু ফিকশনাল ঘটনা নিশ্চয়ই থাকবে। তার অন্তর্ধানে ফোকাস করছি বইয়ের গল্প অনুসারে। যেহেতু এটা পলিটিকাল থ্রিলার, ফলে কয়েকজন রাজনীতিকের চরিত্র রয়েছে। চিত্রনাট্যে তারা প্রত্যেকেই কাল্পনিক দলের সদস‌্য। তবে বাস্তবের তিনজন রাজনীতিক ছবিতে অভিনয় করছেন। প্রথমত ব্রাত্য বসু, যিনি অবশ্যই অভিনেতাও, লালবাজারের ওসি হোমিসাইড-এর চরিত্রে। অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন নিউজ এডিটরের ভূমিকায়। তবে সবচেয়ে বড় খবর– কুণাল ঘোষ সিনেমায় আসছেন, একটি দলের সাধারণ সম্পাদকের চরিত্রে তিনি’, এটুকু বলে থামলেন পরিচালক। বোঝাই যায়, নয়ের দশকের শেষভাগের মনীষা মুখোপাধ্যায়ের অন্তর্ধানের ঘটনার ছায়ায় এই ছবি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহকারী পরীক্ষা নিয়ামক ১৯৯৭ সালে হঠাৎই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। রাজ্যে তখন বাম আমল। এবং এই ঘটনা রাজ‌্য রাজনীতিতে আলোড়ন তুলেছিল। মূলত ১৯৯৭ এবং ২০১৯ সাল ধরা হবে চিত্রনাট্যে।

সাংবাদিকের চরিত্রে ছোটপর্দা ও মঞ্চের পরিচিত মুখ অর্পণ ঘোষাল। আর ইন্টার্ন-এর রোলে লহমা ভট্টাচার্য। ‘মৌসুমী সেন’-এর মায়ের ভূমিকায় রুমকি চট্টোপাধ্যায়। এছাড়া সন্দীপ ভট্টাচার্য, সঞ্জীব সরকার প্রমুখ রয়েছেন। নিজের নতুন ভূমিকা সম্পর্কে কুণাল ঘোষ বলছেন, ‘চলচ্চিত্র জগৎ থেকে অনেক তারকা এসে রাজনীতিতে সফল হয়েছেন। আমি সাংবাদিকতা থেকে অভিনয় জগতে গিয়ে দেখি পারি কি না। এখানে আমি নবাগত। পরিচালক অরিন্দমের প্রতি আমার আস্থা আছে, তিনি আমাকে শিখিয়ে নেবেন। আর বন্ধু ব্রাত‌্য নিশ্চয়ই আমাকে গাইড করবে।’ জুলাইতে শুটিং শুরু। ছবির প্রযোজনায় ‘ফ্রেন্ডস কমিউনিকেশন’ এবং ‘কাহক স্টুডিওজ’। মিউজিক করছেন রথীজিৎ ভট্টাচার্য, ক্যামেরার দায়িত্বে অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়। চিত্রনাট্য লিখেছেন শুভাশিস গুহ। সম্পাদনায় সংলাপ ভৌমিক। আর্টের দায়িত্বে কৌশিক দাস। আর কার্যনির্বাহী প্রযোজক দীপক বাজাজ।
এবার কাজ শুরুর অপেক্ষা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ






Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *