সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: জঙ্গলের শ্রীবৃদ্ধি, আয়তন বাড়ছে ঝাড়গ্রামে। আর সেজন্য পরোক্ষভাবে অনেকটাই সাহায্য করছে বুনো হাতির দল! এমনই তথ্য হাতে এসেছে বনদপ্তরের। আর এই বিষয়ে উচ্ছ্বসিত বনকর্মী থেকে আধিকারিকরা। জঙ্গল ঘুরে দেখা গিয়েছে একাধিক নতুন গাছের জন্ম হয়েছে। কিন্তু কীভাবে নতুন এইসব গাছের জন্ম হল?
হাতির বিষ্ঠা পরীক্ষা-নীরিক্ষা করেছিলেন বনকর্মী, আধিকারিকরা। তাতেই হতবাক হয়েছেন তাঁরা। দেখা গিয়েছে বিষ্ঠার মধ্যে বিভিন্ন ফলের বীজ থেকে গিয়েছে। আর সেই বিষ্ঠা ক্রমে মাটিয়ে মিশে জন্ম নিয়েছে জাম, বেল, কুরচি, জঙ্গলী আলু, জংলী খেজুরের মতো চারাগাছ। এইসব গাছ এবং গাছের ফল হাতিদের প্রিয় খাবার। এর পাশাপাশি জঙ্গল হাতির যথেষ্ট খাবার রয়েছে বলেও মনে করছে বনদপ্তর। কারণ হিসেবে আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, ওই গাছ বা গাছের ফল গুলি হাতি খেয়েছে বলেই বিষ্ঠাতে চারাগাছ তৈরি হয়েছে। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে সম্প্রতি ঝাড়গ্রাম এলাকার একটি জঙ্গলে দেখা গিয়ে হাতির বিষ্ঠাতে জন্মেছে ওই পাঁচ ধরনের চারা গাছ। হাতি জংলী খেজুরের শিকড়, জংলী আলুর লাতা খুবই পছন্দ করে। পাশাপাশি বেল, জামও তাদের প্রিয়।

বনদপ্তর মনে করছে হাতির দল জঙ্গলে নিজেদের পছন্দের খাবার পাচ্ছে। তবে হাতি খুবই বুদ্ধিমান প্রাণী। এরা খাদ্যের স্বাদ বদল করে। বিশেষ করে জঙ্গলের মরসুমি ফল, লতা, গাছ যখন শেষ হয়ে যায় তখন এরা লোকালয়ের দিকে চলে এসে খাবারের তল্লাশি করে। তাই বনদপ্তর আরও বেশি করে জোর দিচ্ছে জঙ্গলে হাতির পছন্দের গাছ গলগলি, ডুমুর জাতীয় গাছ, বট, অশত্থ সহ বিভিন্ন ফলের গাছ লাগানোর উপর। হাতি, মানুষের সহাবস্থান বজায় রাখতে এবং ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বনদপ্তর একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। তার মধ্যে হাতির খাবার উপযোগী গাছ আরও বেশি করে লাগানো হবে।
এই বিষয়ে ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, “বিভিন্ন জঙ্গলে এলিফ্যান্ট ডাং বা বিষ্ঠা থেকে পাঁচ রকমের চারা গাছ জন্মেছে। আমরা সেগুলি পরীক্ষা করে দেখেছি। এর থেকে একটা বিষয় বোঝা যাচ্ছে হাতি জঙ্গলে ওইসব গাছ থেকে খাদ্য সংগ্রহ করেছে। জঙ্গলে খাদ্যের সংস্থান রয়েছে। পাশাপাশি এরা অজান্তেই জঙ্গলে গাছ বৃদ্ধিতে সাহায্য করছে। এছাড়াও পরীক্ষা করে দিশা পাচ্ছি, হাতির জন্য কী ধরনের গাছ লাগানো দরকার। সেজন্য আমারা নার্সারিতে ওই ধরনের গাছ লাগাচ্ছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন