সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বাধীনতা দিবসে পতাকা উত্তোলন করেছিলেন গ্রামে, এই অপরাধে নিরীহ গ্রামবাসীকে গুলি করে মারল মাওবাদীরা। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে ছত্তিশগড়ের কাঁকের জেলার বিনাগুন্ডা গ্রামে। মৃত যুবকের নাম মানেশ নুরুতি। ভয়াবহ এই ঘটনা সামনে আসার পর রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে, গত ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের দিন গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে মাওবাদীদের স্মৃতিস্তম্ভে পতাকা উত্তোলন করেছিলেন মানেশ। দেশাত্মবোধক স্লোগানও দেন। এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয় সোশাল মিডিয়ায়। মাওবাদীদের কানেও যায় এই খবর। এরপরই তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে মাওবাদীরা। মানেশকে বাড়ি থেকে বের করে এনে মাওবাদীদের ‘জন আদালত’-এর সামনে বসানো হয়। এরপর পক্ষপাতদুষ্ট বিচারে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় তাঁকে। হত্যাকাণ্ডের পর মাওবাদীদের পরাতাপুর এরিয়া কমিটি এই ঘটনার দায় নিয়ে এলাকায় ব্যানার দিয়েছে। যেখানে পাঙ্খাজুর থানার ইনচার্জ লক্ষণ কেভাত, সরপঞ্চ রামজি ধ্রুব এবং জেলা রিজার্ভ গার্ডদের হত্যার হুমকি দিয়েছে।
বস্তার রেঞ্জের ইন্সপেক্টর জেনারেল সুন্দররাজ পি বলেন, “নুরুতি বিনাগুন্ডা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। সম্প্রতি একটি ছোট ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে যেখানে মানেশ নুরুতিকে ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে দেখা গিয়েছে। সেই অপরাধেই তাঁকে হত্যা করেছে মাওবাদীরা। এই বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, ২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে মাওবাদমুক্ত ভারত গড়ার বার্তা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এরপর থেকেই ছত্তিশগড়, অন্ধ্রপ্রদেশ, ঝড়খণ্ডের মতো মাওবাদী অধ্যুষিত রাজ্যগুলিতে মাওবিরোধী অভিযান ব্যাপক গতি পেয়েছে। গোয়েন্দাদের মতে, বর্তমানে ছত্তিশগড়-তেলেঙ্গানা সীমানাবর্তী কারেগুট্টা পাহাড়ি এলাকা মাওবাদীদের অন্যতম শক্তঘাঁটি। এই এলাকা থেকে মাওবাদের শিকড় উপড়ে ফেলতে প্রায় ৩ হাজার আধাসেনাকে নামানো হয়েছে। দেশের বাকি অংশেও লাগাতার অভিযান চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। সেই অভিযানের জেরে ব্যাকফুটে যাওয়া মাওবাদীরা এবার নিশানা করতে শুরু করেছে সাধারণ গ্রামবাসীদের।