সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আদৌ কি কোনও দিন জেলমুক্তি হবে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর? যতদিন যাচ্ছে এই প্রশ্নই জোরাল হচ্ছে। জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের পর কেটে গিয়েছে প্রায় ৬ মাস। এখনও গরাদের পিছনে ইসকনের এই সন্ন্যাসী। কয়েকদিন আগেই তাঁকে জামিন দিয়েছিল ঢাকা হাই কোর্ট। কিন্তু সেই রায়ের ভিত্তিতে জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। সেই আবেদনে সাড়া দিয়েই হাই কোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করে দিল আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
আজ মঙ্গলবার আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। চিন্ময় দাসের পক্ষে আইনজীবী জেড আই খান পান্না, এম কে রহমান ও অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন। অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক বলেন, নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) না করা পর্যন্ত চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিত করা হয়েছে। হাই কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়া সাপেক্ষে নিয়মিত লিভ টু আপিল দায়ের করা হবে। ওই মামলায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ গত ২ জানুয়ারি চিন্ময়ের জামিন আবেদন খারিজ করে আদেশ দিয়েছিলেন।
এনিয়ে হাই কোর্টে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চেয়ে গত ১২ জানুয়ারি আবেদনটি করেছিলেন চিন্ময় দাস। এ আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি রুল দেয় হাই কোর্ট। আবেদনকারীকে (চিন্ময়) কেন জামিন দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়। চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৩০ এপ্রিল রায় দেয় ঢাকা হাই কোর্ট। জামিন দেওয়া হয়। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে জামিন স্থগিতের আবেদন নিয়ে আদালতে অন্য বিচারপতির এজলাসে যান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। তা মঞ্জুর হওয়ায় জামিন স্থগিত হয়ে যায়। আবার চট্টগ্রামের জেলে ফিরতে হয় চিন্ময় প্রভুকে।
চিন্ময় দাসের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া চারটি মামলার মধ্যে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যা মামলা অন্যতম। অন্য তিনটি মামলা ছিল পুলিশ ও আইনজীবীদের উপর হামলা, বিচারকাজে বাধা এবং আদালত এলাকায় বিশৃঙ্খলা তৈরির পরিবেশ। এর মধ্যে তিনটি মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল আজ ৬ মে। এর আগে গতকাল সোমবার চিন্ময়কে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আর আজ ফের তাঁর জামিনের আবেদন স্থগিত হয়ে গেল। এই ঘটনা যে ইউনুস প্রশাসনের অঙ্গুলিহেলনেই ঘটল এবং চিন্ময় প্রভুকে বন্দি রাখারই ষড়যন্ত্র বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।