সুকুমার সরকার, ঢাকা: চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনায় গ্রেপ্তার আওয়ামি লিগের ৪ জন সদস্য। পয়লা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিকৃত মুখের মোটিভ বানানোর কারণেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। নববর্ষের আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল শোভাযাত্রার মোটিফও। আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে শিল্পী মানবেন্দ্রর বাড়িতেও। তিনিই ওই মোটিফগুলো বানিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার ভোররাতে সদর উপজেলার গড়পাড়া গ্রামের মানিকগঞ্জের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। সেই সময় মানবেন্দ্র ঘোষ তার বাড়িতেই ছিলেন। আগুনে তার একটি ঘর পুড়ে গিয়েছে। অনেকেই দাবি করছেন, পয়লা বৈশাখের শোভাযাত্রায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখাকৃতি বানানোর কারণে অগ্নিসংযোগের কাণ্ড ঘটেছে। কিন্তু মানবেন্দ্র ঘোষের দাবি ছিল, তিনি শুধু বাঘের মোটিফ তৈরি করেছিলেন, শেখ হাসিনার মুখাকৃতি নয়। তদন্তে নামে পুলিশ। বুধবার রাতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে রয়েছে উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন (৫৪), সদর উপজেলা ছাত্রলিগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাইন উদ্দিন ওরফে পিয়াস (২২) ও অর্থবিষয়ক সম্পাদক আল আমিন ওরফে তমাল (২২) এবং সদর উপজেলা কর্মী মীর মারুফ (২১)। পুলিশ সূত্রে খবর, এবার পয়লা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী হাসিনার মুখাবয়ব-সহ বিভিন্ন ভাস্কর্য তৈরি করার কারণে ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষকে ফেসবুকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। গত মঙ্গলবার তিনি সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর মঙ্গলবার ভোররাত তিনটার দিকে সদর তাঁর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম আমান উল্লাহ বলেন, ভাস্কর মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এছাড়া এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এদিকে, মানবেন্দ্র ঘোষ বলেন, তিনি বিভিন্নভাবে পোস্ট দাতাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন। তিনি শেখ হাসিনার মুখাবয়ব তৈরি করেননি। এটা যেন পোস্টদাতারা খতিয়ে দেখে বোঝার চেষ্টা করেন। তিনি একটি বাঘের ভাস্কর্য (মোটিভ) তৈরি করেছিলেন, যা আনন্দ শোভাযাত্রায় ছিল। তাঁর বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি পুলিশ ও প্রশাসন তদন্ত করে দেখছে।